হরিণাকুণ্ডুর হাট ইজারা ও ওয়ান পার্সেন্টের টাকা নিয়ে তোলপাড়

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলায় হাট বাজার ইজারা ও ওয়ান পার্সেন্টের টাকা হরিলুটের আশঙ্কা নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর তোলপাড় শুরু হয়েছে। ইউপি চেয়ারম্যানরা চেক গ্রহণ করেও প্রকল্পের কাজ দৃশ্যমান না করায় জনসাধারণের মাঝে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। এছাড়া হরিণাকুণ্ডুর সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মনিরা পারভিনের বেয়ারার চেক প্রদানের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ২৩ আগস্ট ২৯ লাখের বেশি টাকার বেয়ারার চেক প্রদান করা হয় ইউপি চেয়ারম্যানদের মঝে। এই টাকা চেয়ারম্যানগণ নগদ তুলে পকেটে ভরেছেন। টাকা উত্তোলনের পর এখনো কাজ না করায় অভিজ্ঞমহল ধারণা করছেন হাট বাজার ইজারা ও ওয়ান পার্সেন্টের টাকা নয়-ছয় হয়ে যাবে। জবাবদিহীতা না থাকায় এই টাকা চেয়ারম্যানগণ কোথায় খরচ করছেন তাও সরকার জানতে পারছে না।
তথ্য প্রমাণ নিয়ে জানা গেছে, গত আগস্ট মাসে ইউপি চেয়ারম্যানরা দুই খাতের ২৯ লাখ ৩৩ হাজার ৮শ টাকার চেক গ্রহণ করেন। কিন্তু ওই টাকার কোন কাজ হয়নি।
হরিণাকু-ু উপজেলা নির্বাহী অফিসসূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ২৩ আগস্ট ওয়ান পার্সেন্টের ২১ লাখ ৩৩ হাজার টাকা ও হাট ইজারার ৮ লাখ ৩ হাজার ৮শ টাকা উপজেলার ইউপি চেয়ারম্যানগণের অনুকূলে বেয়ারার চেক প্রদান করা হয়। হরিণাকু-ু উপজেলার সদ্য বিদয়ী নির্বাহী কর্মকর্তা মনিরা পারভিন এই টাকা দিয়ে যান। কিন্তু টাকা নিয়েও ইউপি চেয়ারম্যানরা কোনো কাজ করেননি।
হরিণাকু-ুর ভায়না ইউপি চেয়ারম্যান ছমির উদ্দীন জানান, ২ লাখ ৬০ হাজার টাকার মধ্যে আমি এক লাখ ৬০ হাজার টাকা পেয়েছি। বাকি এক লাখ টাকা সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মনিরা পারভিন দেননি।
তবে হরিণাকু-ু উপজেলা নির্বাহী অফিসের প্রধান সহকারী লাভলু জানান, ২০১৭ সালের ২৩ আগস্ট ৭৬৩২৫৫০ নং চেকে ভায়না ইউপি চেয়ারম্যান ছমির উদ্দীনকে ২ লাাখ ৬০ হাজার টাকা দেয়া হয়েছে। তিনি আর কোন টাকা পাবেন না। একইভাবে ৩ নং তাহেরহুদা ইউপি চেয়ারম্যান মুনজুরুল ইসলামকে ২৬৩২৫০২ নং চেকে ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা, জোড়াদহ ইউপি চেয়ারম্যান নাজমুল হুদা পালাশকে ২৬৩২৫০১ নং চেকে ২ লাখ ১০ হাজার, দৌলতপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী বুড়োকে ২৬৩২৫০৩ নং চেকে ২ লাখ ৬০ হাজার টাকা, ফলসির চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান ২৬৩২৫০৫ নং চেকে ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা, রঘুনাথপুর ইউপি চেয়ারম্যান রাকিবুল হাসান রাসেলকে ২৬৩২৫০৬ নং চেকে ৩ লাখ ১০ হাজার টাকা, কাপাশহাটিয়ার চেয়ারম্যান মশিউর রহমান জোয়ারদারকে ২৬৩২৫০৪ নং চেকে ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা ও চাঁদপুরের চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফাকে ২৬৩২৫০২ নং চেকে ৩ লাখ ১০ হাজার টাকা প্রদান করা হয় গত ২৩ আগস্ট।
এ বিষয়ে নিয়ে হরিণাকুণ্ডু উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাড এমএ মজিদ বলেন, আমি হজে যাওয়ার পর চেয়ারম্যানদের এ সব চেক প্রদান করা হয়েছে। প্রকল্প মোতাবেক কাজ হয়েছে কি-না তা আমার জানা নেই। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, হাট বাজার ইজারা কমিটির সভাপতি আমি, অথচ চেক প্রদান করেন ইউএনও।