গাংনীতে দরিদ্রদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে কম্বল দিলেন ইউএনও ॥ বৃদ্ধাকে দিলেন মাথা গোজার ঠাঁই

গাংনী প্রতিনিধি: দরিদ্র মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে কম্বল দিলেন মেহেরপুর গাংনী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইইএনও) বিষ্ণুপদ পাল। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় হিন্দা ও পলাশীপাড়া গ্রামে কম্বল বিতরণ করা হয়। একই সময়ে রাস্তার পাশে শুয়ে থাকা এক বৃদ্ধাকে ঘর তৈরির প্রস্তুতি দিলেন তিনি। হিন্দা গ্রামের প্রধান সড়কের ধারে রয়েছে প্রায় ৩০টি বাড়ি। যারা অতি দরিদ্র ও ভূমিহীন। সন্ধ্যায় ইউএনও হিন্দা গ্রামের এসব দরিদ্র মানুষের বাড়িতে গিয়ে কম্বল বিতরণ করেন। কম্বল পেয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন ওই পরিবারের সদস্যরা। হিন্দা গ্রামের পরে একইভাবে পলাশীপাড়া গ্রামে দরিদ্র মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণ করা হয়। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন গাংনী সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেলোয়ার হোসেন, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা দিলিপ কুমার সেন ও গাংনী প্রেসক্লাব সভাপতি রমজান আলী প্রমুখ। এদিকে পলাশীপাড়া গ্রামে কম্বল বিতরণের সময় ইউএনও’র নজড়ে পড়ে এক বৃদ্ধা। প্রায় আশি বছর বয়সী রাহেলা খাতুন ধুপড়ি-কাঁথা গায়ে দিয়ে শুয়ে ছিলেন একটি বন্ধ দোকানের সামনে। বৃদ্ধাকে দু’টি কম্বল জড়িয়ে দিয়ে ইউএনও জানতে চাইলেন তার পরিচয় ও রাস্তার পাশে পড়ে থাকার গল্প।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মটমুড়া ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামের মৃত কাতেব আলীর ছেলে রবগুল হোসেন পলাশীপাড়া গ্রামে শ্বশুরালয়ে বসবাস করেন। বৃদ্ধা মা গ্রাম থেকে তার কাছে গিয়ে থাকতে চাইলেও সম্ভব হয়নি। স্ত্রী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সাথে বনিবনা না হওয়ায় মাকে সে আশ্রয় দিতে পারেনি। নিরুপায় বৃদ্ধা একই গ্রামে তার মেয়ে রুইতন নেছার কাছে গিয়ে ওঠেন। কিন্তু তারও ঘরবাড়ি না থাকায় বৃদ্ধা জায়গা হয় রাস্তার পাশে। এদিকে বৃদ্ধার এ করুণ অবস্থা থেকে মুক্তি দিতে সহায়তার হাত বাড়িয়েছেন ইউএনও বিষ্ণুপদ পাল। তিনি তাৎক্ষণিক পাঁচশ’ টাকা দেন। দুয়েকদিনের মধ্যে একটি টিনের ঘর নির্মাণের ঘোষণা দেন। স্থানীয় ইউপি সদস্যকে বৃদ্ধার ছেলে রবগুলকে সঙ্গে নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার ইউএনও কার্যালয়ে হাজির হতে বলা হয়েছে। টিন ও নগদ অর্থ তাদের হাতে তুলে দিবেন ইউএনও। ওই ছেলে যে বাড়িতে বসবাস করেন সেবাড়িতেই নির্মাণ করা হবে তার বয়োবৃদ্ধ মায়ের ঘর। ইউএনও’র এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন এলাকার মানুষ।