তবুও শিক্ষকের ভুল হলে কি চলে

ওই শিক্ষকই ভালো শিক্ষক। যিনি শ্রেণিকক্ষে সকল শিক্ষার্থীকে লেখাপড়ায় মনোনিবেশ করাতে সক্ষম। আর অক্ষমতা আড়াল করতে যারা চোখরাঙানিতে সিদ্ধহস্ত, তাদের শিক্ষকতা পেশায় না রাখাই ভালো। চুয়াডাঙ্গার ভালাইপুর মোড়ের একটি ক্যাডেট স্কিম মাদরাসার এক শিক্ষককে ব্যবস্থাপনা পরিষদ সাময়িক বরখাস্ত করেছে। ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কিছু শিক্ষার্থী প্রধান শিক্ষকের নিকট নালিশ করার কারণে ক্ষুব্ধ হন। তিনি ১০শিক্ষার্থীকে গাছের ডাল দিয়ে পিটিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিকেই কলুষিত করেছেন।
অবশ্যই একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সকল শিক্ষার্থী সুতাকের নয়। সকল শিক্ষকের নিকট থেকে পুরোপুরি ভালোটা আশা করাও অবান্তর। তবে শিক্ষকতা পেশায় যারা নিজেকে নিয়োজিত করেন, তাদের মনে রাখা দরকার তারাই সমাজের আদর্শ। শিক্ষার্থীদের সামনে শিক্ষকরাই অনুকরণীয় হয়ে ওঠেন। শিক্ষক যদি পাঠদানের বদলে আধুনিক সেলফোন হাতে নিয়ে ফেসবুক কিংবা অন্য কোনো যোগাযোগে নিজেকে ব্যস্ত রাখেন, তাহলে তাকে দেখে শিক্ষার্থীরা কী শিখবে? একজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিদ্যালয় প্রধানের নিকট শিক্ষার্থীরা কখন নালিশ করে? অনিয়ম স্বেচ্ছাচারিতার মাত্রা যখন অসহনীয় হয়ে ওঠে তখনই নিশ্চয়। যদিও অভিযোগ উত্থাপন মানেই তা সঠিক ধরে নিয়ে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ অদূরদর্শিতা। সকল অভিযোগেরই সুষ্ঠু স্বচ্ছ তদন্ত হওয়া দরকার। তদন্তে দোষ প্রমাণ হলে তখনই শাস্তি কিংবা সতর্ক করার বিষয়টি সামনে আসে।
শিক্ষক নিয়োগ পদ্ধতিতে আমূল পরিবর্তন আনা হয়েছে। শিক্ষকতায় যোগ্যদেরই শিক্ষকতার সুযোগ দেয়া দরকার। স্বজনপ্রীতি, উপঢৌকন বা অন্য কিছু যোগ্যতার মাফকাঠি হলে জাতির ভবিষ্যত যে মুখ থুবড়ে পড়বে, তা বলাই বাহুল্য। কেননা, প্রজন্মকে সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে শিক্ষকম-লই মূল ভরসা। ফলে শিক্ষকের ওপর সমাজের কত বড় দায়িত্ব তা প্রত্যেক শিক্ষকেরই উপলব্ধি করা দরকার। যদিও মানুষ মাত্রই ভুল হয় বলে দায় এড়ানোর রেওয়াজ রয়েছে, তবুও শিক্ষকের ভুল হলে কি চলে? সকলে সুস্থ ও মানবিক আচরণ আশা করে।