মেহেরপুরে ধূমপান ও তামাকের ক্ষতিকর প্রভাব এবং ক্যান্সার বিষয়ক অ্যাডভোকেসি সভা অনুষ্ঠিত

মেহেরপুর অফিস: ধূমপান ও তামাকের ক্ষতিকর প্রভাব এবং ক্যান্সার বিষয়ক অ্যাডভোকিসি সভা গতকাল রোববার বেলা ১১টায় মেহেরপুর সিভিল সার্জন অফিসের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত হয়েছে। স্বাস্থ্য শিক্ষা ব্যুরো, স্বাস্থ্য অধিদফতর ঢাকার সহযোগিতায় সিভিল সার্জন অফিস মেহেরপুরের আয়োজনে অনুষ্ঠিত অ্যাডভোকেসি সভায় সভাপতিত্ব করেন সিভিল সার্জন ডা. জিকেএম শামসুজ্জামান। সিভিল সার্জন অফিসের ইপিআই সুপারভাইজার আব্দুস সালামের উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন- মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র স্বাস্থ্য শিক্ষা কর্মকর্তা কাজী রওশন নাহার। অনুষ্ঠানে মূল আলোচক ছিলেন শিক্ষা স্বাস্থ্য ব্যুরো ঢাকার ডেপুটি চিফ বজলুরর রহমান, মেহেরপুর পৌর মেয়র মাহফুজুর রহমান রিটন, হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মিজানুর রহমান, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক এসএম মোস্তাফিজুর রহমান, সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিববার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. অলোক কুমার দাস।
আলোচকবৃন্দ তামাক ব্যবহারে ভয়াবহতা তুলে ধরে বলেন- তামাকে রয়েছে নিকোটিন, কার্বন-মনো-অক্সাইড, আর্সেনিক, হাইড্রোজেন সায়ানাইড ইত্যাদির মতো ক্ষতিকারক ৭ হাজার রাসায়নিক পদার্থ। যা ৭০টি সরাসরি ক্যান্সার সৃষ্টির জন্য দায়ী। তামাক ব্যবহারের কারণে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। একজন তামাক সেবীর গড়ে ২০ বছর আয়ু কমে যায়। পৃথিবীতে প্রতিদিন ৮০ হাজার থেকে এক লাখ কিশোর/তরুণ তামাক সেবন শুরু করে। তামাকের কারণে বিশ্বে প্রতি ৬ সেকেন্ডে মারা যাচ্ছে একজন মানুষ। পরোক্ষ ধূমপানের কারণে বছরে পৃথিবীতে এক লাখ ৬ হাজার শিশুর মৃত্যু হয়। তামাকের কারণে ২০৩০ সাল নাগাদ প্রতি বছর বিশ্বে এক কোটি লোক মারা যাবে। যার মধ্যে ৭০ লাখই বাংলাদেশের মতো দরিদ্র দেশগুলোতে। এছাড়া তামাকের কারণে পৃথিবীতে প্রতি বছর বিশ্বের ২ লাখ হেক্টর জমির বন উজাড় হয়ে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের চিত্র আরও ভয়াবহ। তামাক ব্যবহারে প্রতি বছর বাংলাদেশে ৫৭ হাজারের বেশি লোক মৃত্যুবরণ করে। ৩ লাখ ৮২ হাজার লোক পঙ্গুত্ববরণ করে। গ্রামের কম শিক্ষিত ও দরিদ্র মানুষের মধ্যে তামাক ব্যবহার বেশি হয়। আর তামাক ব্যবহারজনিত কারণে প্রতি বছর ১২ লাখ মানুষ ৮টি প্রধান রোগে আক্রান্ত হয়। তামাক ব্যবহারের কারণে প্রতিবছর চিকিৎসা ব্যয় হয় ১১ হাজার কোটি টাকা। গত বছরে মেহেরপুর জেলায় আবাদযোগ্য মোট ৬০ হাজার হেক্টর জমির মধ্যে শুধু তামাক চাষ হয়েছে ৩ হাজার একশ হেক্টর জমিতে। তাই তামাক ও তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহার এখনই বন্ধ হওয়া উচিত বলে মনে করেন আলোচকরা।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ও মুক্ত আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন জেলা সমাজ সেবা অধিদফতরের উপপরিচালক দেলোয়ার হোসেন, আরএমও ডা. এহসান উল কবির, মেহেরপুর প্রেসক্লাব সভাপতি আলামিন হোসেন, জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা একেএম শাফিউল আযম, বাংলাদেশ তামাকবিরোধী জোট মেহেরপুর জেলা শাখার প্রধান উপদেষ্টা রফিকুল আলম, জেলা হোটেল মালিক সমিতির সভাপতি হাফিজুর রহমান হাফি, জেলা তথ্য অফিসার মোহাম্মদ আলীসহ জেলার বিভিন্ন সরকারি অফিসের কর্মকর্তা ও মেহেরপুর পৌর কাউন্সিলরবৃন্দ।