চুরি ও ছিনতাই রোধে প্রতিটি ইউনিয়নে রাস্তার দু’ধারের জঙ্গল পরিস্কার করা হবে

চুয়াডাঙ্গা জেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় জেলা প্রশাসক জিয়াউদ্দীন আহমেদ

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক জিয়াউদ্দীন আহমেদ বলেছেন ‘চুরি ও ছিনতাই রোধে রাস্তার দু’ধারের জঙ্গল পরিস্কার করা হবে। এজন্য প্রতিটি ইউনিয়নে ৪০ দিনের অতিদরিদ্রদের জন্য গৃহীত কর্মসূচীর শ্রমিক দিয়ে জঙ্গল পরিস্কার করা হবে। চার পৌরসভা এলাকায় পৌর মেয়র নিজেরা করবেন। ১০টি বর্ডার আউট পোষ্টে (বিওপি) মাটির দেয়াল নির্মাণ করতে হবে। সীমান্তের ১৫০ গজের মধ্যের জমিতে উঁচু জাতীয় ফসল কোনোক্রমেই আবাদ করা যাবে না। লাগালে তা কেটে ফেলা হবে। ইউএনওরা বিষয়টি তদারকি করবেন।’ গতকাল রোববার বেলা ১০টায় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত জেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় জেলা প্রশাসক এসব মন্তব্য করেছেন।
চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক জিয়াউদ্দীন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় ৬-বিজিবি’র পরিচালক লে. কর্ণেল ইমাম হাসান, পুলিশ সুপার মাহবুবুর রহমান, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শেখ সামসুল আবেদীন খোকন, পৌর মেয়র ওবায়দুর রহমান চৌধুরী, সিভিল সার্জন ডা. খায়রুল আলম, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) খোন্দকার ফরহাদ আহমদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) জসিম উদ্দিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) তরিকুল ইসলাম, সহকারী পুলিশ সুপার (দামুড়হুদা সার্কেল) কলিমুল্লাহ, দামুড়হুদা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান, ইউএনও দামুড়হুদা রফিকুল হাসান, ইউএনও জীবননগর সেলিম রেজা, জেলা শিক্ষা অফিসার নিখিল রঞ্জন চক্রবর্তী, জেলা জাসদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. আকসিজুল ইসলাম রতন, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাড. আব্দুল মালেক, জেলা আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার সম্পাদক শওকত আলী, অ্যাড. মানি খন্দকার ও চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি অ্যাড. রফিকুল ইসলামসহ সরকারি বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তারা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় জেলা প্রশাসক জিয়াউদ্দীন আহমেদ আরও বলেন ‘কেউ কারো নিরাপত্তা দিতে পারে না। প্রশাসন সহযোগিতা করতে পারে। প্রতিটি বালিকা বিদ্যালয়ের গেটে দুটি ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা (সিসিটিভি) লাগাতে স্কুল কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। এর ফলে ইভটিজিং জিরো পর্যায়ে নামাতে পারে। সিসিটিভির কার্যকর করার বিষয়ে সকলের সহযোগিতা চাই। আগামী ১ জানুয়ারি সদর হাসপাতালকে দালালমুক্ত হাসপাতাল হিসেবে ঘোষণা করা হবে। পৌর এলাকায় অবৈধ ব্যানার-ফেস্টুন নামিয়ে ফেলতে পৌর মেয়রকে অনুরোধ করছি। মেলায় র‌্যাফেল ড্র করতে না করেছে সরকার। প্রশাসনের পক্ষ থেকে আগামী ৯ জানুয়ারি থেকে ১ সপ্তাহের জন্য মেলা অনুষ্ঠিত হবে। সীমান্তবর্তী গ্রামে মাঠ দিয়ে পায়ে হাটা পথচলা রাস্তা নির্মাণ করা হবে। এজন্য সুলতানপুর গ্রামে বিওপি এলাকাকে বেছে নেয়া হয়েছে। সোলার প্যানেল ব্যবহার করে লাইট জ্বালানোর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে। নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত এ অভিযান চলবে। সকাল ৭টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গা শহরের মাঝে পরিবহন চলাচল করতে না পারে সেদিকে মালিক সমিতিকে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।’
পুলিশ সুপার মাহবুবুর রহমান বলেন ‘জেলা পর্যায়ে সকল স্থানে সিসিটিভির নেটওয়ার্ক হওয়া দরকার। পুলিশ বিভাগের নিজস্ব কোনো ফান্ড নেই। ফান্ড চেয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেয়া হয়েছে। ইটভাটায় চাঁদাবাজি বন্ধে শতাধিক ইটভাটায় সিসিটিভি স্থাপনের চিঠি দেয়া হলেও স্থাপন করা হয়েছে মাত্র দুটি ইটভাটায়। ডিবির সদস্যদের পরিচয় দেয়ার ব্যাপারে উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।’ ৬-বিজিবির পরিচালক লে. কর্ণেল ইমাম হাসান বলেন ‘বর্ডার কিলিং জিরো পর্যায়ে নামিয়ে আনাই বিজিবির লক্ষ্য। সীমান্তের নিরাপত্তা বজায় রাখতে অবৈধ অনুপ্রবেশ রোধ করতে হবে। ৬-বিজিবির আওতাধীন ১১৫ কিলোমিটার এলাকায় অপরাধ কমাতে সবশ্রেণি পেশার মানুষের সহযোগিতা করতে হবে। সীমান্তের জিরো পয়েন্টের কাছাকাছি আড়াই থেকে তিন ফুটের বেশি উচ্চতার কোনো ফসল আবাদ করা যাবে না। শীতের দিন রাত ৯টার পর সীমান্ত এলাকায় দোকানপাট বন্ধ রাখতে হবে। সন্ধ্যার পর সীমান্ত এলাকায় কোনো যৌক্তিক কারণ ছাড়া যাওয়া যাবে না।’
জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শেখ সামসুল আবেদীন খোকন বলেন ‘মাদক বিক্রেতার বিরুদ্ধে পদক্ষেপের পাশাপাশি যারা সেবন করছে তাদের তালিকা করতে হবে। দর্শনা সড়কে রাস্তার দু’পাশে বড় বড় জঙ্গলগুলো চুরি ও ছিনতাই রোধে অপসারণ হওয়া দরকার। চুয়াডাঙ্গা শহরে আইন-শৃঙ্খলা রোধে সিসিটিভির জন্য ১ লাখ টাকার বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে।’