ইনজেকশন খেয়ে শিশু তাহেরার মর্মান্তিক মৃত্যু : টাকার জোরে ধামাচাপার চেষ্টা

আলমডাঙ্গা বেলগাছির হাতুড়ে ডাক্তার মারুফুলের বিরুদ্ধে ভুল চিকিৎসার অভিযোগ

ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি: আলমডাঙ্গার বেলগাছী গ্রামের হাতুড়ে ডাক্তার মারুফুলের ভুল চিকিৎসায় এক শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। কৃমিনাশক সিরাপের পরিবর্তে রেনামাইসিন ইনজেকশন খাওয়ানোয় ওই শিশু মারা গেছে। গতকাল শনিবার সকালে বেলগাছি পূর্বপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। শিশু তাহেরা গ্রামের মুদি ব্যবসায়ী তুহিন হোসেনের মেয়ে। এদিকে এ ঘটনা ধামাচাপা দিতে ও কথিত ডাক্তারকে রক্ষা করতে মোটা অঙ্কের টাকার লেনদেন হয়েছে বলে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে।
জানা গেছে, আলমডাঙ্গা উপজেলার বেলগাছী পূর্বপাড়ার মুদি ব্যবসায়ী তুহিন হোসেনের ৩ বছর বয়সী কন্যাশিশু তাহেরার পেটে কৃমি হয়েছে বলে ধারণা করে পরিবারের লোকজন। পেটের কৃমি মারার জন্য গত শুক্রবার সন্ধ্যায় বেলগাছি বাজারের পোয়ামারী গ্রামের মৃত টেংগর আলীর ছেলে মারুফুল ইসলামের ফার্মেসিতে যান তুহিন হোসেন। অনুমোদনহীন ওই ফার্মেসির কথিত ডাক্তার মারুফুল তাকে রীতিমত ওষুধ দেন। অভিযোগকারীরা জানান, ডাক্তার মারুফুল রেনেটা কোম্পানির আলবেন্ডাজল সিরাপের পরিবর্তে দেখতে একই রকম রেনামাইসিন ইনজেকশন দিয়ে সকালে খালি পেটে খাওয়ানোর পরামর্শ দেন। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী তুহিনের স্ত্রী গতকাল শনিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে কৃমিনাশক সিরাপ ভেবে তাহেরাকে রেনামাইসিন ইনজেকশন খাওয়ান। এর আধাঘণ্টার মধ্যে শিশু তাহেরা অসুস্থ হয়ে পড়ে। অসুস্থ তাহেরাকে নিয়ে পিতা তুহিন ও তার স্বজনরা দ্রুত আলমডাঙ্গা শহরের ডা. গোলাম মোস্তফার চেম্বারে নিয়ে যান। ডা. গোলাম মোস্তফা শিশু তাহেরাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। শিশু তাহেরার মৃত্যুর খবর পেয়ে কথিত ডাক্তার মারুফুল প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সহযোগিতায় মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে শিশুর পরিবারসহ এলাকার একশ্রেণির দালালদের ম্যানেজ করে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার অপচেষ্টা চালাচ্ছেন। শিশু তাহেরার মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় এলাকার সাধারণ মানুষ ফুঁসে উঠেছে। চিকিৎসাশাস্ত্রে কোনো উপযুক্ত শিক্ষা ও ফার্মেসির বৈধ অনুমোদন না থাকার পরও শিশু চিকিৎসা দেয়ায় কথিত ডাক্তার মারুফুলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছে তাহেরার পরিবার। একটি সূত্র জানায় শিশু তাহেরার মৃত্যুর খবর শোনার সাথে সাথে ডাক্তার মারফুল আত্মগোপন করেছেন। তবে তাহেরা কেন মারা গেলো, কার ভুল? বিষয়টি খতিয়ে দেখে উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে বলে ভুক্তভোগী পরিবার আশা করে।