মেহেরপুরে দুর্বৃত্তদের নৃসংশতা : শিশুবাগানপাড়ার রাজ্জাককে কুপিয়ে ও জবাই করে খুন

মেহেরপুর অফিস: মেহেরপুরের শিশুবাগানপাড়ার আব্দুর রাজ্জাককে কুপিয়ে ও জবাই করে খুন করেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল রোববার সন্ধ্যায় পশুহাটপাড়ার নিম্নমাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের অদূরে তাকে কুপিয়ে ও জবাই করে ক্ষতবিক্ষত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে সটকে পড়ে দুর্বৃত্তরা। আব্দুর রাজ্জাক (৪২) মেহেরপুর শহরের শিশুবাগানপাড়ার মুক্তিযোদ্ধা মৃত ওমর আলীর ছেলে। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালমর্গে পাঠিয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশসূত্র জানায়, নিহত রাজ্জাক পাসপোর্ট অফিস ও ডিবি পুলিশের দালাল হিসেবে কাজ করতো। গতকাল রোববার সন্ধ্যার পর কয়েকজন যুবক আব্দুর রাজ্জাককে বাড়ি থেকে ডেকে পার্শ¦বর্তী একটি বাগানে নিয়ে যায়। সেখানে কয়েকজন মাদকাসক্ত যুবক তাকে নিয়ে আড্ডায় মিলিত হয়। এই সময় নিজেদের মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে ৪জন যুবক ধারালো অস্ত্র দিয়ে রাজ্জাককে কুপিয়ে ও জবাই দিয়ে খুন করে চলে যায়।
নিহতের স্ত্রী সীমা খাতুন জানান, গত শনিবার সাব্বির ও মিলন নামের দুইজনকে গাঁজাসহ আটক করে ডিবি পুলিশ। গতকাল রোববার জামিনে মুক্তি পেলে তাদের কারাগার থেকে নিয়ে আনতে যায় আব্দুর রজ্জাক। সন্ধ্যার সময় সাব্বিরকে নিয়ে মাঠের রাস্তা ধরে বাড়ি ফিরছিলো তারা। বাড়ির পাশের মাঠে পৌঁছুলে ৪জন তাদের গতিরোধ করে। এ সময় সাব্বির পালিয়ে গিয়ে মুঠোফোনে তাকে (নিহতের স্ত্রীকে) বিষয়টি জানান। পরে ঘটনাস্থলে পৌঁছুলে রাজ্জাকের জবাই করা লাশ দেখতে পান তার স্ত্রী। এ সময় রাজ্জাকের শরীরে কোপানোর দাগ দেখা যায় বলে জানা গেছে। আব্দুর রাজ্জাক পাসপোর্ট অফিসের দালালি ও পুলিশের সোর্স হিসেবে কাজ করতো বলে এলাকাবাসী জানায়। তবে ডিবি এ বিষয়টি অস্বীকার করেছে।
নিহতের ছোট ভাই ওয়াশিম জানান, তার ভাই আব্দুর রাজ্জাক জীবদ্দশায় এলাকার মাদকসেবী ও মাদক ব্যবসায়ীদের নাম-ধাম পুলিশকে অবহিত করতো। যে কারণে মাদকসেবীরা পরিকল্পিতভাবে তার ভাইকে খুন করেছে। আমরা এ খুনের বিচার চাই। মেহেরপুর সদর থানার এসআই রফিকুল ইসলাম নিশ্চিত করে বলেছেন, নিহত আব্দুর রাজ্জাক পুলিশের সোর্স হিসেবে কাজ করতো।
মেহেরপুর শহরের শিশুবাগানপাড়ার মুক্তিযোদ্ধা মৃত ওমর আলীর ২ ছেলে ও ২ মেয়ের মধ্যে নিহত আব্দুর রাজ্জাক ২য়। সংসার জীবনে এক ছেলে ও এক মেয়ের জনক সে। একমাত্র ছেলে রাজীব শারীরিক প্রতিবন্ধী নিয়েও মিস্ত্রির কাজ শিখছে। একমাত্র মেয়ে স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী। তার মৃত্যুতে এলাকাবাসীর মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
মেহেরপুর সদর থানার ওসি রবিউল ইসলাম জানান, পূর্বশত্রুতার জের ধরে এই হত্যাকা- ঘটে থাকতে পারে। নিহতের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন আছে। লাশ ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালমর্গে পাঠিয়েছে। হত্যাকা-ের সাথে জড়িতদের আটক করতে পুলিশ অভিযান শুরু করেছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ঘটনার সাথে জড়িত কাউকে পুলিশ গ্রেফতার করতে পারেনি।