ফেনসিডিলের অর্ধেক বোতল প্রস্রাবে ভরে খোরদের কাছে বিক্রির চমকপ্রদ তথ্য প্রকাশ করল আলমডাঙ্গার মাদকব্যবসায়ী লিটন

আলমডাঙ্গা ব্যুরো: বোতলের অর্ধেক ফেনসিডিলের সাথে প্রস্রাব মিশিয়ে ফেনসিডিল খোরদের কাছে বিক্রি করে অর্ধেক মুনাফা লুটে নেয়ার চমকপ্রদ তথ্য প্রকাশ করেছে আলমডাঙ্গার মাদকব্যবসায়ী লিটন। গতকাল বুধবার তাকে পুলিশ আটক করে ১শ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট ও ১৬ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করেছে। সে সময় আলমডাঙ্গার রেলস্টেশনের সামনের মাদকপল্লির লিটনের ভাড়া ঘর থেকে থরে থরে সাজানো প্রস্রাবভর্তি বোতলও উদ্ধার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদকালে সে পুলিশ ও সাংবাদিকদের নিকট ফেনসিডিলের বোতলে ভরে প্রস্রাব বিক্রির ওই চমকপ্রদ তথ্য প্রকাশ করে। এ চমকপ্রদ তথ্য জানাজানির পর ফেনসিডিল খোরদের প্রতিক্রিয়া জানতে না পারলেও দীর্ঘদিন ধরে তারা কী খেয়েছে তা নিয়ে রীতিমত কানাঘুষা চলছে আড়ালে আবডালে।
জানা গেছে, আলমডাঙ্গা থানা পুলিশের লাগাতার মাদকবিরোধী অভিযানে আলমডাঙ্গার মাদক সম্রাট-সম্রাজ্ঞীরা এখন এলাকা ছেড়েছে। নিজেরা এলাকা ছাড়া হলেও কৌশলে অপরিচিত ও অল্প বয়স্কদের দিয়ে মাদকব্যবসা চালানোর অপচেষ্টা করে। এ বিষয়টি স্থানীয় পত্রিকায় রিপোর্ট হলে প্রশাসন অবহিত হয়। পুলিশের অব্যাহত অভিযানে এলাকা ছাড়া লিটন নামের স্টেশনপাড়ার এক অল্প বয়সী মাদকব্যবসায়ী সম্প্রতি আলমডাঙ্গায় ফিরে খুব সতর্কতার সাথে পুনরায় মাদকব্যবসা চালাচ্ছিলো। গোপন সূত্রে বিষয়টি থানা পুলিশ জেনে যায়। গতকাল বুধবার বিকেলে আলমডাঙ্গা থানা অফিসার ইনচার্জ আবু জিহাদ খাঁনের নির্দেশে এসআই সাইফুল ও এএসআই মোস্তফা আলমডাঙ্গা স্টেশনপাড়ায় কৌশলের আশ্রয় নিয়ে মাদকবিরোধী অভিযান চালায়। অভিযানকালে স্টেশনের সামনে থেকে কুতুব উদ্দীনের ছেলে লিটনকে (২০) আটক করে। সে সময় পুলিশ তার পকেট থেকে ২০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করে। পরে লিটনের স্বীকারক্তিতে তার ঘরের মেঝে খুঁড়ে আরও ৮০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট ও ১৬ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করে। আরও উদ্ধার করা হয় ইয়াবা সেবনের সরঞ্জাম। একই সাথে পুলিশ তার ঘর থেকে থরে থরে সাজানো প্রস্রাবভর্তি বোতলও উদ্ধার করে।
লিটন জানায়, মাদকদ্রব্যবিরোধী পুলিশের অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে মাদকব্যবসায়ীরা আলমডাঙ্গা ছাড়া। ফলে মাদকদ্রব্যের খুব সংকট। খোরদের মাথা খারাপ অবস্থা। এ সুযোগ কাজে লাগাত সে। প্রস্রাবমিশ্রিত ফেনসিডিল খেয়েও কেউ বুঝতে পারত না। তবে সে এ বিশেষ ধরনের ফেনসিডিল বেশি পরিচিতদের দিতো না। তবে রাতের অন্ধকারে নেশা উঠে যাওয়া ফেন্সিখোরদের মাঝে প্রায় গছিয়ে দিতো এ প্রস্রাবমিশ্রিত ফেনসিডিল। ফেন্সিখোররা প্রস্রাব মেশানো বোতল হাতে নিয়েই দু-তিনটি ঝাঁকি দিয়ে দ্রুত গলায় ঢেলে দ্রুত চলে যেতো।
লিটন আরে জানায়, পুলিশের সাঁড়াসি অভিযানে ফেনসিডিলের আমদানি নেই বললেই চলে। কিন্তু ফেন্সিখোর রয়েছে আগের মতই। অনেক কষ্টে সে আলমডাঙ্গার প্রধান মাদক সম্রাজ্ঞী বর্তমানে পোড়াদহে অবস্থানকারী মিনি, সদ্য জেলহাজতে থাকা আলমডাঙ্গা স্টেশন রোডের গার্মেন্টস’র দোকানের আড়ালে মাদকব্যবসা চালানো তোতার কাছ থেকে ফেনসিডিল সংগ্রহ করতো। ফেনসিডিলের বোতলগুলো সে মাটিতে পুতে রাখে। মোবাইলের মাধ্যমে কাস্টমার ডেকে ডেকে সে অতি গোপনে একটি একটি করে বিক্রি করছিলো। ফেনসিডিলের মারাত্মক সংকট দেখা দেয়ায় প্রতিটি বোতলের দামও নিত প্রায় হাজার টাকা করে। দাম নাগালের বাইরে চলে যাওয়ায় অনেক ফেন্সিখোর পুরা বোতল না কিনে কিনতো অর্ধেক। অর্ধেকের বিক্রির এ সুযোগ নিতে ভুল করতো না লিটন। সে বোতলের ছিপি খুলে অর্ধেক ফেন্সিডিল আলাদা পাত্রে রাখতো। আর বাকি অর্ধেক পূরণ করতো নিজের প্রস্রাব দিয়ে।