প্রতিবন্ধীদের সাথে নিয়ে দেশের উন্নয়নে এগিয়ে আসার আহ্বান

চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুরসহ সারাদেশে আন্তর্জাতিক ও জাতীয় প্রতিবন্ধী দিবস পালিত

স্টাফ রিপোর্টার: ‘সবার জন্য টেকসই ও সমৃদ্ধ সমাজ’ প্রতিপাদ্য বিষয়কে সামনে রেখে ২৬তম আন্তর্জাতিক ও ১৯তম জাতীয় প্রতিবন্ধী দিবস পালিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে গতকাল রোববার চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুরসহ সারাদেশে র‌্যালি ও আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আলোচনাসভায় বক্তারা বলেন, প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠী সমাজের অবিচ্ছেদ্য অংশ, তারা আমাদের আপনজন। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে উন্নয়নের প্রতিটি ধাপে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অংশগ্রহণমূলক প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে হবে। সরকারের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সংস্থা, বেসরকারি ও স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানসহ সমাজের বিত্তবান ব্যক্তিবর্গকে প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে নিজ নিজ অবস্থান থেকে প্রয়াস চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানানো হয়। বক্তারা বলেন, বিশ্বকে সকলের জন্য বাসযোগ্য করতে টেকসই উন্নয়নের বিকল্প নেই। জাতিসংঘ টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে বর্তমান সরকার প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার সুরক্ষা আইন ২০১৩ প্রণয়ন করেছে। তাদের জন্য সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির পাশাপাশি সরকারি চাকরিতে বিশেষ কোটা সংরক্ষণ করা হয়েছে। বর্তমান সরকার প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে অত্যন্ত আন্তরিক। প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে সরকার প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্র, অটিজম রিসোর্স সেন্টার, অটিস্টিক ও বুদ্ধি প্রতিবন্ধী স্কুল, প্রতিবন্ধী ক্রীড়া কমপ্লেক্স নির্মাণসহ প্রতিবন্ধী ও অটিজম বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
চুয়াডাঙ্গায় গতকাল রোববার সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বর থেকে একটি বর্ণাঢ্য র‌্যালি বের করা হয়। র‌্যালিটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে একই স্থানে এসে শেষ হয়। পরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা প্রশাসন, জেলা সমাজসেবা কার্যালয়, প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্র এবং কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন আলোচনাসভার আয়োজন করে। এতে সভাপতিত্ব করেন জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক এসএম রফিকুল ইসলাম। প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক জিয়াউদ্দীন আহমেদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্টেট খোন্দকার ফরহাদ আহমদ, সিভিল সার্জন ডা. খাইরুল আলম ও সহকারী পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আহসান হাবিব। সদর উপজেলা সমাজসেবা অফিসার আব্দুল্লাহ আল সামীর সঞ্চালনায় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন দামুড়হুদা সমাজসেবা অফিসার সানোয়ার হোসেন, জেলা ব্র্যাক প্রতিনিধি জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ। সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেলা প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্রের প্রতিবন্ধী বিষয়ক কর্মকর্তা খাইরুল ইসলাম। বক্তব্য রাখেন ব্র্যাকের পিডব্লিউডি ইউনিটের সেক্টর স্পেশালিস্ট দিলিপ কুমার ম-ল, প্রত্যাশা সামাজিক উন্নয়ন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক বিল্লাল হোসেন ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আলী হোসেন। সভায় প্রতিবন্ধীদের সাথে নিয়ে দেশের উন্নয়নে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান বক্তারা।
ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি জানিয়েছেন, দামুড়হুদার কার্পাসডাঙ্গায় বিশ্ব প্রতিবন্ধী দিবস পালিত হয়েছে। গতকাল রোববার সকাল ১০টায় প্রবীণ প্রতিবন্ধী ও মাদকাসক্ত ব্যক্তিদের উন্নয়ন প্রকল্প-কারিতাস খুলনা অঞ্চলের আয়োজনে কার্পাসডাঙ্গা বাজারে র‌্যালি শেষে ইউপি হলরুমে আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়। সভাপতিত্ব করেন দামুড়হুদা শাখার ফিল্ড অফিসার মাহাবুব সরকার। প্রধান অতিথি ছিলেন চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান ভুট্ট। উপস্থিত ছিলেন কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নজির আহম্মেদ, কার্পাসডাঙ্গা শাখা ব্যবস্থাপক জিনারুল ইসলাম, ইউপি সদস্য আব্দুর রাজ্জাক, নুর ইসলাম, আব্দুল হাকিম, মনি বিশ্বাস প্রমুখ।
মেহেরপুর অফিস জানিয়েছেন, মেহেরপুর জেলা প্রশাসন ও সমাজ সেবা অধিদফতরের আয়োজনে দিবসটি উপলক্ষে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় প্রাঙ্গণ থেকে র‌্যালি বের করা হয়। র‌্যালিটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে স্থানীয় শিল্পকলা একাডেমি চত্বরে এসে শেষ হয়। র‌্যালি শেষে জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে আলোচনাসভার আয়োজন করা হয়। সভাপতিত্ব করেন জেলা সমাজসেবা অধিদফতরের উপ-পরিচালক দেলোয়ার হোসেন। প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক পরিমল সিংহ। বিশেষ অতিথি ছিলেন মেহেরপুর প্রেসকøাবের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল আলম, প্রতিবন্ধী বিষয়ক কর্মকর্তা তুলশি কুমার পাল, ব্রাকের জেলা প্রতিনিধি মোশারফ হোসেন, পলাশীপাড়া সমাজ কল্যাণ সমিতির প্রতিনিধি সাইফুল ইসলাম ও প্রতিবন্ধী শিক্ষক আকলিমা খাতুন। গাংনী উপজেলা সমাজসেবা অফিসার তৌফিকুর রহমানের পরিচালনায় স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন সমাজসেবা উপ-পরিচালক দেলোয়ার হোসেন। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য প্রদান করেন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী কম্পিউটার প্রশিক্ষক ওমর ফারুক। র‌্যালি ও আলোচনা সভায় এনজিও কর্মীসহ বিভিন্ন ধরনের প্রতিবন্ধী ও বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন।