চুয়াডাঙ্গা জেলা শহর ধূলোর শহরে রূপান্তর : অবর্ণনীয় দুর্ভোগ

এলার্জিজনিত হাছি আর হরদম দুর্ঘটনায় বাড়ছে মৃত্যুঝুঁকি : মাইক্রোর ওপর উল্টে পড়লো ট্রাক
স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরটি ধূলোর শহরে রূপান্ত হয়েছে। সড়ক সংস্কারের জন্য সড়কের ওপরের পিচ অংশ উদরে খুড়ে দীর্ঘদিন ধরে ফেলে রাখার কারণে মাত্রাতিরিক্ত ধূলোয় শহীদ আবুল কাশেম সড়কে পথচারী ও সড়কের ধারের ব্যবসায়ীদের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ধূলোর কারণে এলার্জিতেও আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকে। আর দুর্ঘটনা? জেলা শহরের মূল রাস্তায় খুড়ে রাখা ও ধূলোর কারণে প্রতিনিয়তই ঘটছে দুর্ঘটনা। গতকালও চুয়াডাঙ্গা পৌরসভা মোড়ে একটি ট্রাক উল্টে পড়ে মাইক্রোবাসের ওপর। ভাগ্যিস চালক দিপু দ্রুত নেমে সরে পড়ায় প্রাণে রক্ষা পেয়েছে।
জানা গেছে, ৬৭ কোটি ৬১ লাখ ৭২ হাজার ৯৬১ টাকা ব্যয়ে চুয়াডাঙ্গা-ঝিনাইদহ সড়কের সুবদিয়া থেকে মেহেরপুর-চুয়াডাঙ্গা সড়কের কুলপালা পর্যন্ত সড়ক প্রশস্তকরণসহ নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। গত বছরের ২০ জুন মেহেরপুরের জহুরুল লিমিটেড ও রানা বিল্ডার্স নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কার্যাদেশ গ্রহণ করেছে। চলতি বছরের জুনের মধ্যে এ কাজ সম্পন্ন করার কথা। চুায়াডাঙ্গা জেলা শহরের শহীদ আবুল কাশেম সড়কও এ কাজের অন্তর্ভুক্ত। সড়কের কিছু অংশে কাজ শুরু করলেও জেলা শহরের মধ্যে বিশেষ করে অতিব জনগুরুত্বপূর্ণ শহীদ আবুল কাশেম সড়কটির অধিকাংশ স্থানে উদরে খুড়ে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি করে রাখা হয়েছে। ফলে ধুলোয় পথচারীসহ পথের পাশের ব্যবসায়ী সাধারণকে শুধু অবর্ণনীয় দুর্ভোগই পোহাতে হচ্ছে না। যাদের ধুলোয় এলার্জি তাদের পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে ওঠছে। এছাড়া প্রতিদিনই দুর্ঘটনা যেনো লেগেই রয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার চুয়াডাঙ্গা একাডেমি মোড়ে একটি মাইক্রোবাস (ঢাকা মেট্রো-গ-১৪-৭৯৩৭) পুরাতনপাড়ার দিক থেকে শহীদ আবুল কাশেম সড়কে ঢুকতেই রেলবাজারের দিক থেকে বড়বাজারমুখি ভূষিভর্তি ট্রাক উল্টে পড়ে মাইক্রোবাসের ওপর। মাইক্রোচালক তালতলার দিপু দ্রুত নেমে সরে পড়ায় প্রাণে রক্ষা পেলেও মাইক্রোবাসটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ট্রাকটি দর্শনার আতিয়ার রহমান হাবুর। তার ট্রাকের চালক দর্শনারই ফারুক হোসেন সহকর্মীকে সাথে নিয়ে দ্রুত সটকে পড়ে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল আনুমানিক সোয়া ১০টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। ফলে সড়কে চরম যানজটের সৃষ্টি হয়।
চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের প্রধান সড়ক শহীদ আবুল কাশেম সড়কটি দীর্ঘদিন ধরেই চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগের তত্ত্বাবধানে ঠিকাদার নিযুক্ত করার প্রেক্ষিতে একদফা জেলা প্রশাসক ঠিকাদারকে ডেকে জেলা শহরের মধ্যের অংশটি দ্রুত মেরামত করার নির্দেশনা দেন। ঠিকাদারদের লোকজন কিছুদিন সড়কের পিচ উদরে কাজ শুরুর নাটক করে অন্যস্থানে কাজ করতে থাকে। ফলে জেলা শহরটি ধুলোর সড়কে রূপান্তর হয়। জনদুর্ভোগ লাঘবে গত কয়েকদিন আগে চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য জাতীয় সংসদের হুইপ ঠিকাদার ও সড়ক-জনপথের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে শহরের ভেতরের অংশের কাজ কেন করা হচ্ছে না মর্মে প্রশ্ন তুলে দ্রুত কাজ সম্পন্ন করার তাগিদ দেন। এ তাগিদে রেলবাজার অংশে কাজ শুরুর তোড়জোড় দেখানো হয়। পরদিনই ঠিকাদারের লোকজন ফিরে যায় পূর্বের অবস্থায়। অবর্ণনীয় ধূলোর কারণে চরম দুর্ভোগের শিকার অনেকেই এ তথ্য দিয়ে দ্রুত প্রতিকারে পদস্থ কর্মকর্তাদের আশু পদক্ষেপ কামনা করেছেন।