সাব রেজিস্ট্রার অফিস ও দলিল লেখক সমিতির অনিয়ম বন্ধ করা দরকার

কিছু প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যা ঘিরে থাকা স্বার্থান্বেষী মহল উপরি আয়ে মাতোয়ারা। এর সুযোগে দুর্নীতিও বাসা বাঁধে প্রতিষ্ঠানের রন্ধ্রে রন্ধ্রে। সমাজের এরকম প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সাব রেজিস্ট্রি অফিস অন্যতম। জমি জমা বিক্রেতা-ক্রেতাকে রেজিস্ট্রি করাতে গেলে দলিল প্রস্তুত প্রণয়ন করতে হয়। এটা লেখার জন্য থাকে নির্দিষ্ট তথা তালিকাভুক্ত ব্যক্তি। নির্দিষ্ট ব্যক্তিরাই মূলত সমিতি করে নিজেদের উপরি আয় বাড়িয়ে অসহনীয় পর্যায়ে নিয়ে গেছে।
যাাকে তাকে দিয়ে দলিল লেখানো হলে পরবর্তীতে জটিলতা দেখা দিলে আদালতে সাক্ষ্য দেয়ার ক্ষেত্রে বিভ্রান্তি এড়ানোর জন্যই মূলত নির্দিষ্ট কিছু আগ্রহী ব্যক্তিদেরই দলিল লেখক হিসেবে অনুমোদন দেয়া হয়। এই তালিকাভুক্ত দলিল লেখকরাই জমি ক্রেতার দলিল প্রস্তুত করে দেন। জমির প্রকৃত মালিকই ওই জমি বিক্রি করছেন কি-না, তিনি জমি বিক্রির টাকা ঠিকঠাক পেয়েছেন কি-না তা দেখে স্বাক্ষর করেন সাব রেজিস্ট্রার। এই ঠিক ঠাক আছে কি-না দেখার মধ্যে থাকে নানা অনিয়ম। অভিযোগ রয়েছে, টাকা না দিলে নিয়মের জালে আটকে দেয়া হয় জমি রেজিস্ট্রি, আর সমিতিভুক্ত দলিল লেখকরা? তারা তো হরেক নামের খাত দেখিইয়েই শুধু নয়, পারিশ্রমিকটাও যা দাবি করে তা অস্বাভাবিক। চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলা সাব রেজিস্ট্রি অফিসের দলিল লেখক সমিতির অনিয়মের আরো একটি প্রতিবেদন গতকাল পত্রিকার পাতায় উঠে এসেছে। পত্রিকার পাতায় যে তথ্য তুলে ধরা হয়েছে তা অবশ্যই গুরুতর। এসব অনিয়ম অব্যাহত থাকলে অনিয়মই যে নিয়ম হয়ে দাঁড়াবে তা নতুন করে বলার অবকাশ রাখে না।
অনিয়মের চিত্র শুধু জীবননগর নয়, প্রায় প্রতিটি সাব রেজিস্ট্রি অফিস ও তার ঘিরে রাখা ওই সমিতির চিত্র প্রায় অভিন্ন। ফলে উত্থাপিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে আশু তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া অতিব জরুরী। তাছাড়া জমি রেজিস্ট্রি ও জমির দলিল সংলক্ষণ বালাম খানার নিরাপত্তা সেই সনাতন পদ্ধতিইে আবদ্ধ। সময়ের তাগিদেই সব কিছুতেই আধুনিকায়ন করা হচ্ছে। জমি জমা রেজিস্ট্রির ক্ষেত্রেও প্রয়োজন আধুনিকতার ছোঁয়া।