সিলেটের রাস্তায় দুর্ঘটনা : চুয়াডাঙ্গার ট্রাক হেলপারের পর চালকেরও মুত্যু

স্টাফ রিপোর্টার: সিলেটে সড়ক দুর্ঘটনায় চুয়াডাঙ্গার ট্রাক হেলপার শরিফুুল ইসলামের পরদিন গতকাল বুধবার মারা গেছেন ট্রাকচালক আকমান আলী। গত ৮ জানুয়ারি সড়কের পাশে ১০ চাকার ট্রাক রেখে পাংচার হওয়া চাকা খোলার সময় অপর একটি ট্রাকের ধাক্কায় চালক ও হেলপার দুজনেই গুরুতর আহত হন। তাদেরকে উদ্ধার করে সিলেটের ওসমানি হাসাপাতালে ভর্তি করা হয়। দুর্ঘটনার পরদিন অর্থাৎ গত মঙ্গলবার সকালে মারা যায় হেলপার। গতকাল বুধবার সকালে একই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন ট্রাকচালক আকমান।

ট্রাকচালক আকমান চুয়াডাঙ্গা পরিবহন শ্রমিকদের অন্যতম নেতা। শ্রমিক ইউনিয়নে তিনি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে হয়ে ওঠেন পরিচিত মুখ। তিনি চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের কেদারগঞ্জ নতুনবাজারপাড়ার বাসিন্দা ছিলেন। তার বড় ছেলে জাহিদও সিলেটে ট্রাক চালান। ছেলে তার পিতাকে বাঁচাতে কয়েক ব্যাগ রক্ত দিয়ে সর্বাত্মক চেষ্টা করেও শেষ পর্যন্ত সফল হননি। হেলপার শরিফুল ইসলাম চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের কলোনীপাড়ার জামাত আলীর ছেলে। দেড় দু সপ্তাহ আগে রিকশা চালানো বাদ দিয়ে ট্রাকের হেলপার হওয়ার জন্য সিলেটে যান তিনি। সেখানে ট্রাক চালকের সহকারী হিসেবে কাজ করার সময় চালকের সাথেই গুরুতর জখম হন। সিলেটে নিহত দুজনের মৃতদেহ গতরাতে নিজ নিজ বাড়ির উদ্দেশে নেয়া হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকালেই দাফন সম্পন্ন করার প্রাথমিক প্রস্তুতি রয়েছে।

জানা গেছে, ট্রাকচালক আকমান আলী (৬০) একজন সদালাপী ছিলেন। আনুমানিক ৪০ বছর ধরে তিনি ট্রাকচালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। মাঝে শ্রমিকদের স্বার্থ সংরক্ষণে পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নে নির্বাচনও করেন। ৪ মাস আগে তিনি বাড়ি থেকে সিলেটের উদ্দেশে রওনা হন। সিলেটে ১০ চাকার ট্রাক চালাতেন। কিছুদিনের মধ্যেই তিনি বাড়ি ফিরবেন বলেও জানিয়েছিলেন। দেড় মাস আগে ছোট ছেলের বিয়েতে আসতে না পারায় খুব শিগগিরই আশার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। ফিরলেন ঠিকই। তবে জীবিত নয়, লাশ হয়ে। দুর্ঘটনার পর হাসপাতালে নেয়া হলে ট্রাকচালক আকমানের দুটি পা শরীর থেকে বাদ দিতে হয়। জরুরিভাবে রক্ত দিতে হয়। যেহেতু ছেলে জাহিদ এলাকায় ট্রাক চালান। সেহেতু তিনি খবর পেয়ে দ্রুত হাসপাতালে পৌঁছে পিতাকে সুস্থ করার চেষ্টা করেন। চেষ্টা করেও পিতাকে বাঁচিয়ে রাখতে না পারায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন ছেলে জাহিদ। অপারদিকে ট্রাক চালকের হেলপারি করতে গিয়ে দুর্ঘটনায় নিহত হওয়া শরিফুল (৩৫) তার নিজ এলাকায় বহুল পরিচিত ছিলেন। তার মৃত্যুর খবরে গতপরশু থেকেই এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। ওমান প্রবাসী ছোট ভাই শফিকুলকে এখনও জানানো হয়নি শরিফুলের মৃত্যুর খবর। পরিবারের পক্ষ থেকে তাকে বলা হয়েছে বড় ভাই শরিফুল সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়েছে, ভালো আছে।