পুলিশে অপ্রতুলতা সক্ষমতা ও সমাজের অপরাধ প্রবণতা

পুুলিশে অপ্রতুলতার বিষয়টি অস্বীকার করা না গেলেও দীর্ঘ সময় ধরে সড়কে গণডাকাতির বিষয়টি নমনীয় দৃষ্টিতে দেখার সুযোগ নেই। যে সড়কে সন্ধ্যা থেকে পুলিশের টহল জেলার পুলিশ কর্তার নিদের্শে খানেকটা বাধ্যতামূলক, সেই সড়কে যখন টহল পুলিশ থাকলো না ঠিক তখনই প্রায় ৪০ মিনিট ধরে ডাকাতদল একের পর এক যানবাহনের গতিরোধ করে ডাকাতি করলো। অথচ কথা ছিলো, ডাকাতির আগেই অপরাধীদের আইনের আওতায় নেয়া, তা তো হয়ইনি, ডাকাতদলই পুলিশের অবস্থান সম্পর্কে তথ্য নিয়ে ডাকাতি করেছে। যা পুলিশের ওপর চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয়ারই সামিল নয়কি?
চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার সন্তোষপুর মোড় থেকে আন্দুলবাড়িয়া সড়কের চিহ্নিত কয়েকটি স্থান রয়েছে যেখানে মাঝে মাঝেই ডাকাতদল গাছ ফেলে কিংবা অন্য কিছু সড়কের ওপর রেখে ডাকাতি করে। ডাকাতদল যে শুধু ওই একই সড়কে ডাকাতি করে তাও যেমন নয়, তেমনই একই ডাকাতদলই যে সব স্থানে ডাকাতি করে তাও নয়। তবে যে সড়কে ডাকাতদল বেশি সুযোগ খোঁজে সেই এলাকায় পুলিশি নজরদারি একটু বেশিই দিতে হয়। সন্তোষপুর-আন্দুলবাড়িয়া, চুয়াডাঙ্গা-আলমডাঙ্গা সড়কের ঘোড়ামারা ব্রিজ এলাকা, চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুর সড়কের কয়েকটি স্থানে মাঝে মাঝেই ডাকাতদল ডাকাতির অপচেষ্টা চালায়, ডাকাতি করে। পুলিশও ওইসব সড়কে টহলদারির ব্যবস্থা করেছে। তারপরও ডাকাতি কেন? পুলিশে পদে পদে অপ্রতুলতা থাকলেও তা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টায় যেমন কমতি নেই, তেমনই স্বল্প সক্ষমতার মধ্যেও পুলিশের সফলতাও কম নয়। এর মাঝে বিচ্ছিন্ন কিছু ডাকাতি কিংবা অন্য ধরনের অপরাধমূলক ঘটনা ঘটলেই হাহুতাসের চেয়ে তা রুখতে বাস্তবমুখী পদক্ষেপ নেয়াই উত্তম। একটি অপরাধমূলক ঘটনা ঘটিয়ে কোনো অপরাধী পার পেলে তার মধ্যে অপরাধপ্রবণতা বৃদ্ধি পায়।
ডাকাতি হওয়ার পর ডাকাত ধরার চেয়ে ডাকাতির উদ্দেশে বের হওয়ার সাথে সাথে ধরে আইনে সোপর্দ করতে পারাই পুলিশের পারদর্শতা। সেলক্ষ্যে গোপন তথ্যদাতা নিযুক্তকরণসহ নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণের ব্যবস্থা পুলিশ বিভাগে রয়েছে, যার মাধ্যমে অপরাধীদের অপতৎপরতার বার্তা আগামই পাওয়া যায়। চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলা তেমন খবর আগাম পাওয়ার বদলে টহলপুলিশ কখন সড়ক ছেড়ে খাওয়া কিংবা অন্য কাজে যাবে তা অপরাধীরাই আগাম পেয়ে গেছে। সে কারণেই সঙ্গতপ্রশ্ন, সরষের ভেতরেরই ভূত নেই তো? ভূত তাড়াতে হবে, ধরতে হবে অপরাধী।