জেএসসির প্রশ্ন ফাঁস

স্টাফ রিপোর্টার: জেএসসির প্রশ্নপত্রও এখন ফেইসবুকে পাওয়া যায়। পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস বন্ধ হচ্ছে না; বিভিন্ন অ্যাপ ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আগের মতোই পরীক্ষা শুরুর আগেই আসছে প্রশ্নপত্র, যা হুবহু মিলেও যাচ্ছে।

চলমান জেএসসি পরীক্ষার ইংরেজি দ্বিতীয়পত্রের পর ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষার প্রশ্নপত্রও ফেইসবুকে পাওয়া গেছে; যার সঙ্গে পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের পুরোপুরি মিল পেয়েছে শিক্ষার্থীরা। গত সোমবার অনুষ্ঠিত হয় ইংরেজি দ্বিতীয়পত্রের পরীক্ষা। ওই পরীক্ষা শুরুর ৫৫ মিনিট আগে প্রশ্নপত্র পাওয়া যায় একটি ফেইসবুক মেসেঞ্জার গ্রুপে। গতকাল মঙ্গলবার পরীক্ষা শুরুর আধা ঘণ্টা আগে একই মেসেঞ্জার গ্রুপে  ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষার প্রশ্নও চলে আসে, সেটাও মিলে যায়। অনুষ্ঠিত পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের সঙ্গে ফেসবুকে পাওয়া প্রশ্নের মিল পাওয়ার পর সোমবার সন্ধ্যায় এ বিষয়ে ঢাকা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক তপন কুমার সরকার গণমাধ্যমকে বলেন, ফেইসবুক একাউন্টের আইডি লিঙ্কটিসহ প্রশ্নের জন্য অর্থ চেয়ে দেয়া মোবাইল ব্যাংকিং একাউন্ট নম্বর জানিয়ে তাকে ই মেইল করা হয়। তখন তিনি বলেছিলেন, পুলিশের সহায়তা নিয়ে বিষয়টি দেখে অপরাধীকে শনাক্ত করা হবে।

কিন্তু তার মধ্যেই মঙ্গলবার পরীক্ষা শুরুর আধা ঘণ্টা আগে একই মেসেঞ্জার গ্রুপে  ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষার প্রশ্নও চলে আসে, তাও মিলে যায়। এরপর যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “আপনাদের কাছ থেকে অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তা বিটিআরসি (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে) জানানো হয়েছে। তারা বিষয়টি দেখছে, (অপরাধীকে) ধরার চেষ্টা করছে। তবে গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যার পরও ফেইসবুক মেসেঞ্জার গ্রুপটি সক্রিয় দেখা যায়। তাতে বুধবার অনুষ্ঠেয় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ের প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘোষণাও দেয়া হচ্ছিল।

তবে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক তপন কুমার বলেন, ‘আমি এটাকে প্রশ্ন ফাঁস বলতে পারি না, আমাদের কাছে তো এখনও কোনো প্রমাণ নেই। ফাঁসের কোনো নমুনা তো দেখছি না।’ কখন প্রশ্ন হাতে এলে তাকে ফাঁস বলা হবে, আগের রাতে- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘নির্ধারিত সময়ের আগে প্রশ্ন বেরিয়ে যাওয়া তো উচিত না বলে আমি মনে করি। সেটা কীভাবে বের হচ্ছে, কী বিষয়-আশয় তা জেনে তারপর আপনাকে বলতে হবে। আমি এখনও বুঝতে পারছি না বিষয়টা।’ প্রশ্ন ফাঁস বন্ধের দাবি নিয়ে ২০১৪ সালে এভাবে ক্ষোভ দেখিয়েছিলেন অধ্যাপক মুহাম্মদ জাফর ইকবাল। শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ পরীক্ষা শুরুর ঠিক আগে প্রশ্ন ফাঁসের জন্য দুষছেন শিক্ষকদের। এবারের বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী দেশের বাইরে থাকায় তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। গত বছর ঢাকা বোর্ডের এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছিল হোয়াটস অ্যাপে; তার আগের বছর এইচএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছিলো ফেইসবুকে।

তখন শিক্ষাবিদসহ বিভিন্ন মহল সোচ্চার হলেও প্রশ্ন ফাঁসের কথা স্বীকার করেননি শিক্ষামন্ত্রী; তবে পরীক্ষার সময় মোবাইলফোন ও ফেইসবুক বন্ধ করে দেয়ার হুমকি দিয়েছিলেন তিনি। এখন তিনি শিক্ষকদেরই দুষছেন বেশি।