বিরাজমান শৈত্যপ্রবাহে জনজীবন স্থবির : শীতবস্ত্র বিতরণ অব্যাহত

স্টাফ রিপোর্টার: টানা ১০ দিন ধরে বিরাজমান শৈত্যপ্রবাহে চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুর ও ঝিনাইদহসহ দেশের উত্তরাঞ্চল ও দক্ষিণ পশ্চিমের অধিকাংশ এলাকায় জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে। শীতে জবুথবু মানুষের ঘুরে ফিরে একই প্রশ্ন, কবে যাবে এই হাড় কাঁপানো শীত। আঞ্চলিক ভাষায় প্রবীণদের খেদোক্তি, ‘এবারের জাড়ে জীবনটা জ্বালিয়ে দিলো। যাবে কবে এ জাড়?’ আবহাওয়া অধিদফতরের পূর্বাভাসে অবশ্য বলা হয়েছে, ধীরে ধীরে তাপমাত্রা বাড়ছে। তবে ৫ দিনে তেমন কোনো পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই। বিরাজমান শৈত্যপ্রবাহ পরিস্থিতির দেশের আরও কিছু এলাকা থেকে প্রশমিত হতে পারে।
গতকাল রোববার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিলো যশোরে ৭ দশমিক ২ ও সর্বোচ্চ সিলেটে ২৫ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চুয়াডাঙ্গায় গতকাল সর্বোচ্চ ছিলো ১৭ দশমিক ৭ ও সর্বনিম্ন ৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকালও চুয়াডাঙ্গায় স্পষ্ট সূর্যের দেখা মেলেনি। রোদের রেখা থাকলেও তাতে তাপ বাড়েনি। ফলে কনকনে শীতে কাঁপতে হয়েছে দিনের দুপুরেও। আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, স্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারাদেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে এবং তা কোথাও কোথাও দিনের বেলা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। টাঙ্গাইল, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, সাতক্ষীরা, চুয়াডাঙ্গা, যশোর ও কুষ্টিয়া অঞ্চলসহ রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। বিরাজমান শৈত্যপ্রবাহ পরিস্থিতি দেশের আরও কিছু এলাকা থেকে প্রশমিত হতে পারে। সারাদেশে রাত এবং দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবতির্ত থাকতে পারে। ৫ দিনে উল্লেখযোগ্য কোনো পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই। এদিকে শীত জনিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। তবে গতকাল আর মৃত্যুর খবর মেলেনি। দরিদ্র দুস্থদের শীতের দুর্ভোগ থেকে লাঘব করতে চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুরে বিভিন্ন সংগঠন, প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির উদ্যোগে শীতবস্ত্র বিতরণ অব্যাহত রয়েছে।
জীবননগর ব্যুরো জানিয়েছে, একটানা তীব্র শৈতপ্রবাহের কবলে পড়ে জবুথবু হয়ে পড়েছে এ উপজেলাবাসী। কনকনে ঠাণ্ডা শরীরে কাঁপন ধরিয়ে দিচ্ছে। শৈত্যপ্রবাহ কবে বিদায় নেমে এ দুশ্চিন্তা পেয়ে বসেছে অসহায় ও ছিন্নমূল মানুষের মনে। এ অবস্থার মধ্যে গতকাল রোববার বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির উদ্যোগে জীবননগর পৌরসভার অসহায় ও শীতার্ত মানুষের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। উপজেলা বিএনপির একাংশের কার্যালয়ে ইঞ্জিনিয়ার মকলেসুর রহমান তরফতার টিপুর পক্ষে এ শীতবস্ত্র বিতরণ করেন উপজেলা বিএনপির একাংশের সভাপতি সাবেক পৌর মেয়র হাজি নোয়াব আলী।
জীবননগর পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের অসহায় মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণকালে পৌর বিএনপির সভাপতি মাহতাব উদ্দিন, বিএনপি নেতা তাজুল ইসলাম, পৌর কাউন্সিলর হযরত আলী, কাউন্সিলর আপিল মাহমুদ, আব্দুর রাজ্জাক, বিআরডিবির চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক, সাবেক পৌর কাউন্সিলর সামসুজ্জামান হান্নু, ওয়ার্ড বিএনপি নেতা আব্দুল কুদ্দুছ, মজনুর রহমান, আক্তার হোসেন, উপজেলা যুবদল নেতা আবুল হোসেন তোয়া, উপজেলা ছাত্রদল নেতা হাসানুজ্জামান হাসান ও আশরাফুল ইসলাম রয়েল প্রমূখ সময় উপস্থিত ছিলেন।
আন্দুলবাড়িয়া প্রতিনিধি জানিয়েছেন, চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির অন্যতম সদস্য বিশিষ্ট শিল্পপতি ইঞ্জিনিয়ার মোকলেসুর রহমান তরফদার টিপুর উদ্যোগে শীতার্ত মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। গতকাল রোববার বিকেল ৪টায় আন্দুলবাড়িয়া বাজারস্থ বিশ্বাস মার্কেটের ২য় তলায় ইউনিয়ন বিএনপির অস্থায়ী কার্যলয় চত্বরে ইউনিয়নের দুস্থ, অসহায় ও হতদরিদ্র শীতার্তদের মাঝে ভাবে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি সাব্দার রহমান বিশ্বাসের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন জীবননগর উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক পৌর মেয়র হাজি নোয়াব আলী। বিশেষ অতিথি ছিলেন জীবননগর পৌর বিএনপির সভাপতি মাহাতাব উদ্দিন চুন্নু, কাউন্সিলার হয়রত আলী, আপিল মাহমুদ, বিএনপি নেতা আব্দুর রাজ্জাক, মজনুর রহমান, যুবদল নেতা আবুল হোসেন তোয়া প্রমুখ।
মেহেরপুর অফিস জানিয়েছে, মেহেরপুর পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের অসহায় ও দুস্থদের মাঝে ৪ হাজার কম্বল বিতরণ করলেন পৌর মেয়র মাহফুজুর রহমান রিটন। গতকাল রোববার সকাল ১০টায় মেহেরপুর শহীদ ড. সামসুজ্জোহা পার্কে তিনি ওই কম্বল বিতরণ করেন। মেয়রের কম্বল নিতে শীতের সকালে কুয়াশা ও ঠাণ্ডা উপেক্ষা করে শহীদ ড. সামসুজ্জোহা পার্কে হাজির হন পৌর এলাকার বিভিন্ন ওয়ার্ডের অসহায় ও দুস্থরা। কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ গোলাম রসুল, মেহেরপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জয়নাল আবেদীন, মেহেরপুর বড় বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মনিরুজ্জামান দিপু, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্মসম্পাদক সাইফুল ইসলাম পল্টু, সদর উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক মিজানুজমান অপু, যুগ্মআহবায়ক মাহাবুব হোসেন প্রমুখ।