সড়কে ঝরছে প্রাণ বাড়ছে পঙ্গুত্ব

আমাদের দেশে সড়ক দুর্ঘটনা কম নয়। প্রায় প্রতিদিনই দেশের কোথাও না কোথাও থেকে খবর আসে। সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত ও প্রচারিত হতাহতদের স্বজনের আহাজারি আমরা দেখেই চলেছি। পরশু রাতে ঝিনাইদহে মাহেন্দ্র ও পিকআপের মুখোমুখি সংঘর্ষে দুই ব্যাংক কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৮ জন। এছাড়া মেহেরপুরের মুজিবনগরে বাস চাপায় এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে।

     প্রশ্ন হচ্ছে, সড়ক দুর্ঘটনার পর প্রতিদিনই এভাবে সড়কে-মহাসড়কে দুর্ঘটনায় নিহত যাত্রীদের পরিবার পরিজনদের কান্না কেবল নয়, পরিবারের সদস্যকে কিংবা নিজের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ হারিয়ে সারাজীবন কতোজন গুমরে গুমরে কাঁদে এবং জীবনের দায় বহন করে বেঁচে থাকে। দেশে প্রতি বছর সরকারি হিসাবে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রায় আড়াই হাজার মানুষের মৃত্যুর কথা বলা হয়েছে। যাত্রী কল্যাণ সমিতির হিসাবে সড়ক দুর্ঘটনায় বছরে প্রায় ৮ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাবে প্রাণহানির সংখ্যা ২১ হাজার। সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতের চেয়ে আহতদের সংখ্যা কয়েকগুণ হওয়ারই কথা। যাদের একাংশকে সারাজীবন পঙ্গুত্বের অভিশাপে ভুগতে হয়। এ জন্য প্রতি বছর গড়ে যে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয় তার পরিমাণ প্রায় ৩৪ হাজার কোটি টাকা। পৃথিবীতে যে সব দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানির হার সবচেয়ে বেশি, তার মধ্যে বাংলাদেশের স্থান অন্যতম। বড় দুর্ঘটনায় অনেক বেশি প্রাণহানি এক সাথে ঘটলে যখন হইচই পড়ে যায়। কর্তৃপক্ষ তখন নড়ে চড়ে বসে। তারপর আবার সড়ক-মহাসড়কগুলোতে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি ফিরে আসে। ফিটনেসবিহীন যান চলে যত্রতত্র। ঝুঁকিপূর্ণ সব চালক ও জরাজীর্ণ গাড়ি উচ্ছেদ করা গেলে, সড়কে প্রয়োজনীয় সংস্কার নিশ্চিত হলে, আইনের প্রয়োগ কঠোর হলে সড়কে নৈরাজ্য কমে আসবে।