গাংনীর মজনুকে মারধরের অভিযোগে চরম উত্তেজনা ॥ শ্রমিকদের সড়ক অবরোধ

গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুর গাংনী বাজারের মিজানুর রহমান মজনু’র ওপর হামলার ঘটনায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। হামলাকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে গতরাতে ১ ঘন্টা মেহেরপুর-কুষ্টিয়া সড়ক অবরোধ করে শ্রমিকরা। আহত মজনুকে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে।
মিজানুর রহমান মজনু গাংনী বাজার সংলগ্ন মৃত ছদর উদ্দীন শাহের ছেলে। তিনি মোটরশ্রমিক ইউনিয়নের সদস্য এবং মেহেরপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মকবুল হোসেনের পক্ষে রাজনীতির সাথেও জড়িত। আহত মজনু মিয়া বলেন, পৌনে ৮টায় হাঁটতে হাঁটতে আমি এমপি’র বাস ভবনের দিকে যাচ্ছিলাম। গাংনী পৌর মেয়র আশরাফুল ইসলামের বাস ভবন পার হওয়ার পর তার ভাই আনারুল ইসলামসহ সঙ্গীয় কয়েকজন আমার ওপরে অতর্কিত হামলা চালায়। রড দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করলে আমি পালিয়ে রক্ষা পাই। পরিবারের লোকজন আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।
গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার এমকে রেজা বলেন, মজনু’র ডান হাতের কব্জির একটু ওপরে ভেঙে গেছে। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে। তবে পাল্টা অভিযোগ করে আনারুল ইসলাম বলেন, ‘ধর্মচাকী গ্রামের এরশাদ আমার চাচাতো ভগ্নিপতি। তাকে গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় এমপি’র বাড়ির সামনে মজনুসহ কয়েকজন মারধর করে। সে আমার অফিসে এসে বিষয়টি জানালে উপস্থিত নেতাকর্মীদের মাঝে ক্ষোভ দেখা দেয়। এরকম পরিস্থিতির মধ্যেই মজনু আমার বাড়ির সামনে এসে গালিগালাজ করে। এসময় আমাদের ছেলেরা তাকে ধাওয়া করে। আমি মজনু’র মতো মানুষকে কেন মারবো?’
জানা গেছে, মিজানুর রহমান মজনু মেহেরপুর জেলা মোটরশ্রমিক ইউনিয়নের গাংনী শাখার সদস্য। তার ওপর হামলা হয়েছে এমন খবর পেয়ে শ্রমিকরা গাংনী শাখা অফিসের সামনে মেহেরপুর-কুষ্টিয়া সড়কে অবরোধ করে। টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করে। ঘণ্টাব্যাপী অবরোধের ফলে দু’পাশে বাস ও ট্রাকের সারি পড়ে যায়। পরে গাংনী থানার ওসি হরেন্দ্র নাথ সরকার ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। শ্রমিকদের দাবি বাস্তবায়নের আশ্বাসে অবরোধ তোলা হয়। এসময় ওসির সাথে গাংনী শাখা অফিসে আলোচনায় বসেন জেলা মোটরশ্রমিক ইউনিয়নের লাইন সম্পাদক মনিরুল ইসলাম মনি, গাংনী শাখা সম্পাদক আসাদুল ইসলাম আশা, যুগ্ম-সম্পাদক মোতালেব হোসেন, সহসভাপতি মিজানুর রহমান ও কল্যাণ সম্পাদক কামরুল ইসলামসহ শ্রমিক নেতৃবৃন্দ।
শ্রমিকদের পক্ষ থেকে বিভিন্ন অভিযোগ উত্থাপন করে মজনু’র ওপর হামলাকারীদের গ্রেফতার পূর্বক দৃষ্টান্তমূলক সাজা দাবি করা হয়। সভায় গাংনী থানার ওসি হরেন্দ্র নাথ সরকার বলেন, আপনারা আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না। মজনু’র বিষয়ে মামলা দেন আমি অবশ্যই গ্রেফতার পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। এদিকে মজনুকে মারপিটের ঘটনায় উত্তেজনা বিরাজ করছিলো উত্তরপাড়ায়। তবে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে বলে জানিয়েছেন ওসি। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত শ্রমিক ও মজনু’র পরিবারের পক্ষ থেকে গাংনী থানায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে।