ধৈর্যচ্যুতি আচরণ অপ্রত্যাশিত উক্তি লজ্জার প্রতিধ্বনি বয়ে আনে

ক্ষমতাবানকে সমীহ করে মানুষ। সমীহটাই ক্ষমতাবানের অর্জন। আর সমীহ-ই যদি সরিয়ে নেয় মানুষ, তা হলে কী থাকে ক্ষমতাবানের? ক্রোধ। যা অনেক সময় অনিবার্য করে তুলতে পারে ধ্বংস। ফলে ক্ষমতাবানকেই বেশি বেশি সতর্ক থাকতে হয়। যে যতো ক্ষমতাবান, তাকে ততোটাই দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেয়াটাও দায়িত্বেরই অংশ। যা ক্ষমতা অর্জনের সাথে সাথেই নিজের মধ্যে আপনমনেই ওই দায়িত্ববোধ জেগে ওঠে। যাদের মধ্যে তা জাগে না, তাদের সমীহ করার মতো ক্ষমতাবান বলা যায় না, ওরা আসলে অহমিকায় আক্রান্ত। বোকার স্বর্গে বাস করে বলেই হুঙ্কারের প্রতিধ্বনিতেই অপদস্থ হতে হয় চলার আচমকা বাঁকে। এসব দেখে ক’জনই আর শেখে?
বৃক্ষের সব বীজই বৃক্ষ হওয়ার ক্ষমতা রাখলেও যেমন সব বীজ তা হতে পারে না, তেমনই সব মানুষই কি সফল স্বার্থক হয়? অবশ্যই না। যারা চিন্তা করে অথচ কাজ করে না তারা যেমন পিছিয়ে পড়তে বাধ্য, তেমনই যারা কাজ করে অথচ চিন্তা করে না তথা পরিকল্পিতভাবে কাজ করে না তাদেরও দশা প্রায় একইরকম। মনের সাথে মিল রেখে যে বা যারা কাজ করার সুযোগ করে নিতে পারে তাদের সামনে সফলতার সম্ভবনার দ্বার খোলে। এটা অতোটা সহজ নয়, যতোটা সহজে সফল হওয়ার গল্পটা বলা যায়। ফলে জীবনটাকে স্বার্থক করতে হলে শুধু স্বপ্ন দেখলেই হয় না, তা বাস্তবায়নে কঠোর অধ্যাবসয় অবধারিত। আর যে বা যারা পৈত্রিকভাবে পাওয়া সোপানের ওপরের ধাপেই থাকেন তার বা তাদের ক্ষেত্রেও অবস্থান ধরে রাখার জন্য প্রয়োজন পরিকল্পনামতো শ্রম। অন্যথায় পতন অনিবার্য। ফলে সমাজে যার যেখানেই জন্ম, যার যেখানেই অবস্থান তার বা তাদের কাউকেই খাটো করে ভাবার কোন কারণ নেই। নিজেদের খাটো করে দেখাও বোকামি। অবস্থান ভাগ্যের গ-িতে বাধা থাকে না। থাকে পরিকল্পনা মাফিক পছন্দের কাজের মধ্যদিয়ে সফল হওয়ার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা। সব প্রচেষ্টাই প্রত্যাশামতো পূর্ণতা পায় না বলেই বলা হয়, ‘একবার না পারিলে দেখো শতবার’। প্রতিবারের ব্যর্থতা পরবর্তী বারের জন্য পরিপক্ক করে।
যে অর্জন একদিনে আসে না তা মূহুর্তের আচরণে ধূলিস্যাৎ হোক বা কোনো আচরণ মনোকষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়াক তা নিশ্চয় কেউই কামনা করেন না। যদিও কোনো কোনো ক্ষেত্রে কারো কারো বেলায় অনাকাক্সিক্ষত ধৈর্যচ্যুতি পরিলক্ষিত হয়। যে সমস্যা সামান্য আলোচনাতেই সমাধান সম্ভব তা অবজ্ঞাতে বা ধৈর্যচ্যুতি আচরণ মিশ্রনে অপ্রত্যাশিত উক্তি লজ্জার প্রতিধ্বনি বয়ে আনে। যা আড়লে হয় মিথ্যার আশ্রয়, না হয় লুকোতে হয় নিজের মুখ। এর মধ্য দিয়ে ফুটে উঠে হয় অহমিকা, না হয় বিষণœতা। যা পতনের পূর্বাভাস বললে খুব একটা ভুল বলা হয় না। ফলে সফল-স্বার্থক সকলকে সর্বক্ষেত্রেই বেশি বেশি করে ধৈর্য্য ধরতে হয়, সতর্ক থাকতে হয়।
পুনশ্চ: ধৈর্যশীলকে সৃষ্টি কর্তা পছন্দ করেন।