সোনা চোরাচালানের ট্রানজিট

দেশে সোনার বাজার চোরাচালান ও কালোবাজার নির্ভর। এ খাতে কোনো স্বচ্ছতা নেই, সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। সোনা ব্যবসায়ীদের কোনো জবাবদিহি নেই। সোনার বাজারকে নীতিমালার বাইরে রাখতে প্রভাবশালী রাজনৈতিক, চোরাচালান প্রতিরোধ কর্মকর্তা ও বড় বড় সোনা ব্যবসায়ীদের একাংশের যোগসাজশ রয়েছে। টিআইবি’র এক গবেষণা প্রতিবেদন অনুযায়ী গত চার বছরে চোরাচালানের মাধ্যমে আমরা প্রায় এক হাজার ৬৭৫ কেজি সোনা আটক করা হয়েছে। তবে তা দেশে আসা সোনার চালানের খুবই সামান্য পরিমাণ। চোরাচালানের মাধ্যমে সোনা কেবল দেশেই আসছে না, এসব সোনার বেশির ভাগই আবার বেনাপোল, সোনা মসজিদ ও বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে পাচার হয়ে যাচ্ছে অর্থাৎ বাংলাদেশ চোরাচালানের বড় রুট হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। দেখা গেছে, বৈধভাবে সোনা আনা হলে প্রতি বছর খরচ হয় কমপক্ষে ৪৭ হাজার টাকা।

অন্যদিকে অবৈধপথে আসা একই পরিমাণ সোনার জন্য খরচ হয় মাত্র ২০ হাজার টাকা। সোনা আমদানির সুনির্দিষ্ট কোনো নীতিমালা না থাকার কারণেই চোরাচালান বন্ধ হচ্ছে না, এতে কোনো সন্দেহ নেই। বলা হয় দেশের সোনার বাজারে সরকারি কোনো নিয়ন্ত্রক সংস্থার তত্ত্বাবধান, পর্যবেক্ষণ তথা জবাবদিহির ব্যবস্থা নেই। সোনা ও সোনার অলঙ্কারের মূল্য মূলত সোনা ব্যবসায়ীদের দ্বারা নির্ধারিত ও নিয়ন্ত্রিত হয়।

নিম্নমানের সোনা উচ্চমানে কিনতে বাধ্য করা হয় গ্রাহককে। আটক সোনারদাম পুষিয়ে নিতে দেশীয় বাজারে সোনার অলঙ্কারের দাম ওঠানামা বা হ্রাস বৃদ্ধি করা হয়। এ খাতকে আইনি কাঠামোর মধ্যে আনা, বাজারে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা। বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে সোনা ও সোনার অলঙ্কার মজুদ, মান যাচাই ও নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করা, ভোক্তা স্বার্থ সংরক্ষণ, ব্যাগেজ রুলের যথাযথ প্রয়োগ সংক্রান্ত নীতিমালা জরুরি। বিমান বন্দরে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড দমনে সরকার আন্তরিকতার পরিচয় দেবে।