কমিউনিটি পুলিশের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য

জঙ্গি, মাদক ও সন্ত্রাস নিয়ন্ত্রণে পুলিশবাহিনীর পাশাপাশি কমিউনিটি পুলিশ প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করে আসছে। অপরাধ দমনে তারা প্রতিনিয়ত নানা তথ্য-উপাত্ত দিয়ে পুলিশকে সহযোগিতা করার পাশাপাশি সামাজিক শৃঙ্খলা রক্ষার ক্ষেত্রেও রাখছে বিশেষ অবদান। সম্প্রতি প্রকাশিত বিভিন্ন পরিসংখ্যান হতে জানা যায়, এতে সামাজিক অপরাধ প্রবণতার হার দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে। উপরন্তু তাদের কল্যাণে পুলিশ ও জনতার মাঝে বোঝাপড়ার অবারিত সুযোগও সৃষ্টি হয়েছে বৈকি। পাশাপাশি পুলিশের প্রতি জনগণের আস্থা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে পুলিশের জনসম্পৃক্ততাও। এমন সফলতার চালচিত্রকে ধারণ করে সারাদেশে ‘পুলিশই জনতা, জনতাই পুলিশ’ স্লোগানকে সামনে রেখে কমিউনিটি পুলিশিং ডে ২০১৭ উদযাপিত হয়েছে।
গণমুখী পুলিশিঙের ধারণা হতেই মূলত কমিউনিটি পুলিশের ধারণার উদ্ভব হয়েছে। তাছাড়া প্রায় শতাব্দীকাল পূর্বে প্রণীত ফৌজদারি কার্যবিধিতেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নাগরিকদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার ব্যাপারে নির্দেশনা রয়েছে। এ আলোকে বাংলাদেশে ২০০৮ সালে যাত্রা শুরু করে কমিউনিটি পুলিশ। মূলত এটি একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। পূর্বে গ্রাম, পাড়া ও মহল্লার স্থানীয় মাতব্বরগণ সামাজিক শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে যে সকল কর্মকা- পরিচালনা করতেন, তা এখন পালন করে থাকেন কমিউনিটি পুলিশের সদস্যরা। বস্তুত পুলিশের সক্ষমতা ও কর্মপরিধির আওতা বৃদ্ধি এবং লোকবলের ঘাটতি পূরণ করার লক্ষ্যেই এই ধরনের পুলিশি ব্যবস্থা পরিচালিত হয়ে থাকে। সামাজিক অপরাধ দমনে পুলিশ ও জনগণের যৌথ অংশীদারত্ব প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রেও এই ব্যবস্থা যথেষ্ট কার্যকর বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞগণ। বলার অপেক্ষা রাখে না যে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশের ভূমিকা অনস্বীকার্য। কিন্তু এখনো আমাদের দেশে জনসংখ্যার অনুপাতে পুলিশের সংখ্যা যথেষ্ট নয়। ফলে এক্ষেত্রে কমিউনিটি পুলিশিং একটি ভালো বিকল্প হতে পারে। পুলিশের সাথে জনগণের সম্পৃক্ততা থাকলে অপরাধ ও অপরাধী শনাক্তকরণ প্রক্রিয়াও সহজতর হয়। কেননা, এলাকা ভেদে অপরাধের চরিত্র ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে বৈকি। এক্ষেত্রে স্থানীয় পর্যায়ের জনগণই সেই বিশেষ ধরনের অপরাধ সম্পর্কে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীকে অবহিত করতে পারেন। এতে সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা অনেক শক্তিশালী হয়। উপরন্তু ছোট ছোট সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রেও জনগণকে কোর্ট-কাচারিতে দৌড়াদৌড়ি করতে হয় না। মনে রাখা আবশ্যক যে, কমিউনিটি পুলিশের স্বচ্ছ ভাবমূর্তির বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই সংশ্লিষ্ট সকল কমিটি ও কার্যক্রমে সমাজের ক্লিন ইমেজের ব্যক্তিবর্গের সম্পৃক্ততা নিশ্চিত করা জরুরি।