হিমেল হাওয়ায় শীতের পদধ্বনি

স্টাফ রিপোর্টার:ভোরবেলা বয়ে যাচ্ছে হালকা হিমেল বাতাস। ঘুমের ঘোরে থেকেও কাঁথা জড়াতে হচ্ছে। ঘরের বাইরে গেলে হিম হিম ঠাণ্ডা জড়িয়ে ধরে শরীরের চারপাশ। তাই সাতসকালে একটি প্রশ্ন মনে জাগতে পারে, শীত কি তাহলে চলে এলো? রাতের তাপমাত্রা বেশ কমে গেছে। বাহিরে বের হলে শীত কাপড় ছাড়া চলা মুশকিল। গতকাল সোমবার দেশের সর্বনিন্ম তাপমাত্রা ছিলো ফেনিতে ১৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো ৩২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চুয়াডাঙ্গায় সর্বনিন্ম তাপমাত্রা ছিলো ২০ দশমিক শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াস ও সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো ২৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো ২৫ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও সর্বোনিন্ম তাপমাত্রা ছিলো ২১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

অক্টোবর মাসের কয়েক দিনে আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য দেখে শীতের আগমনী বার্তাই পাওয়া যাচ্ছে। কারণ, মৌসুমি বায়ু এই মাসের প্রথমার্ধে বিদায় নিয়েছে। নিম্নচাপের প্রভাবে ১৯ থেকে ২১ অক্টোবর পর্যন্ত টানা তিন দিনের বৃষ্টি। এর পরই যেন প্রকৃতির আচরণ বদলে যেতে থাকে। কমে আসে বৃষ্টির দাপট। ছিটেফোঁটা, কোথাওবা বিক্ষিপ্ত বৃষ্টির দেখা মিললেও কয়েক দিন ধরে শুষ্কই রয়েছে দেশের বেশিরভাগ এলাকা। এর সঙ্গে আবার তাপমাত্রাও কমছে অল্প অল্প করে।

আবহাওয়াবিদদের মতে, তাপমাত্রা আরও কমে আসার প্রবণতা থাকবে। কারণ, মৌসুমি বায়ু বিদায় নেয়ার পর সূর্যের আলো এখন তির্যকভাবে পড়তে শুরু করেছে। আর বাংলাদেশে শীত অনুভূত হয় সূর্যের অবস্থানের কারণে। বছরের এ সময়টায় সূর্যের কিরণকালও কমে যায়।

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় মানুষের শরীরে সবচেয়ে আরাম অনুভূত হয়ে থাকে। এর নিচে তাপমাত্রা কমে এলে শীত শীত লাগতে শুরু করে। তাপমাত্রা ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে গেলে শীত ও অস্বস্থি লাগে। এখন থেকে নভেম্বর মাসের প্রথম পক্ষ থেকে গরমের তীব্রতা আর অনুভূত হবে না। কারণ, এ মাসে সর্বনিম্ন তাপমাত্রার সাথে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার ব্যবধান কমে যাবে। সারাদেশের তাপমাত্রা যেমন কমতে শুরম্ন করেছে তেমনি হালকা কুয়াশাও পড়ছে দেশের কোথাও কোথাও। আবহাও

য়া অধিদপ্তর জানায়, নভেম্বর মাসের শুরম্ন থেকে দেশের উত্তর-পূর্ব, উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলে নদী অববাহিকায় হালকা কুয়াশা পড়তে পারে। এসব এলাকায় দৃষ্টিসীমা গড়ে ৮০০ মিটার থেকে এক কিলোমিটার থাকে। কোথাও কোথাও এটি ৫০০ থেকে ৮০০ মিটারে নেমে আসে। কুয়াশা বেশি পড়ার আশঙ্কা থাকায় ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে দৃষ্টিসীমা ১০০ থেকে ২০০ মিটারে নেমে আসতে পারে।

এ কুয়াশার সাথে যদি বাতাস বয়ে যায় তাহলে শীত অনুভূত বেশি হয়।বাংলাদেশে ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত এ তিন মাসকে শীতকাল বলা হয়। তবে নভেম্বর মাসে শীত পড়ে থাকে। দিনের ব্যাপ্তি কম থাকে। তখন সূর্য ডুবে গেলে ভূপৃষ্ঠ তাপ ছেড়ে ঠাণ্ডা হয়। এর সাথে কুয়াশা ও হালকা বাতাস বয়ে গেলে শীত পড়ে। এটিকে বিকিরণের মাধ্যমে ঠাণ্ডাজনিত কুয়াশা বলা হয়। নভেম্বর মাসের এ সময় স্বাভাবিক মাত্রার শীত পড়ে থাকে। তখন সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৪ থেকে ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকে। বাংলাদেশে হাড় কাঁপানো শীত ডিসেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে ফেব্রম্নয়ারির প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত পড়ে থাকে।