অপার সৌন্দর্যে ভরপুর দেশে পর্যটন সেবায় মান বৃদ্ধির উদ্যোগ

আমাদের দেশ বাংলাদেশ প্রাকৃতিকভাবেই অপার সৌন্দর্যে ভরপুর। বিদেশিদের যথেষ্ট আগ্রহ ও আকর্ষণ রয়েছে এ দেশে। বিশেষ করে পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকা পতেঙ্গা, কক্সবাজার, কুয়াকাটা, রাঙ্গামাটি- এসব জায়গায় প্রায় সারাবছরই পর্যটকদের আনাগোনা লেগেই থাকে। এছাড়া সরকারি-বেসরকারিভাবে সারাদেশে অসংখ্য পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তোলা হচ্ছে। এর মধ্যে জেলায় জেলায় ডিসি ইকোপার্ক চিত্তবিনোদনের জন্যই শুধু নয় পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় সবুজের সমারহ গড়ে তোলায় অনন্য উদাহরণ সৃষ্টি হয়েছে। গতকাল মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার ভাটপাড়ায় ডিসি ইকোপার্ক উদ্বোধন করেছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন।
বর্তমান সরকার পর্যটন শিল্পকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছে। এ শিল্পকে এগিয়ে নেয়ার জন্য ২০১৬ সালকে বাংলাদেশে পর্যটনবর্ষ ঘোষণা করা হয়। তবে যথাযথভাবে সেবার মান রক্ষা করার ওপরেও পর্যটন শিল্পের সফলতা নির্ভর করে। সরকার এই বাস্তবতা উপলব্ধি করে নতুন উদ্যোগ নিয়েছে। পর্যটনখ্যাত জেলাগুলোতে পর্যটকদের সেবার মান বাড়াতে জেলা প্রশাসনে নতুন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের (এডিসি) পদ সৃষ্টি করা হচ্ছে। এই পদটির মূল লক্ষ্যই হবে পর্যটন সংক্রান্ত বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়া, যাতে পর্যটন সেবার মান বৃদ্ধি পায়। বিশ্বজুড়ে পর্যটন এখন একটি শিল্প। বর্তমান বিশ্বের অনেক দেশ পর্যটন শিল্পের মাধ্যমে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হয়েছে। বাংলাদেশেও এই সম্ভাবনা প্রবল। দরকার শুধু দুর্নীতি দূর করে দেশ মাতৃকার কল্যাণে সম্মিলিত উদ্যোগ। প্রাকৃতিক অপার সৌন্দর্য মেলে ধরার পাশাপাশি পর্যটক আকৃষ্ট করার মতো কৃত্রিম সৌন্দর্যের পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার দিকে বেশি বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে ডিসি ইকোপার্কগুলো হতে পারে প্রথম লক্ষ্য।
বাংলাদেশে পর্যটন শিল্পে সফল হওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। এ জন্য বিদ্যমান যে সমস্যাগুলো পর্যটকদের মোকাবেলা করতে হয় তা অবিলম্বে দূর করতে হবে। সে লক্ষ্যে নতুন পদ সৃষ্টি করে পর্যটনবিষয়ক ভার নির্দিষ্ট করে দেয়ার সরকারি এই সিদ্ধান্ত সময়োপযোগী বটে। যতো দ্রুত পদটি চূড়ান্ত করা হবে এবং নির্ভরযোগ্যদের কাছে দায়িত্বভার তুলে দেয়া হবে, তত দ্রুতই দেশি-বিদেশি পর্যটকের সুফল পাবে। যে দেশ সবুজে ভরা, শষ্য শ্যামলা সেই দেশের প্রতিটি এলাকা ঘুরে দেখার মতো করে গড়ে তুলতে পারলে বিদেশে গিয়ে শ্রম বিকিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের ওপর চাপ কমবে, বিদেশি পর্যটকদের মাধ্যমে অর্জিত হবে বৈদেশিক মুদ্রা। দূর হবে দারিদ্র্য, দেশ হবে স্বনির্ভর।