গাংনীতে যুবলীগের বিশেষ বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত দলে অনুপ্রবেশকারী প্রতিরোধে প্রতিবাদের ঝড়

গাংনী প্রতিনিধি: পেছনের দরজা দিয়ে যুবলীগের নেতৃত্ব কোনো ভাবেই মেনে নেয়া হবে না বলে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিলেন তৃণমূলের নেতারা। ঐতিহ্যবাহী এ দলের নেতৃত্ব ঠিক করতে কাউন্সিলরদের ভোটাধিকার প্রয়োগের দাবি তীব্র থেকে তীব্রতর হয়েছে। মেহেরপুর গাংনী উপজেলা যুবলীগের বিশেষ বর্ধিত সভায় গতকাল রোববার এ মতামত ব্যক্ত করেন বক্তারা। যুবলীগের সাংগঠনিক অবস্থান, মূল দলের গ্রুপিং, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে করণীয় নিয়ে অভিন্ন বক্তব্য দিয়ে হাইব্রিড নেতা ঠেকানোর দৃঢ় অঙ্গিকার ব্যক্ত করেন ওয়ার্ড থেকে শুরু করে উপজেলা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
আগামী ১১ নভেম্বর আওয়ামী যুবলীগের ৪৫তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালন উপলক্ষে গাংনী উপজেলা যুবলীগ দলীয় কার্যালয়ের সামনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শফি কামাল পলাশের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন বিভিন্ন ইউনিট নেতৃবৃন্দ।
অনুষ্ঠানে বক্তরা বলেন, মূল দলে গ্রুপিং থাকলেও যুবলীগ ঐক্যবদ্ধ। আগামী নির্বাচনেও যুবলীগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। নৌকা প্রতীক যিনি নিয়ে আসবেন যুবলীগ নেতাকর্মীরা তার পক্ষেই কাজ করবেন।
গাংনী উপজেলা যুবলীগের কাউন্সিল দাবি করে বক্তারা বলেন, ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পর্যায় থেকে শক্তিশালী কমিটি গঠন করা হয়েছে। কিন্তু উপজেলা সম্মেলন হচ্ছে না। একারণে নেতাকর্মীরা আজ হতাশ। দ্রুত কমিটি গঠন করা না গেলে দলের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে।
গ্রুপিং এর কারণে দল ক্ষমতায় থেকেও ক্ষমতাই নেই উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, দলের ভেতরে বিএনপি-জামায়াতের অনেকেই অনুপ্রবেশ করেছে। তারা হাইব্রিড হিসেবে পরিচিত। তারাই আজ ক্ষমতার স্বাদ গ্রহণ করছে। মূল দলের নেতাদের মধ্যে যে দ্বন্দ্ব বিদ্যমান তার পেছনে এ হাইব্রিড। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে অনুপ্রবেশকারীরা ঘাতকের ভূমিকা পালন করছে বলেও অভিযোগ করেন বক্তারা।
গাংনী পৌর মেয়র আশরাফুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে কয়েকজন বক্তা বলেন, আমরা শুনেছি তিনি জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য। কিন্তু গাংনীতে তার ভূমিকা কী? তিনি কোন রাজনীতি করেন? দলে আসতে চাইলে তাকে স্বাগতম। তবে দলের সিদ্ধান্ত মানতে হবে। আগে কর্মী হন তার পরে নেতা হবেন। তৃণমূলকে পাশ কাটিয়ে নেতা হওয়ার সুযোগ যুবলীগে নেই।
দ্বিধাবিভক্ত আওয়ামী লীগ নেতাদের ঐক্যবদ্ধ করতে যুবলীগ ভূমিকা পালন করতে পারে। উল্লেখ করে বক্তারা আরও বলেন, আগামী নির্বাচন অস্তিত্ব রক্ষার নির্বাচন। তাই কালক্ষেপন না করে এখনই ঐক্য করতে হবে। এককাতারে দাঁড়িয়ে নৌকার পক্ষে কাজ করার কোনো বিকল্প নেই। এর মধ্য দিয়ে নৌকা প্রতীকের বিজয় নিশ্চিত হবে বলেই আশা প্রকাশ করেন বক্তারা।
বক্তব্য রাখেন উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলাম ও সাবেক সাদারণ সম্পাদক আব্দুস সালাম, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের ডেপুটি কমান্ডার আমিরুল ইসলাম, উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক মজিরুল ইসলাম, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনারুল ইসলাম বাবু, উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক আমজাদ হোসেন, পৌর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক রাহিবুল ইসলাম, উপজেলা যুবলীগের সদস্য আল ফারুক, দফতর সম্পাদক আসাদুজ্জামান, সহ দফতর সম্পাদক আব্দুল আলিম, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ইসমাইল হোসেন, যুবলীগের নেতা সাইফুজ্জামান সিপু, আশিকুর রহমান আকাশ, ধানখোলা ইউপি ‘ক’ অঞ্চল যুবলীগের সভাপতি কিসমত হোসেন, সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম মোহন, ‘খ’ অঞ্চল সভাপতি মতিয়ার রহমান, রাইপুর ইউপি যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক শামীম আহম্মেদ, কাজিপুর ইউপি যুবলীগের সম্পাদক জুলহাস ও কাথুলী ইউপি যুবলীগের সম্পাদক সুজন আহম্মেদসহ ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড নেতৃবৃন্দ।
সভাপতির বক্তব্যে মোশাররফ হোসেন বলেন, আমি আর পদ আকড়ে থাকতে চাইনা। কাউন্সিলরদের ভোটের মধ্য দিয়ে নতুন নেতৃত্বের কাছে দায়িত্ব ছেড়ে দিতে চাই। কেন্দ্র ও জেলায় কাউন্সিলরদের নাম পাঠিয়েছি। আশা করছি দ্রুততম সময়ের মধ্যে তারা আমাদের কাউন্সিল গঠনের নির্দেশ দিবেন।