এ প্রকল্পের মাধ্যমে এলাকার বেকার যুবকরা সাবলম্বী হবে

দামুড়হুদায় জৈব সার কারখানা পরিদর্শনকালে জেলা প্রশাসক জিয়াউদ্দীন আহমেদ

বখতিয়ার হোসেন বকুল: দামুড়হুদায় উপজেলা যুব উন্নয়ন অধিদফতর কর্তৃক নবনির্মিত জৈব সার কারখানাটি পরিদর্শন করেছেন চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক জিয়াউদ্দীন আহমেদ। গত মঙ্গলবার দুপুরে তিনি ওই কারখানাটি আকস্মিক পরিদর্শনে আসেন। নবনির্মিত কারখানার সার্বিক খোঁজ খবর নিয়ে সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
এ সময় তিনি বলেন, জৈব সার কারখানার মাধ্যমে জেলার কয়েক হাজার মেট্রিক টন রাসায়নিক সার সাশ্রয় হবে। এছাড়া চাষিরা কম খরচে বিষমুক্ত ফসল উৎপাদনও করতে পারবে। ফলে একদিকে যেমন এলাকার মানুষ বিষমুক্ত খাদ্য পাবে অন্যদিকে ভর্তুকি বাবদ সরকারের কয়েক কোটি টাকাও বেচে যাবে। তিনি এ জৈব সার বাজারজাত করতে সংশ্লিষ্টদের গ্রামে গ্রামে গিয়ে চাষিদের উদ্বুদ্ধ করতে পরামর্শ দেন।
প্রকল্পের উদ্ভাবক দামুড়হুদা উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা জানান, বায়োগ্যাসের উচ্ছৃষ্ট অংশ, পোল্ট্রি খামারের বিস্টা এবং ডিমের খোসার সমন্বয়ে অত্যাধুনিক মেশিনে তৈরি এটি পরিবেশ বান্ধব উত্তম জৈব সার। বায়োগ্যাসের উচ্ছৃষ্ট অংশ যত্রতত্র পড়ে থেকে পরিবেশ দূষণ করে। আমরা ওই সমস্ত উচ্ছৃষ্ট অংশ এবং পোল্ট্রি খামারের বিস্টা এলাকার খামারিদের কাছ থেকে স্বল্পমূল্যে কিনে নিচ্ছি। এ প্রকল্পটি পূর্ণাঙ্গভাবে চালু হওয়ার পর এলাকা পরিবেশ দূষণের হাত থেকেও রক্ষা করা যাবে। এটি জমিতে প্রয়োগ করলে জমির ঊর্বর শক্তি বহুলাংশে বৃদ্ধি পাবে। এ এলাকায় যতো সবজি ফসল উৎপাদিত হয়ে থাকে তার অধিকাংশই বিষমুক্ত নয়। এই স্বাস্থ্য সম্মত জৈব সারের মাধ্যমে এলাকার মানুষকে বিষমুক্ত সবজি খাওয়ানোও এ প্রকল্পের একটি উদ্দেশ্য। এছাড়া চাষিরা রাসায়নিক সারের চেয়ে অনেক কম খরচে ফসল উৎপাদন করতে পারবে। ফলনও বেশি হবে। তিনি আরও জানান, ইন্টারনেটের মাধ্যমে পাওয়া তথ্য এবং রাজশাহীর অবসরপ্রাপ্ত প্রকৌশলী আব্দুস সালামের নিজস্ব তত্ত্বাবধানে গড়ে তোলা জৈব সার কারখানাটি পরিদর্শনের পর প্রকল্পটি চালু করার উদ্যোগ গ্রহণ করি। প্রায় ৮ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। এরমধ্যে উপজেলা পরিষদ থেকে দেড় লাখ টাকা দেয়া হয়েছে। প্রাথমিক পর্যায়ে পরীক্ষামূলকভাবে প্রতিদিন গড়ে ১শ মণ সার তৈরির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। পরবর্তীতে এর চাহিদা বৃদ্ধি পেলে উৎপাদনের পরিমাণও বাড়ানো হবে। ৪০ কেজি করে প্যাকেট করা হবে। প্রতি কেজি সারের খুচরা মূল্য সাড়ে ৭ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে পাইকারদের জন্য কিছুটা কম হবে। কেবলমাত্র এলাকার বেকার যুবকদেরই ডিলারশিপ দেয়া হবে। এর ফলে এলাকার কয়েকশ বেকার যুবক সাবলম্বী হতে পারবে। অচিরেই সার উৎপাদনের আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি আরও জানান, দামুড়হুদা উপজেলা চেয়ারম্যান মাওলানা আজিজুর রহমান ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার রফিকুল হাসানের সার্বিক সহযোগিতায় মাস দুয়েক আগে দামুড়হুদার নতুন হাউলী মাথাভাঙ্গা নদীর তীর ঘেষে কারখানাটি গড়ে তেলা হচ্ছে। প্রকল্পটির নাম দেয়া হয়েছে ‘মাটির জান-জৈব সার’।