সমাজের সর্বনাশা এ দশা কবে দূর হবে কে জানে

যে ফাঁদ শেয়াল বনবিড়াল মারার জন্য, সেই ফাঁদে পড়ে খামারির বৃদ্ধা মায়ের মৃত্যু হয়েছে। শুধু মা নয়, কখনো কখনো খামারির কিম্বা তার নিকটজনেরও মৃত্যু হওয়ার খবর মাঝে মাঝেই পত্র পত্রিকার শিরোনাম হয়। অথচ মৃত্যু ফাঁদ পাতা বন্ধ হয় না। কেনো? নিশ্চয় দূরদর্শীতার অভাব। কী করলে কী হয় তা বুঝতে না পারাটা অপরিণামদর্শী বা অদূরদর্শী। তাছাড়া ফাঁদ পেতে বন্যপ্রাণী হত্যা করাও যে অপরাধ সেটাও তো সকলের জানা দরকার। যদিও অপরাধবোধ জাগাতে সামাজিকভাবেই মানসিকতার পরিবর্তন করতে হয়। এ পরিবর্তন তরান্বিত হয় তখনই যখন সর্বক্ষেত্রে আইনের যথাযথ স্বচ্ছ সরব প্রয়োগের নিশ্চয়তা থাকে।
একসময় বন্যপ্রাণীর সাথে শুধু লড়াই করেই নয়, বন্যপ্রাণী শিকার করেই মানবজাতিকে টিকতে হয়েছে। যতো দিন গড়িয়েছে, মানুষ তার প্রয়োজনেই জীবনযাত্রায় এনেছে পরিবর্তন, পরিবর্ধন, পরিমার্জন। কালক্রমে বন্যপ্রাণী আর আমাদের শত্রু নেই, মানুষই মূলত মানুষের বড় শত্রু হয়ে দাঁড়িয়েছে। যে ধরিত্রীর বুকে আমরা সবাই, সেই ধরিত্রী সুস্থ্য রাখতে তথা পরিবেশের ভারসম্য রক্ষার্থে অন্যতম শর্ত বন্যপ্রাণী রক্ষা। বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশেই বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে আইন রয়েছে। কোনো দেশে এ আইনের যথাযথ প্রয়োগ পরিবেশকে সুন্দর করতে সহায়ক হয়েছে, মানুষও হয়েছে দায়িত্বশীল। আর আমাদের দেশে? আইন থাকলেও প্রয়োগের অভাবে বন্যপ্রাণী হত্যার পর প্রকাশ্যেই উল্লাস করে ওরা যেনো বিরত্বের স্বীকৃতি চায়। সমাজের সর্বনাশা এ দশা কবে দূর হবে কে জানে?
বিদ্যুত এমনই এক শক্তি যা আবিষ্কারের মধ্য দিয়ে মানুষের জীবনযাত্রার মানটাই বদলে গেছে। বিদ্যুত শক্তি ছাড়া বিশ্ববাসীর এখন আর এক মুহুর্ত ভাবতে পারে না। এই বিদ্যুতেরও ইতিবাচক দিক বেশি হলেও নেতীবাচকও কম নেই। সামান্য অসতর্কতায় কেড়ে নিতে পারে হাজার হাজার প্রাণ। একটু সটসার্কিট থেকে সৃষ্ট আগুন পুড়িয়ে ছারখার করতে পারে গ্রামের পর গ্রাম। ঘরে ঘরে বিদ্যুত ব্যবহারের সাথে সাথে বিদ্যুত সম্পর্কে সচেতনতা বেড়েছে। তবে দায়িত্ববোধে ঘাটতি স্পষ্ট। তা না থাকলে কি মুরগির খামার ঠেকাতে বিদ্যুৎ সংযুক্ত করে বন্যপ্রাণী হত্যার ফাঁদ পাতে? বোকামি ঘোঁচাতে কর্তাদেরও আরো কর্তব্যপরায়ন হতে হবে।