আলমডাঙ্গার মোচাইনগর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তির নামে শিক্ষকদের পকেট গরম

স্টাফ রিপোর্টার: আলমডাঙ্গার আসমানখালী মোচাইনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের বিনামূল্যে ভর্তির নামে টাকা হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। কোনো উন্নয়ন তহবিলে নয় আদায়কৃত টাকা যাচ্ছে শিক্ষকদের পকেটে। এমন অভিযোগ করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, আলমডাঙ্গার মোচাইনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১ম শ্রেণি থেকে ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ভর্তি বাবদ ৪০ টাকা হারে চাঁদা আদায় করছেন শিক্ষকেরা। বাধ্য হয়েই টাকা পরিশোধ করছেন অভিভাবকগণ। ওই বিদ্যালয়ের এক ছাত্রের অভিভাবক ইমারুল ইসলাম বলেন, আমার ছেলে আবির হোসেনকে এবার ৫ম শ্রেণিতে ভর্তি করেছি। ভর্তি বাবদ ৪০ টাকা নিয়েছেন একজন শিক্ষক। আমি স্যারকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, আমরা আলমডাঙ্গা উপজেলা শহর থেকে গাড়ি ভাড়া দিয়ে নতুন বই নিয়ে এসেছি। গাড়ি ভাড়া মেটানোর জন্য ছাত্র-ছাত্রী প্রতি ৪০ টাকা করে নিচ্ছি। তবে ভিন্ন ভিন্ন অভিভাবককে ভিন্ন ভিন্ন কারণ দেখিয়েছেন শিক্ষকরা। এমন অভিযোগও পাওয়া গেছে। অভিভাবক গোলাম মোস্তফা বলেন, আমার মেয়ে এবার ৪র্থ শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছে। আমার কাছ থেকেও ৪০ টাকা নিয়েছেন। আমি জিজ্ঞাসা করলে শিক্ষকরা বলেছেন, বিদ্যালয়ে খরচ আছে। অভিভাবক মনিরুল ইসলাম, সোহেল রানা ও ইলিয়াস হোসেন বলেন, আমাদের ছেলে-মেয়ে স্কুলে ভর্তি করার সময় শিক্ষকেরা বলেছে ৪০ টাকা করে লাগবে। আসলে ভর্তির কথা বলে টাকাগুলো নিয়ে কয়েকজন শিক্ষক পকেট গরম করছেন। বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে বিভিন্ন সময়ে নানা বাহানায় টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়। ওই টাকা দিয়ে শিক্ষক ও পিয়ন-দফতরি মিলে মাঝে মাঝে বনভোজন করে থাকেন। আমরা দরিদ্র অভিভাবক কিভাবে টাকা পরিশোধ করবো? অভিভাবক আনারুল ইসলাম বলেন, আমি কৃষি কাজ করি। আমি শুনেছি আমাদের পার্শ্ববর্তী শালিকা, নান্দবার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি বাবদ কোনো টাকা নেয়া হচ্ছে না। অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে গতকাল রোববার দুপুরে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সামাদ বলেন, আমরা তো প্রতিবার এভাবে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ভর্তির টাকা নিয়ে থাকি। কোনোবার কোনো সমস্যা তো হয়নি। এবার কেনো সমস্যা হচ্ছে? বিদ্যালয়ের বিভিন্ন কাজের জন্য খরচ করতে হয়, এজন্য টাকা নিচ্ছি। ওই বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি নজরুল ইসলাম মুন্সী বলেন, আমাকে স্কুল থেকে জানানো হয়েছে যে ৩০ টাকা করে ভর্তির চাঁদা আমরা প্রতিবার নিয়ে থাকি। এবারও একইভাবে আদায় করবো। তবে বাড়তি টাকা নেয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই। কর্তৃপক্ষ বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এমনটি আশা ভুক্তভোগী অভিভাবকদের।