দেশের সবক’টি শিক্ষাবোর্ডে অভিন্ন প্রশ্নে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু : পিছু ছাড়েনি প্রশ্নফাঁস প্রসঙ্গ

চুয়াডাঙ্গায় মোট ১২ হাজার ৫০৫’র পরীক্ষার্থীদের মধ্যে প্রথম দিনে অনুপস্থিত ৫৪ জন : মেহেরপুরে পরীক্ষার্থী ৮৪৮১ : অনুপস্থিত ৪৫

স্টাফ রিপোর্টার: প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্কট উত্তরণে নিয়মের কড়াকড়ির মধ্যদিয়েই গতকাল বৃহস্পতিবার সারাদেশে অভিন্ন প্রশ্নপত্রে শুরু হয়েছে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। তবে ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কড়া নজরদারিসহ কঠোর হুঁশিয়ারির পরও প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ মুক্ত করা যায়নি পরীক্ষা। একটি চক্র হুঁশিয়ারিকে থোড়াই কেয়ার করে পরীক্ষার এক ঘণ্টা আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়েছে ভুয়া প্রশ্ন। অনেকে আসল প্রশ্ন বলে দাবি করলেও শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা বোর্ড জানিয়েছে, প্রশ্ন ফাঁস হয়নি। যে প্রশ্ন ফেসবুকে এসেছে তার সঙ্গে আসল প্রশ্নের কোনো মিল নেই। প্রথম দিন অনুপস্থিত প্রায় ১০ হাজার, বহিষ্কার ২৬। প্রথম দিনের পরীক্ষায় ফরম পূরণ করেও ১০ শিক্ষা বোর্ডে কেন্দ্রে আসেনি ৯ হাজার ৭৪২ পরীক্ষার্থী। পরীক্ষায় অসাদুপায় অবলম্বনের দায়ে বহিষ্কার হয়েছে ২৬ জন। যাদের মধ্যে মাদরাসা শিক্ষাবোর্ডের দাখিল পরীক্ষার্থী ১৭ জন, কারিগরি বোর্ডের এসএসসি, ভোকেশনালে ৭ জন এবং ঢাকা বোর্ডের এসএসসি পরীক্ষার্থী ২ জন।
চুয়াডাঙ্গা ভি.জে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১ হাজার ৭৪ জনের মধ্যে ৪ জন। এর মধ্যে দুজন ছাত্র, দুজন ছাত্রী। আলমাডাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৭৭৫ জনের মধ্যে অনুপিস্থত ছিলো ২ জন। এর মধ্যে একজন ছাত্র, একজন ছাত্রী। দামুড়হুদা মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৩৫৩৯ পরীক্ষার্থীর মধ্যে অনুপস্থিত ছিলো ৩ জন। মেমনগর বিডি মাধমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৭শ ১৩ জনের মধ্যে অনুপস্থিত ছিলো ১ জন। জীবননগর পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৪৫৯ জনের মধ্যে ৫ জন, মুন্সিগঞ্জ একাডেমিতে ৭৪৭ জনের মধ্যে ২ জন, চুয়াডাঙ্গা সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ে ১ হাজার ৮৪ জনের মধ্যে ৪ জন ছাত্র, সরোজগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৩৭৩ জনের মধ্যে ২ জন, কার্পাসডাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৫০৫ জনের মধ্যে ৩ জন, আলমডাঙ্গা পাইলটে ৯০৯ জনের মধ্যে ২ জন অনুপিস্থিত হয়েছে। হাটবোয়ালিয়া উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৬৭৩ জনের মধ্যে একজনও অনুপোস্থিত হয়নি। আন্দুলবাড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যাললয়ে ৪শ মধ্যে ৪ জন, হাসাদহ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ২৫৬ এর মধ্যে ১ জন, উথলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ১৯৩ জনের মধ্যে ১ জন, মনোহরপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ২৪১ জনের মধ্যে ১ জন, দামুড়হুদা পাইলট বালিকা কেন্দ্রে ৬৬২ জনের মধ্যে ২ জন, ছাদেমাননেছা মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৫৯৫ জনের মধ্যে ২ জন অনুপস্থিত হয়েছে। এছাড়া মাদরাসা দাখিল কোরআন মাজিদ ও তাবিদ পরীক্ষায় মোট ১১ জন, ভোকেশনাল পরীক্ষায় মোট ৪ জন অনুপস্থিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
