বিপিএলে জুয়া : ১২ বিদেশিসহ ৭৭ জন আটক

স্টাফ রিপোর্টার: বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) শুরু হওয়ার পর থেকেই সবচেয়ে বেশি আলোচিত হচ্ছে, এ টুর্নামেন্ট ঘিরে সারাদেশে চলছে জুয়ার হিড়িক। সেটিকে আরও ভারী করে তুলেছে আসরের শুরুর দিকে জুয়াকে কেন্দ্র করে ঢাকার বাড্ডায় এক তরুণের খুনের ঘটনা। বিষয়টি নিয়ে নড়েচড়ে বসেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডও (বিসিবি)। গ্যালারিতে বসে অনলাইনে জুয়া খেলার সময় ১০ ভারতীয়সহ মোট ৭৭ জুয়াড়িকে আটক করে পুলিশে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য সচিব ইসমাইল হায়দার মল্লিক। গতকাল শুক্রবার সিলেট সিক্সার্স এবং রাজশাহী কিংসের ম্যাচের পর আনুষ্ঠানিক এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান বিপিএল এবং বিসিবির এই কর্মকর্তা।

জানা গেছে, বাড্ডায় জুয়া নিয়ে এক তরুণের খুনের ঘটনার পরই নড়েচড়ে বসে বিসিবির দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা। খোঁজ নিয়ে জানতে পারে, শুধুমাত্র মাঠের বাইরেই নয়, মাঠের মধ্যে গ্যালারিতে বসেই ক্রিকেট জুয়ায় মেতে উঠেছে একটি চক্র। তাদের ধরতেই মূলত বিসিবির অ্যান্টি করাপশন ইউনিট মাঠে নেমে পড়ে। প্রযুক্তির উৎকর্ষতার কারণে হয়তো তাদের ধরা কঠিন। তবে বিসিবি আড়ি পেতে হোক আর যেভাবেই হোক, মাঠ থেকেই মোট ৭৭ জন জুয়াড়িকে আটক করতে সক্ষম হয়।

ইসমাইল হায়দার মল্লিক জানান, ৭৭ জন আটককৃত জুয়াড়ির মধ্যে বাংলাদেশি রয়েছেন মোট ৬৫ জন। এছাড়া বিদেশি রয়েছেন ১২ জন। বিদেশিদের মধ্যে ১০ জনই ভারতীয়। তিনি বলেন, ‘আমরা ৬৫ বাংলাদেশিকে মাঠে বসে অনলাইনে জুয়া খেলার সময় আটক করেছি। যেহেতু আমরা পুলিশ কেস করতে পারি না, তাই তাদেরকে পুলিশে সোপর্দ করেছি। ৬৫ বাংলাদেশি ছাড়াও বিদেশি ছিলো ১২ জন। যার মধ্যে ভারতীয়ই ছিলো ১০ জন।’

বিপিএলের ম্যাচ চলাকালীন প্রতিটি বলের মাঝে যেটুকু সময় থাকে, তারই ফাঁকে অনলাইনে জুয়া খেলা হয় বলে জানান মল্লিক। তিনি বলেন, ‘মূলত এরা অনলাইনে জুয়া খেলে। বিভিন্ন জুয়ার সাইটে মাঠে বসেই জুয়া খেলে। প্রতিটি বল করতে যে টুকু সময় লাগে তার মাঝেই এই কাজটা করে তারা। প্রযুক্তি অনেক এগিয়ে গেছে, তাই এদের ধরা বেশ কঠিন। তবুও আমরা এদের খুঁজে বের করছি যতোটা সম্ভব। ‘জুয়াড়িদের বিরুদ্ধে বিসিবি কোনো আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে পারছে না বলেও স্বীকার করেন এই বোর্ড পরিচালক। তার মতে, ‘যেহেতু আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার কোনো সুযোগ নেই, তাই আমরা তাদেরকে পুলিশে সোপর্দ করে দেই। পরে পুলিশ তাদেরকে অল্প শাস্তি দেয় হয়তো। তবে আমরা মাঠের মধ্যে কেউ কিছু করলে তাদের আমরা আটক করতে পারি। ‘দেশে জুয়াড়িদের বিরুদ্ধে কোন প্রচলিত কঠিন আইন নেই বলেও জানান তিনি। এ প্রসঙ্গে মল্লিক বলেন, ‘সারাদেশে যে জুয়াটা হয়, তা নিয়ে আমাদের কোনো ব্যবস্থা নেয়ার সুযোগ কিন্তু নেই। আর দেশে জুয়া নিয়ে প্রচলিত কোনো কঠিন আইনও নেই। আপনাদের জানাচ্ছি, আমাদের স্টেডিয়ামের মধ্যে কিন্তু একটি দুর্নীতি বিরোধী ইউনিট আছে। স্টেডিয়ামের মধ্যে যদি কিছু হয় তাহলে তারা সাথে সাথে ব্যবস্থা নেয়। ‘জুয়া থেকে তরুণদের সচেতন করতে বিসিবি মাঠে বিভিন্নভাবে সচেতনতা সৃষ্টির চেষ্টা করছেও বলে জানান আইএইচ মল্লিক। তিনি বলেন, ‘বিষয়টা কি আসলে দেখেন, বিসিবি কিন্তু সচেতনতা তৈরি করা ছাড়া আর কিছু করতে পারে না। করার কোনো সুযোগও নেই। আপনারা দেখবেন, আমরা অলরেডি বোর্ডে এবং স্কোরবোর্ডে জুয়া বিরোধী সচেতনাতামূলক বিভিন্ন লেখা দিচ্ছি।’