স্টাফ রিপোর্টার: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মৃত্যুকে হাতের মুঠোয় নিয়ে জীবন বাজি রেখে মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি। কিছু নিতে নয়, আমরা দেশকে দিতে এসেছি। দেশের জন্য আমার বাবা-মা, ভাইসহ সবাই জীবন দিয়ে গেছেন। স্বাধীন দেশ হিসেবে বাংলাদেশ যেন উন্নত-সমৃদ্ধ হয়, আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ঘটে, বিশ্ব দরবারে যেন মর্যাদার সঙ্গে চলে- এটাই আমার একমাত্র লক্ষ্য। গতকাল বুধবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে জাতীয় পার্টির (এ) সংসদ সদস্য ফখরুল ইমামের প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা আরো বলেন, নিজের জীবনে অর্থ সম্পদ টাকা পয়সা কি আছে না আছে, এ নিয়ে আমি কখনো চিন্তাও করি না। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে সংসদ সদস্য ফখরুল ইমাম সম্প্রতি পিপলস অ্যান্ড পলিটিক্স নামে একটি আন্তর্জাতিক সংস্থার সাম্প্রতিক গবেষণা রিপোর্ট তুলে ধরে বলেন, রিপোর্টে সৎ সরকার প্রধান হিসেবে আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বের মধ্যে তৃতীয় স্থান অধিকার করেছেন। আর কর্মঠ সরকার প্রধান হিসেবে প্রধানমন্ত্রী চতুর্থ স্থান অর্জন করেছেন। এ ব্যাপারে তিনি প্রধানমন্ত্রীর প্রতিক্রিয়া জানতে চান।
জবাবে সংসদ নেতা শেখ হাসিনা আরো বলেন, অনুভূতি এটা আগেও বলেছি এখনো বলবো- কি পেলাম, কি পেলাম না সেই হিসাব মেলাতে আমি আসিনি। কে আমাকে রিকগনাইজড (স্বীকৃতি) করলো কি করলো না সেই হিসাব আমার নেই। আমার একটাই হিসাব এই বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে কতটুক কাজ করতে পারলাম, সেটাই আমার কাছে বড়। তিনি বলেন, ধন-সম্পদ চিরদিন থাকে না। মানুষকে মরতে হয়। সব রেখে চলে যেতে হয়। তবু মানুষ অবুঝ হয়ে সম্পদের লোভে অস্থির হয়ে পড়ে। এটা মানুষের একটা প্রবৃত্তি, এই প্রবৃত্তিটা যিনি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন, তিনি দেশ ও জনগণকে কিছু দিতে পারেন। এতো রাস্তাঘাট, এত বড় বড় প্রকল্প আমরা বাস্তবায়ন করছি, দুর্নীতি হলে এত অল্প সময়ের মধ্যে সেটা আমরা করতে পারতাম না।
শেখ হাসিনা বলেন, এটুকু বলতে পারি- মাথায় (সরকার প্রধান) পচন নেই, যদি শরীরের কোথাও একটু (সরকারের মন্ত্রী) কিছু ঘা থাকে তবে তা আমরা সারিয়ে ফেলতে পারবো। সরকারে ওই রকম দুর্নীতি হলে দেশের প্রবৃদ্ধি ৭ ভাগের উপরে হতো না। মাথাপিছু আয় ১ হাজার ৬১০ ডলারে উন্নীত হতো না। আমরা দুর্নীতির অভিযোগকে চ্যালেঞ্জ করেই নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করছি। সরকারের বিরুদ্ধে কিছু দুর্নীতির অভিযোগ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে দেশে মিলিটারি ডিক্টেটরশিপ (সামরিক স্বৈরতন্ত্র) চলে, যে দেশে গণতন্ত্রের অভাব থাকে, যে দেশে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার অভাব থাকে- সেই দেশে দুর্নীতিটা শিকড়ে গেড়ে যায়। সেই শিকড় উপড়ে ফেলা কঠিন হয়ে যায়। পঁচাত্তরের পর থেকে ২১টি বছর এই অবস্থাই দেশে বিরাজমান ছিলো।
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবজনিত ক্ষতি মোকাবেলায় কারো মুখাপেক্ষী হয়ে থাকিনি।