আজ সংসদ অধিবেশন শুরু

স্টাফ রিপোর্টার: নতুন বছরে জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন বসছে আজ। এটি হবে দশম জাতীয় সংসদের উনবিংশতম অধিবেশন। বিকেল ৪টায় শুরু হতে যাওয়া এই অধিবেশনে সংবিধানের বিধান অনুযায়ী ভাষণ দেবেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। রেওয়াজ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি ভাষণের পর সংসদ অধিবেশন মুলতবি করা হবে। এরপর অধিবেশন শুরু হলে প্রধান হুইপ রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর ধন্যবাদ প্রস্ত্মাব আনবেন। পরে সংসদ সদস্যরা ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর আলোচনা করবেন।

সাধারণত বছরের শুরুর অধিবেশনে দিন এরকম ঘটলেও গত বছরের মতো এবারও কিছুটা ব্যতিক্রম হবে। প্রতিবারের মতো এবারও মন্ত্রিসভার ঠিক করে দেয়া ভাষণের সংক্ষিপ্তসার পড়বেন রাষ্ট্রপতি। এই মেয়াদে রাষ্ট্রপতি হিসেবে সংসদে বছরের শুরুর অধিবেশনে শেষ ভাষণ দেবেন রাষ্ট্রপতি।

সংসদ সচিবালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, চলমান সংসদের কোনো সদস্যের মৃত্যু হলে অধিবেশনে শোক প্রস্তাব গ্রহণের পর রেওয়াজ অনুযায়ী বৈঠক মুলতবি হয়। সাবেক মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী মো. ছায়েদুল হক এবং গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের সংসদ সদস্য গোলাম মোস্তফা আহমেদের মৃত্যুতে অধিবেশনে শোক প্রস্তাব গ্রহণ হবে।

ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘রাষ্ট্রপতির ভাষণ সাংবিধানিক নিয়ম। তাই শোক প্রস্তাব গ্রহণের পর অধিবেশন কিছু সময়ের জন্য মুলতবি হবে। সন্ধ্যা ছয়টায় সংসদে ভাষণ দেবেন আবদুল হামিদ।’ ২০১৬ সালে গাইবান্ধার সংসদ সদস্য মনজুরুল ইসলাম লিটনের মৃত্যুর কারণে অধিবেশন কিছুক্ষণ মুলতবি করা হয়। পরে ভাষণ দেন রাষ্ট্রপতি।

২০১৪ সালের ২৯ জানুয়ারি যাত্রা শুরম্ন করে বিএনপিবিহীন দশম সংসদ। আজ অধিবেশন শুরুর আগে বিকেল ৩টায় সংসদের কার্যক্রম ঠিক করতে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৈঠকে বসবে কার্যউপদেষ্টা কমিটি। প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বৈঠকে অংশ নেবেন।

রেওয়াজ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি সংসদের উত্তর পস্নাজা দিয়ে আইন সভায় প্রবেশ করবেন, যা ‘প্রেসিডেন্ট প্লাজা’ নামেও পরিচিত। ৬৫ হাজার বর্গফুটের এই জায়গা মূলত রাষ্ট্রপতির প্রবেশের জন্য তৈরি করা। প্রায় ৫ বছর পর ২০১৪ সালের ২৯ জানুয়ারি এখান দিয়ে সংসদে ঢোকেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। এর আগে ২০০৯ সালের ২৫ জানুয়ারি এই জায়গা দিয়ে সংসদে ঢোকেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিন আহম্মেদ। ওই দিন নবম সংসদের যাত্রা শুরু হয়েছিলো।

সংসদ সচিবালয়ের ডেপুটি সার্জেন্ট অ্যাট আর্মস স্কোয়াড্রন লিডার সাদরুল আহমেদ খান বলেন, ‘মহামান্য রাষ্ট্রপতি এবার নর্থ প্লাজা দিয়ে সংসদে ঢুকতে পারেন। এ কারণে পুরো নর্থ প্লাজায় সাজসজ্জার কাজ করা হয়েছে।’ সংসদ সচিবালয়ের কর্মকর্তারা জানান, রাষ্ট্রপতি সংসদে ঢোকার সময় সশস্ত্র বাহিনীর একটি বাদ্যদল রাষ্ট্রপতিকে সম্ভাষণ জানাবে। উত্তর প্লাজার ফ্ল্যাগ স্ট্যান্ড থেকে তিনতলার ‘বিশেষ লিফট’ পর্যন্ত বিছানো থাকবে লাল গালিচা। বিশেষ লিফটে করেই সংসদ ভবনে সাত তলায় রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ে যাবেন আবদুল হামিদ। সংসদ সচিবালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ এবার স্পিকারের পাশে রাখা ডায়াসে দাঁড়িয়েই তার ভাষণ দিতে পারেন।

জানা গেছে, এ বছর রাষ্ট্রপতির মূল ভাষণে ৭২ হাজার ৩৮৬টি শব্দ সঙ্কুলান করা হয়েছে। সংক্ষিপ্ত ভাষণে রাখা হয়েছে ৭ হাজার ৪৫৭টি শব্দ। রাষ্ট্রপতির এই ভাষণ গত ৭ ডিসেম্বর মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনুমোদন দেয়া হয়। আগের বছর (২০১৭ সাল) জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনে রাষ্ট্রপতি এক ঘণ্টায় ৫ হাজার ৮০৬ শব্দের সংক্ষিপ্ত ভাষণ দিয়েছিলেন। এবার রাষ্ট্রপতির ভাষণে ৯টি বিষয়কে বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করা হয়েছে বলে জানা গেছে।