নদীর বুকে জেগেছে চর হচ্ছে চাষাবাদ: প্রতিকার দাবী এলাকাবাসীর

আলমডাঙ্গার ঘোলদাড়ী ভাটুই নদীতে অবৈধ বাঁধের কারণে ভরাট হয়ে খালে পরিনত

অনিক সাইফুল: আলমডাঙ্গার ঘোলদাড়ি ভাটুই নদী এখন খালে পরিণত হয়েছে। নদীর বুকে প্রতি বছর অবৈধ বাধেঁর কারণে ভরাট হচ্ছে নদী। নদীর গভীরে পলি জমে বর্ষাতেও কোমর পানি থাকে। সেই সুযোগে অনেকেই নদীর জমি দখল করে চাষাবাদ শুরু করেছে। কেউবা গড়ে তুলেছে বসতবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। নদীর ওপরে প্রতিবছর একটি চক্র বাশের বাঁশ দিয়ে মাছ শিকার করে। তাদের কারণে নদীটি বিলিন হবার পথে। এলাকাবাসীর অভিযোগ সরকারিভাবে ঐতিহ্যবাহি নদীটি খনন না করার কারণ ও একটি চক্রের বাধঁ দিয়ে মাছ শিকার করার কারণে নদীটি এখন মৃত খালে পরিণত হয়েছে।
এক সময় আলমডাঙ্গা উপজেলার ঘোলদাড়ী বাজারের কোল ঘেসে বয়ে যাওয়া ভাটুই নদীটি যৌবন ছিলো। নদীটি এলাকার বেলগাছি, ঘোলদাড়ী, পাইকপাড়া, হয়ে তিওরবিলা, রামদিয়া হয়ে দেশের বিস্তীর্ণ। একসময় নদীর বুক দিয়ে ভেসে যেতে বড় বড় নৌকা। নদীটির রয়েছে কয়েকটি বিলুপ্ত শাখা প্রশাখা। বিট্রিশ আমলেও এই নদী পথে সাহেবদের চালাচল ছিলো চোখে পড়ার মতো। নানান রঙের পাল তোলা নৌকা সারি বেধেঁ যাওয়ার দৃশ্যটা এখনও চোখের সামনে ভাসে প্রবীণ ব্যক্তিদের। এক সময় সাহেবরা ঘোলদাড়ী নীলকুঠিরে আসতেন এই নদীর পথ ধরেই। নীলকুঠির হাটে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ব্যবসায়ীরা সওদা করতে আসতো এই নদী পথেই। জেলেদের সংসার চলতো নদীর মাছ বিক্রি করে। নতুন প্রজন্ম এই নদীকে খাল হিসাবেই চেনে। এখন আর মাছ শিকার করে না জেলেরা। পেশা পাল্টেছে সেই কবে। এলাকার কৃষকের কৃষি জমি থেকে বর্ষার পানি নেমে যেতো দ্রুত। এদেশ থেকে সাহেবরা চলে যাবার পরেই নদীর ওপর শুরু হয়েছে অত্যাচার। নদীর ওপর প্রতি বছর একটি চক্র বাঁেশর বেড়া দিয়ে পানি আটকে শিকার করতে থাকে মাছ। জমতে থাকে নদীর গভীরে পলি মাটি। প্রতি বছর নদীর বুকে বাধঁ দেবার কারণে নদী ভরাট হয়ে গেছে। এখন আর ভাটুই নদীকে নদী বলে মনে হয় না।
সরেজমিনে গেলে ঘোলদাড়ী বাজারের অদুরে দেখা যায় ভাটুই নদীর উপর দুইটি বাশেঁর বেড়া দিয়ে বাধঁ দেওয়া। স্থানীয়রা জানাই, ঘোলদাড়ী বাজারের একরামুল, ওহিদুল, আবুল, সুয়াদ, আকরাম, বসির উদ্দিন ও ইকলাচ এই বাঁেধর মালিক। তারা প্রতি বছর এই নদীর উপর বাশেঁর বেড়ার বাঁধ দিয়ে মাছ শিকার করে। বাধঁ দেয়ার কারণে এলাকার কৃষকদের কৃষি জমিতে থাকা বর্ষার পানি নামতে পারছে না। চাষ করতে বিলম্ব হচ্ছে। এলাকাবাসী কয়েকবার তাদের বাধঁ ভেঙ্গে দিলেও আবার নতুন করে বাধঁ দিয়ে শুরু করেছে মাছ শিকার। ফলে কৃষি জমিতে জমে থাকা বর্ষার পানি নামতে পারছে না। চাষ করতে বিলম্ব হচ্ছে পানি জমে থাকা জমিগুলোতে। বর্তমানে নদীটির জমি কেউ কেউ সরকারিভাবে লিজ নিয়ে স্থায়ী চাষাবাদ শুরু করেছে। কেউবা জমি দখল করে গড়ে তুলেছে বসতবাড়ি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এলাকাবাসী সরকারিভাবে নদীটির খনন ও দখল মুক্ত করতে জেলা প্রসাশকের সু-দৃষ্টি কামনা করেছেন।