জীবননগরে আবারও দখল হচ্ছে করতোয়া ও ভৈরব নদ

দু’পাশ থেকে মাটি কেটে ভরাট করে চাষাবাদ : প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা

সালাউদ্দীন কাজল: বেশ কিছুদিন বন্ধ থাকার পর নতুন করে আবারও দখল হচ্ছে জীবননগর উপজেলায় করতোয়া নদী ও ভৈরব নদ। প্রভাবশালী ভূমিদস্যুরা উপজেলার এ দু’ নদ-নদীর দু’পাশ থেকে মাটি কেটে ভরাট করে তাতে চাষাবাদ শুরু করেছেন। যদি জরুরি ভিত্তিতে এসব অবৈধ দখলদারদের হাত থেকে জমি দখলমুক্ত করা না হয় তাহলে অচিরেই এ দু’ নদ-নদীর অস্তিত্ব একেবারে বিলীন হয়ে যাবে।
জীবননগর উপজেলা ভূমি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার উথলী, আন্দুলবাড়িয়া ও বাঁকা ইউনিয়ন এবং জীবননগর পৌরসভায় ১ নম্বর সরকারি খাস খতিয়ানে ভৈরব নদের প্রায় ৮৩ হেক্টর এবং করতোয়া নদীর প্রায় ৩ হেক্টর জমি রয়েছে। এর মধ্যে ভৈরব নদে জীবননগর পৌরসভায় ২১ হেক্টর, উথলী ইউনিয়নে ৩২ হেক্টর, আন্দুলবাড়িয়া ইউনিয়নে ১৯ হেক্টর ও বাঁকা ইউনিয়নে ১১ হেক্টর জমি রয়েছে এবং করতোয়া নদীতে সীমান্ত ইউনিয়নে ৩ হেক্টর জমি রয়েছে। গত শনিবার সরজমিনে আন্দুলবাড়িয়া, সীমান্ত এবং উথলী এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ভূমিদস্যুরা এ দু’ নদ-নদীর অধিকাংশ জমি দখলের পর এর দু’পাশ থেকে মাটি কেটে ভরাট করে তাতে চাষাবাদ শুরু করেছেন। আবার কেউ কেউ নদের মাঝখানে বাঁধ দিয়ে অবৈধভাবে নদের জমি দখলে নিয়ে মাছ চাষ করছেন। এসব কারনে দু’ নদ-নদীর পানি প্রবাহ একেবারে বন্ধ হয়ে গেছে।
আন্দুলবাড়িয়া এলাকার কৃষক জসিম উদ্দীন জানান, আগে ভৈরব নদের পানি দিয়ে ধানসহ অন্যান্য ফসল ক্ষেতে সেচ দিতাম। কিন্তু ভূমিদস্যুরা নদের মাঝ বরাবর বাঁধ দেয়ার কারনে পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে নদ একেবার শুকিয়ে গেছে। ফলে ডিজেলচালিত শ্যালোইঞ্জিন দিয়ে ফসল ক্ষেতে সেচ দেবার কারনে উৎপাদন খরচ বহুগুনে বেড়ে গেছে।
তিনি আরও জানান, ভূমিদস্যুরা এর আগে একবার এভাবে নদের জমি দখল করে নিয়েছিলো। তখন প্রশাসনের হস্তক্ষেপের কারণে তা দখলমুক্ত হয়েছিলো। বর্তমানে প্রশাসনের তেমন কোনো হস্তক্ষেপ বা নজরদারি না থাকায় ভূমিদস্যুরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।
জানতে চাইলে জীবননগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা বলেন, যে সমস্ত ব্যক্তিরা নদ-নদীর দু’পাশ থেকে মাটি কেটে ভরাট করে চাষাবাদ করছেন তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে এবং পানি প্রবাহ স্বাভাবিক রাখতে অচিরেই নদ-নদীর খনন কাজ শুরু করা হবে।