পায়ে ধরি স্যার দয়া করে পরীক্ষা নিন

ইবি কম্পিউটার সায়েন্স অ্যাণ্ড ইঞ্জিনিয়ারিঙের শিক্ষার্থীদের আকুতি

 

ইবি প্রতিনিধি: পরীক্ষা নেয়ার আকুতি জানিয়ে ভিসি বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা। একইসঙ্গে স্মারকলিপিতে দ্রুত পরীক্ষার দাবিতে ভিসির সরাসরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তারা। গতকাল রোববার বেলা দেড়টার দিকে বিভাগের ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. রাশিদ আসকারী বরাবর এ স্মারকলিপি দেন। স্মারকলিপিতে পরীক্ষা নেয়ার আকুতি জানিয়ে শিক্ষার্থীরা লেখেন, ‘স্যার আজ ৭ বছর হলো আমার সিএসইতে ভর্তি হওয়ার। ভার্সিটির সবার মাস্টার্স পরীক্ষা শুরু অথবা শেষ হওয়ার পথে। কিন্তু আমাদের নাকি আরও অনেক দেরি হবে। স্যারদের কাছে গেলে বলে আগের ইয়ারের রেজাল্ট না হলে হবে না, নিয়ম নেই। আমাদের জীবন থেকে যে ২টা বছর অতিরিক্ত নিয়ে নিলেন সম্মানিত স্যাররা সেটা কি নিয়মের মধ্যে ছিলো? রেজাল্ট না হলে পরের ইয়ারের পরীক্ষা নেয়ার নিয়ম নেই। থাকলে কেনো ফাস্ট ইয়ার, সেকেন্ড ইয়ারের পরীক্ষা নিচ্ছে না? ওদের আগের ইয়ারের রেজাল্ট তো আগেই হয়ে গেছে। আসলে স্যার, কেনো এ অবস্থা সেটা আপনিও জানেন। আমাদের ৭টা বছর শেষ। পরিবার আর পারছে না, মরে যেতে ইচ্ছে করে আমাদের। বারবার আন্দোলন করে খবরে এসে বিভাগ ও ভার্সিটিকে ছোট করতে আমাদের লজ্জা লাগে। স্যার আমাদের বাঁচান, আপনি আমাদের পিতা, আপনি দ্রুত আমাদের পরীক্ষা নেয়ার ব্যবস্থা না করলে আমাদের বেঁচে থাকাই দায়, মরে গেলে বেঁচে যেতাম আমরা। বিভাগীয় সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য বিভাগগুলোতে ৫-৬টি করে ব্যাচ থাকলেও কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগে এখনও ৮টি ব্যাচ বর্তমান রয়েছে।

সূত্র জানায়, ২০০৯-১০ শিক্ষাবর্ষের মাস্টার্স পরীক্ষা দীর্ঘ নয় মাস পূর্বে শুরু হলেও এখন পর্যন্ত শেষ হয়নি। তবে বিভাগীয় শিক্ষকদের অন্তঃকোন্দলের কারণেই সেশনজট সমস্যা দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছেন ওই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক নজরুল ইসলাম।

জানা যায়, বিভাগের সেশনজট কমাতে এবং যথাসময়ে পরীক্ষার দাবিতে বিভিন্ন সময় আন্দোলন করে আসছে ওই বিভাগের শিক্ষার্থীরা। বিভাগের শিক্ষকরা বরাবরই সেশনজটমুক্ত এবং যথা সময়ে পরীক্ষা নেয়ার আশ্বাস দিলেও প্রকৃতপক্ষে কোনো কাজ না হওয়ায় চলমান এ বন্দিদশা থেকে মুক্তি পেতে আবারও আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীরা। রোববার দুপুর ১২টার দিকে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে। পরে দুপুর দেড়টার দিকে শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধিদল ভিসির সঙ্গে দেখা করে স্মারকলিপি দেন। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি বিষয়টি সমাধানের আশ্বাস দিলে তারা আন্দোলন প্রত্যাহার করে। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. রাশিদ আসকারী বলেন,‘বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। বিষয়টি নিয়ে অতি দ্রুত বিভাগের শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে সমাধান করার চেষ্টা করবো।’