আলমডাঙ্গা ব্যুরো জানিয়েছে, আলমডাঙ্গা পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৮৪৩ বাংলা ১মপত্রে অংশ নিয়েছে ৭৭৫ জন ২ জন অনুপস্থিত। হল সুপারের দায়িত্বে আছে হারদী মীর শামসুদ্দীন আহাম্মেদ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনোয়ারুল ইসলাম সাগর, কেন্দ্র সচিব আলমডাঙ্গা পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম খান। আলমডাঙ্গা পাইলট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রে মোট ৯০৯ জন পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত ২ জন। হল সুপারের দায়িত্বে পালন করছেন বেলগাছি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কাশেম, কেন্দ্র সচিব আলমডাঙ্গা বালিকা বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আনিসুজ্জামান। মুন্সিগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৪০৪ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে এদের মধ্যে ১ অনুপস্থিত। মুন্সিগঞ্জ বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৩৪১ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১ জন অনুপস্থিত। এখানে চুয়াডাঙ্গা থেকে সার্বক্ষণিক চৌধুরী মোস্তাফিজুর রহমান নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করেছেন। হাটবোয়ালিয়া মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রে ২৭৮ জন পরীক্ষার্থী অংশ নেয় এছাড়াও হাটবোয়ালিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজে ৩৮৬ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়েছে। এখানে চুয়াডাঙ্গা থেকে ¯িœগ্ধা দাস নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করেন। আলমডাঙ্গা সিদ্দিকিয়া আলেয়া মাদরাসা কেন্দ্রে মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৩১৫ পরীক্ষার্থীর মধ্যে অনুপস্থিত ২। আলমডাঙ্গা পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র, বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্র ও আলমডাঙ্গা সিদ্দিকিয়া আলেয়া মাদরাসা কেন্দ্র ৩টি কেন্দ্রেই উপজেলা ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী অফিসার সহকারী কমিশনার (ভূমি) সিমা শারমিন সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও পাইলট কেন্দ্রে সার্বক্ষণিক সমাজসেবা অফিসার আবু তালেব দায়িত্ব পালন করেন। আলমডাঙ্গা সিদ্দিকিয়া আলেয়া মাদরাসা কেন্দ্রে উপজেলা নির্বাচন অফিসার আবু আনসার ও আলমডাঙ্গা বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুল বারী দায়িত্ব পালন করেন।
জীবননগর ব্যুরো জানিয়েছে, জীবননগর উপজেলায় ৮টি কেন্দ্রে এসএসসি, এসএসসি ভোকেশনাল ও দাখিল পরীক্ষায় ২ হাজার ৩২৪ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেছে। সুষ্ঠু ও নকলমুক্ত পরিবেশ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম দিনে বাংলা প্রথমপত্র পরীক্ষায় ১২ জন অনুপস্থিত ছিলো। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার দ্বিনেশ চন্দ্র পাল জানান, এসএসসিতে জীবননগর পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৪ জন, হাসাদাহ মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ১ জন, আন্দুলবাড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৪ জন এবং দাখিলে জীবননগর আলিম মাদরাসা কেন্দ্রে ৩ জন অনুপস্থিত ছিলো।
উপজেলার হাসাদাহ মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৩৪৪ জন, জীবননগর পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৫৫৭ জন, ভোকেশনালে ২১১ জন, জীবননগর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোকেশনালে ২১৯জন, মনোহরপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ২৮৬ জন, উথলী মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ২৪৮ জন, আন্দুলবাড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৪৬২ জন এবং জীবননগর উপজেলা আলিম মাদরাসা কেন্দ্রে দাখিল পরীক্ষায় ২৮৪ জন অংশগ্রহণ করে।
মেহেরপুর অফিস জানিয়েছে, প্রথম দিনে মেহেরপুরে এসএসসি, এসএসসি ভোকেশনাল ও দাখিল পরীক্ষা শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়েছে। প্রথম দিনে জেলায় এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ৮৪৮১ জন এবং ৪৫ জন পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত। এ বছর প্রথম দিনে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার পরীক্ষার্থী ছিলো ৮৫২৬ জন।
