আলমডাঙ্গায় ফেনসিডিল-হেরোইনসহ আটক ২ নারী মাদকব্যবসায়ী

নিজেরা গা-ঢাকা দিলেও কৌশল পরিবর্তন : উঠতি বয়সী ও অপরিচিতদের দিয়ে মাদকব্যবসার অভিযোগ
আলমডাঙ্গা ব্যুরো: কৌশল পরিবর্তন করেছে আলমডাঙ্গার মাদকব্যবসায়ীরা। নিজেরা গা-ঢাকা দিলেও উঠতি বয়সী কিশোর-কিশোরী ও অপরিচিতদের দিয়ে মাদকব্যবসা চালাচ্ছে। গতকাল নতুন করে হেরোইন ও ফেনসিডিলসহ আটক করা হয়েছে নতুন ২ মহিলা মাদকব্যবসায়ীকে।
জানা গেছে, সম্প্রতি আলমডাঙ্গা পুলিশ প্রশাসন মাদকব্যবসা উচ্ছেদ অভিযান শুরু করে। এ ব্যাপারে শহরে মাইকিং করে রীতিমত ঘোষণা দিয়ে মাদকব্যবসায়ীদের সতর্ক করা হয়। গত কয়েক দিনে শহরের বেশকিছু মাদকব্যবসায়ীকে আটকও করেছে থানা পুলিশ। শহরের সব মাদক ডেরায় পুলিশ অভিযান অব্যাহত রেখেছে। গত পরশুদিন শহরে পুলিশ মাদকবিরোধী মহড়া দেয়। আলমডাঙ্গা থানার একডজন এসআই লাঠি ও মোটরসাইকেল নিয়ে এ মাদকবিরোধী মহড়ায় অংশ নেয়। এই মহড়া শেষে মাদকের চিহ্নিত ডেরায় ডেরায় পুলিশ অভিযান চালায়। ৩ জন মাদকব্যবসায়িকে আটক করে। আটক করে আরও একজন মাদকসেবীকে।
এদিকে মাদকব্যবসায়ীকে কোনরকম ছাড় না দেয়ার পুলিশের কঠোর মনোভাব দেখে এবং প্রতিনিয়ত পুলিশের মাদকবিরোধী অভিযানে আলমডাঙ্গা শহরের মাদকব্যবসায়ীরা বাধ্য হয়ে গা-ঢাকা দিয়েছে। তবে রণে ভঙ্গ দেয়নি মোটেও। প্রথমে তারা নিজেরা গা-ঢাকা দিয়ে শহরের আশপাশে অবস্থিত আত্মীয়স্বজনদের বাড়িতে অবস্থান করছে। সেখান থেকেই শহরের মাদকসেবীদের সাথে মোবাইলফোনে যোগাযোগ করে মাদকদ্রব্য বিক্রি করতো বলে অভিযোগ ওঠে। ইতোমধ্যে পুলিশ মাদকব্যবসায়ীদের অনেকের নতুন অবস্থান শনাক্ত করে ফেলায় তারা সতর্ক হয়ে অন্যত্র অবস্থান নিয়েছে বলে জানা গেছে। কৌশল পরিবর্তন করেছে মাদকদ্রব্য বিক্রিতে। তারা উঠতি বয়সী কিশোর-কিশোরী ও অপরিচিতদের এ মাদকদ্রব্য বিক্রির কাজে ব্যবহার করছে। গতকাল ১৩ নভেম্বর পুলিশ অভিযান চালিয়ে আলমডাঙ্গা স্টেশনপাড়ার প্রবাসীর ভাড়া বাড়িতে বসবাসকারী মৃত হাশেম আলীর স্ত্রী আমেনা খাতুন (৪৭) ও চুয়াডাঙ্গা বেলগাছির আব্দুর রশিদের স্ত্রী জবা খাতুনকে (২১) আটক করে। তাদের কাছ থেকে পুলিশ ১০ বোতল ফেনসিডিল ও ২০ পুরিয়া হেরোইন উদ্ধার করে।
এছাড়া গত ৪ নভেম্বর পুলিশ ইয়াবা ট্যাবলেট ও হেরোইনসহ মাদকব্যবসায়ী দম্পতি মায়া-ওল্টুকে গ্রেফতার করে। গত ৬ নভেম্বর হেরোইন ও ইয়াবাসহ মাদকব্যবসায়ী রুবেল, খায়রুল ও হালিমকে, গত ৯ নভেম্বরে হরোইনসহ রাজু, সোহেলকে, ১১ নভেম্বর চিহ্নিত মাদকব্যবসায়ী আয়নাল ও রাশেদুল, গাজাব্যবসায়ী আয়ুব আলী প্যাথেডিন ব্যবসায়ী আসাদুলকে আটক করে। গত পরশু রোববার আলমডাঙ্গা স্টেশনপাড়ার চিহ্নিত মাদকব্যবসায়ী সপুকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতার হওয়ার পরও থেমে নেই তাদের মাদকব্যবসা। উঠতি বয়সীদের দিয়ে সচল রাখা হচ্ছে তাদের মাদকব্যবসা। গতকাল ফেনসিডিল ও হেরোইনসহ আটক মাদকব্যবসায়ী আমেনা জানায়, তাকে দিয়ে মাদকদ্রব্য সাপ্লাই দিয়ে থাকে। গতপরশু গ্রেফতার হওয়া সপুর শিশুপুত্র।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইতোমধ্যে গ্রেফতারের হওয়া ও এলাকা ছাড়া আলমডাঙ্গা স্টেশন এলাকার কতিপয় মাদকব্যবসায় কিশোর বয়সে পা রাখা ছেলে-মেয়ে তাদের বাপ-মার মাদকব্যবসার হাল ধরছে। গতকাল আটক হওয়া চুয়াডাঙ্গা বেলগাছির জবা খাতুনের মতো অনেকে নতুন করে অপরিচিত মুখ সংগ্রহ করে তাদের দিয়ে মাদকদ্রব্য বিক্রি করাচ্ছে।