জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে প্রস্তাব পাস

বিপক্ষে ভোট দিয়েছে চীন, রাশিয়া, লাওস ও ভিয়েতনামসহ ১০টি দেশ

মাথাভাঙ্গা মনিটর: মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর দেশটির সেনাবাহিনীর অভিযান বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে একটি প্রস্তাব পাস হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের মানবাধিকার বিষয়ক কমিটিতে ভোটাভুটির পর এ প্রস্তাব পাস হয়। জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মাসুদ বিন মোমেন নিউইয়র্ক থেকে সাংবাদিকদের বলেন, প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে ১৩৫টি রাষ্ট্র। বিপক্ষে পড়েছে ১০টি ভোট। কিছু দেশ অনুপস্থিত ও ভোটদানে বিরত ছিলো। চীন, রাশিয়া, লাওস ও ভিয়েতনামসহ ১০টি দেশ প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছে। এছাড়া ভারত ও জাপান ভোটদানে বিরত ছিলো। অনুপস্থিত ছিলো ইরান। প্রস্তাবে রোহিঙ্গাদের ওপর সেনাবাহিনীর সহিংসতা বন্ধ ও মিয়ানমারের ১৯৮২ সালের নাগরিকত্ব আইন পুনর্বিবেচনা করে রোহিঙ্গাদের ‘পূর্ণ নাগরিকত্ব’ দেয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
একই সাথে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত ও রোহিঙ্গাদের ওপর যারা অত্যাচার-নিপীড়ন করেছে, তাদের বিচারের আওতায় আনার জন্যও দেশটির সরকারকে বলা হয়েছে।
বার্তা সংস্থা এপি জানায়, ৩১ অক্টোবর কমিটিতে ‘মিয়ানমারের মানবাধিকার পরিস্থিতি’ শিরোনামে ওআইসি এ খসড়া প্রস্তাবটি উত্থাপন করে। এর কো-স্পনসর ছিলো ৯৭টি দেশ। ২ সপ্তাহের মাথায় সাধারণ পরিষদের থার্ড কমিটি ব্যাপক ভোটের ব্যবধানে প্রস্তাবটি পাস করল। প্রায় ১৫ বছর ধরে এ কমিটি মিয়ানমারের মানবাধিকার পরিস্থিতি’ নিয়ে প্রতি বছর এ প্রস্তাব গ্রহণ করে।

প্রস্তাবটিতে বলা হয়, রাখাইনে সামরিক অভিযানের কারণে ‘পদ্ধতিগতভাবে’ রোহিঙ্গাদের মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হচ্ছে। এ অভিযান বন্ধ করাসহ রোহিঙ্গা নিধনের জন্য দোষীদের বিচারের আওতায় আনতেও মিয়ানমার সরকারকে বলা হয়। এছাড়া বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা যেন নিরাপদে ও মর্যাদার সঙ্গে রাখাইনে ফেরত যেতে পারেন, রাখাইনে যেন জাতিসংঘসহ অন্যান্য সাহায্য সংস্থা কাজ করতে পারে, সে বিষয়ে প্রস্তাবে উল্লেখ করা হয়। প্রস্তাবে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তনিও গুতেরেসকে ‘মিয়ানমার বিষয়ক বিশেষ দূত’ নিয়োগ দেয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। এছাড়া রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসনসহ সব ধরনের সংকট সমাধানের জন্য বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে সহযোগিতাকে উত্সাহিত করা হয়েছে।  যারা রোহিঙ্গাদের মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে, যেসব সামরিক, সরকারি ও বেসরকারি ব্যক্তি রোহিঙ্গাদের ওপর অত্যাচার করেছে- তাদের বিরুদ্ধে পূর্ণ, স্বচ্ছ ও স্বাধীন তদন্তের আহ্বান জানানো হয়েছে এ প্রস্তাবটিতে।