খালেদা জিয়ার আরও ১৪ মামলা বকশীবাজারে

স্টাফ রিপোর্টার: বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধ করা আরও ১৪টি মামলা রাজধানীর বকশীবাজারের আলিয়া মাদরাসামাঠে স্থাপিত ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিশেষ এজলাসে স্থানান্তর করা হয়েছে। গতকাল সোমবার আইন মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের বিচার শাখা থেকে এ-সংক্রান্ত এক প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে জারি করা এই প্রজ্ঞাপনে সই করেন যুগ্ম সচিব বিকাশ কুমার সাহা।

আইন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, স্থান সংকুলান না হওয়া ও নিরাপত্তার কারণে মামলাগুলো স্থানান্তর করা হচ্ছে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ঢাকার বিশেষ জজ আদালত ২-এ বিচারাধীন শাহবাগ থানার ৫৩(২)০৮ মামলাটি ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিশেষ এজলাসে স্থানান্তর করা হয়েছে। কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, মামলাটি ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে পরিচালিত হলেও ভবনটিতে আরও অসংখ্য মামলার কাজ চলে। ফলে জনাকীর্ণ এই ভবনে নিরাপত্তাজনিত কারণে খালেদা জিয়ার মামলাটি সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। একই কারণ দেখিয়ে তেজগাঁও থানার ২০(১২)০৭ নম্বর, ৫(৯)০৭ নম্বর, ১৫(০৮)১১ নম্বর এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের করা রমনা থানার ৮(৭)০৮ নম্বর মামলার কার্যক্রম স্থানান্তর করা হয়।

এ ছাড়া বিশেষ ক্ষমতা আইনে করা দারুস সালাম থানার ৬২(১)১৫ নম্বর, ৩(৩)১৫ নম্বর, ৮(২)১৫, ৫(২)১৫, ৬(২)১৫, ৩১(২)১৫, ১২(২)১৫ ও ২৯(২)১৫ এবং যাত্রাবাড়ী থানায় করা বিশেষ মামলা ৫৯(১)১৫ বকশীবাজার আলিয়া মাদরাসামাঠে স্থাপিত ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিশেষ এজলাসে স্থানান্তর করা হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে, মহানগর হাকিম আদালত নম্বর ৭-এ বিচারাধীন পিটিশন মামলা ১০৯৬/১৬ ও ১১০/১৫-এর বিচারকাজ এতদিন মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত ভবনে চলছিল। এই প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে মামলা দুটির কার্যক্রম বিশেষ আদালতে স্থানান্তর করা হলো।

এদিকে নিরাপত্তার স্বার্থেই বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের করা ১৪টি মামলা বকশীবাজারের অস্থায়ী আদালতে স্থানান্তর করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক।

গতকাল সোমবার সচিবালয়ে লন্ডনের স্থানীয় প্রশাসনিক ইউনিট টাওয়ার হ্যামলেটের বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত স্পিকার সাবিনা আক্তারের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা জানান।

‘খালেদা জিয়ার ১৪টি মামলা কেন বকশীবাজারের অস্থায়ী আদালতে স্থানান্তর করা হয়েছে? অনেকে বলছেন এর সঙ্গে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে’ সাংবাদিকদের এমন কথার উত্তরে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘মোটেও রাজনৈতিক কারণে করা হয়নি। আমরা দুই পক্ষেরই সিকিউরিটির ব্যাপারটি চিন্ত করে…।’

তিনি বলেন, ‘আপনারা দেখেছেন উনি একলা (আদালতে) যান না। কোথা থেকে ৩০০-৪০০ লোক গুছিয়ে নিয়ে সেখানে যান। তারা অনেক সময় সিকিউরিটির বিঘ্ন ঘটায়। তার (খালেদা জিয়া) সিকিউরিটিও দেখা প্রয়োজন। আমরা দুদিক থেকেই মনে করেছি, সেখানে তার মামলার বিচার হলে এসব প্রতিবন্ধকতা থাকবে না, সেজন্যই করেছি। এর বাইরে কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আমাদের নেই।’

খালেদা জিয়ার মামলা দ্রুত শেষ করার জন্য আদালত স্থানান্তর করা হলো কিনা- এ বিষয়ে আনিসুল হক বলেন, ‘নো নো, ডিউ প্রসেসে খালেদা জিয়ার মামলাগুলো শেষ হচ্ছে। যে মামলাগুলো এখন চলছে, সেগুলো ৫-৬ বছর ধরে চলছে। এক্ষেত্রে কোনো মামলাই দ্রুততার সঙ্গে শেষ করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়।’

‘শেখ হাসিনার সরকার প্রমাণ করেছে, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় অন্য যে কোনো সরকারের চেয়ে আমাদের কন্ট্রিবিউশন অনেক অনেক বেশি। আমরা এ দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করেছি।’