জেলহাজতে হুমায়ুন বাঙাল : মানববন্ধনের প্রস্তুতি নিচ্ছে মহল্লাবাসী

চুয়াডাঙ্গা দক্ষিণ গোরস্তানপাড়ার স্কুলছাত্রী রুবিনা ধর্ষণ ও হত্যা মামলা

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা দক্ষিণ গোরস্তানপাড়ার স্কুলছাত্রী রুবিনা ধর্ষণ ও হত্যা মামলার মূল অভিযুক্ত হুমায়ুনসহ তার সহযোগীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে আবারও মহল্লাবাসী সংগঠিত হচ্ছে। আগামী বুধবার মানববন্ধনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। অপরদিকে হুমায়ুন বাঙাল গত ১০ ডিসেম্বর চুয়াডাঙ্গা জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চুয়াডাঙ্গা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ইনচার্জ ইন্সপেক্টর নাজমুল হক বলেছেন, রুবিনা হত্যা মামলার আসামি চুয়াডাঙ্গা দক্ষিণ গোরস্তানপাড়ার হুমায়ুন বাঙাল গত ১০ ডিসেম্বর আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করে। বিজ্ঞ আদালত আত্মসমর্পণ আসামির আবেদন না মঞ্জুর করে জেলহাজতে প্রেরণের আদেশ দেন। অপরদিকে দক্ষিণ গোরস্তানপাড়ায় গুঞ্জন ছড়ায় গত ৮ ডিসেম্বর তাকে তার মেয়ের বাড়ি হালসা থেকে ধরা হয়।
চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের দক্ষিণ গোরস্তানপাড়ার হতদরিদ্র চায়না খাতুনের মেয়ে রুবিনা প্রভাতি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির ছাত্রী ছিলো। গত ২ মে দুপুরের পর নিজেদের বাড়ির উঠোনের আমগাছে রুবিনার লাশ ঝুলছে বলে খবর ছড়ানো হয়। গৃহপরিচারিকার কাজে ব্যস্ত থাকা মা চায়না খাতুন বাড়ি ফিরে মেয়ের লাশ দেখে দিশেহারা হয়ে পড়েন। খবর পেয়ে ঢাকায় থাকা পিতা রবিউল ইসলাম বাড়ি ফেরেন। মেয়ের লাশ দেখে তিনিসহ প্রতিবেশীদের অনেকেই সন্দেহ প্রকাশ করেন। পরদিন হাসপাতালমর্গে নিয়ে ময়নাতদন্ত করা হয়। মহল্লার সাধারণ মানুষ রুবিনা হত্যার নেপথ্য উন্মোচনে ও খুনিদের ধরে দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবিতে রাস্তায় নামে। মানববন্ধনসহ নানামুখি পদক্ষেপ নেয়া হয়। ময়নাতদন্তে হত্যার আলামত মেলে। ৮ মে রুবিনার মা বাদি হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন। সদর থানার বদলে মামলাটির তদন্তভার গোয়েন্দা পুলিশের ওপর দেয়া হয়। এর আগে থেকেই আত্মগোপন করে সুদখোর হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে চিহ্নিত হুমায়ুন বাঙালসহ কয়েকজন। তার স্ত্রী আরজিনাকে পুলিশ গ্রেফতার করে। এছাড়াও পুলিশের হাতে ধরাপড়ে শুকুর আলী। সে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। গ্রেফতার করা হয় হুমায়ুন বাঙলের জামাই সাদ্দাম ও মেয়ে সীমা খাতুনকে। এরই মাঝে তদন্ত শেষে সীমা খাতুনকে অব্যাহতি দিয়ে বাকিদের আসামি করে আদলতে অভিযোগপত্রও পেশ করা হয়। এরপরই হুমায়ুন বাঙাল আদালতে আত্মসমর্পণ করে। মামলার বাদিসহ অনেকেরই অভিযোগ, হুমায়ুন বাঙাল গ্রেফতার ও রিমান্ড এড়াতেই দীর্ঘদিন আত্মগোপনের পর চার্জশিট দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হয়েই প্রকাশ্যে এসেছে। হুমায়ুন বাঙালসহ তার সহযোগীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে আগামী বুধবার দক্ষিণ গোরস্তানপাড়ার সাধারণ নারী-পুরুষ মানববন্ধনসহ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করবে বলে মহল্লাসূত্রে জানা গেছে।
চুয়াডাঙ্গার পীরপুরে প্রাইভেট টিউটরের লালসার শিকার ৫ম শ্রেণির ছাত্রী : সন্তান প্রসব
চাঁন মিয়া ও নবজাতককে ঢাকায় নেয়া হচ্ছে আজ : কাল ডিএনএ পরীক্ষা
স্টাফ রিপোর্টার: ধর্ষণ মামলার আসামি প্রাইভেট টিউটর চাঁন মিয়া ও স্কুলছাত্রী কুমারী মাসহ নবজাতকের ডিএনএ পরীক্ষার জন্য ঢাকায় নেয়া হচ্ছে আজ। আদালতের আদেশে ঢাকার মহাখালী রোগতত্ত্ব ইনিস্টিটিউটে নিয়ে আগামীকাল মঙ্গলবার ডিএনএ পরীক্ষা করানো হবে। ডিএনএ পরীক্ষায় জানা যাবে সত্যিই প্রাইভেট টিউটর চুয়াডাঙ্গা পীরপুর মাঝেরপাড়ার চাঁন মিয়ার লালসার শিকার হয়ে স্কুলছাত্রী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে কিনা, স্কুলছাত্রীর প্রসব করা পুত্রসন্তান সত্যিই ওই চাঁন মিয়ার কিনা।
জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের আলুকদিয়া পীরপুর মাঝেরপাড়ার বদিউজ্জামানের ছেলে চাঁন মিয়ার নিকট একই মহল্লার হতদরিদ্র পরিবারের ৫ম শ্রেণির ছাত্রী প্রাইভেট পড়তো। এক পর্যায়ে চাঁন মিয়া ঢাকায় পাড়ি জমায়। স্কুলছাত্রী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ার বিষয়টি প্রকাশ পায়। স্কুলছাত্রী ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে বলে, চাঁন মিয়ার কাছে পড়তে গেলে সে ফুসলে ধর্ষণ করে। সে কারণেই অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছি। চাঁন মিয়াসহ তার নিকটজনেরা বিষয়টি অস্বীকার করে। হতদরিদ্র পরিবারের পাশে সহযোগিতার হাত বাড়ায় চুয়াডাঙ্গার মানবতা ফাউন্ডেশন। আইনগত সহায়তা দেয়। মামলা হয়। তদন্ত শেষে পুলিশ অভিযোগও পেশ করে। চাঁন মিয়া আদালতে আত্মসমর্পণ করে। চুয়াডাঙ্গার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এ বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়। আবেদনের প্রেক্ষিতে বিজ্ঞ বিচারক মামলার একমাত্র হাজতি আসামি চাঁন মিয়া ও নবজাতকের ডিএনএ পরীক্ষার আদেশ দেন। এ আদেশের প্রেক্ষিতেই আজ রাতে আসামি ও নবজাতককে নেয়া হচ্ছে ঢাকায়।