মেহেরপুর জেলা প্রশাসনের শিক্ষা শাখা সূত্রে জানা যায়, প্রথম দিনে জেলায় এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিলো ৭০৮০ জন। এদের মধ্যে উপস্থিত হয় ৭০৫৫ জন। অনুপস্থিত ছিলো ২৫ জন। এসএসসি ভোকেশনাল পরীক্ষায় ৮৯৮ জনের মধ্যে ৮৯০ জন অংশগ্রহণ করে এবং অনুপস্থিত ৮ জন। এছাড়া দাখিল পরীক্ষায় ৫৪৮ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৫৩৬ জন অংশ গ্রহণ করে। অনুপস্থিত ১২ জন।
এসএসসি পরীক্ষার প্রথম দিনে বাংলা ১মপত্রের পরীক্ষায় মেহেরপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ১১৬১ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১১৫৬ জন অংশগ্রহণ করে। সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৮৫৩ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৮৫২ জন অংশগ্রহণ করে। আমঝুপি মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৬৩৭ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে সবাই অংশগ্রহণ করে। গাংনী পাইলট স্কুল-কলেজ কেন্দ্র থেকে ৭৭০ জনের মধ্যে ৭৬২ জন অংশগ্রহণ করে। গাংনী পাইলট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৬৬৭ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৬৬৫ জন, বামুন্দী-নিশিপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্র থকে ৬৩৪ জনের মধ্যে ৬৩০ জন, জুগিরঘোপা মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৩৫৯ জনের মধ্যে ৩৫৯ জন ও সাহেবনগর মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ২৫৭ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে সবাই উপস্থিত ছিলো। বামুন্দী মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রে ৪৯৯ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে সবাই উপস্থিত ছিলো। এছাড়া মুজিবনগর মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ১২৪৩ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১২৩৮ জন পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে।
এদিকে এসএসসি (ভোকেশনাল) পরীক্ষার প্রথম দিনে বাংলা-২ পরীক্ষায় মেহেরপুর সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে ৪২২ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৪২১ জন, গাংনী পাইলট স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে ৩২৬ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৩১৯ জন এবং দারিয়াপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় মুজিবনগর কেন্দ্রে ১৫০ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে সবাই অংশগ্রহণ করে। এছাড়া দাখিল পরীক্ষার প্রথম দিনে কোরআন মাজিদ ও তাজবিদ পরীক্ষায় মেহেরপুর দারুল উলুম আহমদিয়া ফাজিল মাদরাসা কেন্দ্রের ৩২২ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৩২১ জন ও গাংনী ছিদ্দিকা মাদরাসা কেন্দ্রের ২২৬ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ২১৫ জন অংশগ্রহণ করে।
জেলা প্রশাসক পরিমল সিংহ, স্থানীয় সরকারের উপপরিচালক খাইরুল হাসান ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শেখ ফরিদ আহমেদ প্রমুখ পরীক্ষা কেন্দ্র ঘুরে ঘুরে দেখেন এবং সন্তোষ প্রকাশ করেন।
ডাকবাংলা প্রতিনিধি জানিয়েছেন, ঝিনাইদহ সদর উপজেলার উত্তর নারায়ণপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের এসএসসি পরীক্ষা প্রথমদিন শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই কেন্দ্রে ঝিনাইদহ জেলার পশ্চিম অঞ্চলের ১৩টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৯৭৩ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৯৬৯ পরীক্ষার্থী বাংলা প্রথমপত্র পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে বাকি ৪জন পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিলো। কেন্দ্রের সচিব আবু দাউদ জানান এই কেন্দ্রের এসএসসি পরীক্ষার প্রথম দিন শান্তিপূর্ণ এবং নকলমুক্ত পরিবেশে অনষ্ঠিত হয়েছে।