প্রশ্নপত্র ফাঁসকারীকে ধরিয়ে দিলে ৫ লাখ টাকা পুরস্কার

প্রশ্ন ফাঁসের বিষয়ে ১১ সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন

স্টাফ রিপোর্টার: প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে অসহায় শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবার ফাঁসকারীদের ধরিয়ে দিতে পুরস্কার ঘোষণা করেছে। প্রশ্নফাঁসকারী বা চক্রকে ধরিয়ে দিতে পারলে ৫ লাখ টাকা পুরস্কার দেবে মন্ত্রণালয়। একই সঙ্গে প্রশ্ন ফাঁসের বিষয়ে ১১ সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়েছে। পরীক্ষার কেন্দ্র থেকে প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে ‘ভিজিলেন্স টিম’ আরো জোরদার করা হবে। পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিটের আগে প্রশ্নের প্যাকেট যাতে খোলা না হয়, সেটা নিশ্চিত করার জন্য সব জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। গত বৃহস্পতিবার থেকে এসএসসি পরীক্ষা শুরু হওয়ার পর দুটি পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁস হয়। এরপর চিন্তিত  মন্ত্রণালয় গতকাল সচিবালয়ে পাবলিক পরীক্ষা সংক্রান্ত জাতীয় মনিটরিং কমিটির জরুরি সভা ডাকে। সভা শেষে বিকালে শিক্ষামন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, চলতি এসএসসি পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়ে একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি করা হয়েছে। প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগের সত্যতা যাচাই করবে ওই কমিটি। কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আলমগীরকে আহ্বায়ক করে গঠিত কমিটিতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, জনপ্রশাসন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পুলিশের দুইজন, শিক্ষা বোর্ডের তিনজন এবং বিটিআরসির একজন প্রতিনিধি থাকছেন। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের একজন কর্মকর্তা সদস্য সচিব হিসেবে কমিটিতে থাকবেন। কমিটি প্রয়োজন মনে করলে আরো সদস্য অন্তর্ভুক্ত করতে পারবেন।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, চলতি মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের ধরিয়ে দিলে পাঁচ লাখ টাকার পুরস্কার দেয়া হবে। প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের ধরিয়ে দিতে পারলে পাঁচ লাখ টাকা পুরস্কার দেয়া হবে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রশ্ন ছড়াচ্ছে যারা, তারা ধরা পড়বেই। এটা সময়ের ব্যাপার মাত্র। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এসব ছড়ানো বন্ধের বিষয়ে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) বলা হয়েছে। তিনি আরো জানান, কেন্দ্রসচিব ছাড়া পরীক্ষার কেন্দ্রে কেউ মোবাইল ফোন নিয়ে গেলে তাকে সঙ্গে সঙ্গে গ্রেপ্তার করা হবে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আর কোনো পরীক্ষার্থী হলে মোবাইল ফোন নিয়ে গেলে তার পরীক্ষা বাতিল করা হবে। গতকালের বৈঠকে সিদ্ধান্তের ব্যাপারে মন্ত্রী বলেন,পরীক্ষার সময় যেসব প্রশ্ন উঠেছে যে (প্রশ্ন) ফাঁস হয়েছে সেটা ঠিক বা ভুল এসব বিষয়গুলো যাচাই-বাছাই করে এবং তার ফলে পরীক্ষার্থীদের উপর কী প্রভাব পড়েছে, কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কী হয় নাই, এসব মিলিয়ে পরীক্ষাটাকে কীভাবে ?মূল্যায়ন করা যায় সেটা মূল্যায়ন করে পরীক্ষা সম্পর্কে সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য সুপারিশ করবেন, এজন্য একটি কমিটি আমরা করে দিচ্ছি। এই কমিটি এসএসসি ও সমমানের পুরো পরীক্ষা ‘মনিটর’ করবেন বলেও জানান শিক্ষামন্ত্রী। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, সার্বিকভাবে দেখা যাচ্ছে শুধু (প্রশ্ন) ফাঁস করে টাকা ইনকাম করার জন্য বা তার কোনো লাভ হবে এ উদ্দেশ্যে শুধু নয়, লক্ষ্য হাসিলের উদ্দেশ্য থাকে, সেই লক্ষ্যটা হচ্ছে সরকারকে মানুষের কাছে হেয় প্রতিপন্ন করা, আস্থাটাকে নষ্ট করে দেয়া। যারা (প্রশ্নফাঁস) করছেন তারা সরকারকে মানুষের কাছে হেয় প্রতিপন্ন করতে চান এবং ছোট করতে চান। এটা একটা গভীর ষড়যন্ত্রমূলক এর পেছনে উসকানি রয়েছে। আশা করি কেউ বাদ যাবেন না, প্রত্যেকে ধরা পড়বে। ফেসবুকে এখনো যারা প্রশ্নফাঁস করবেন বলে বিজ্ঞাপন দিচ্ছেন সেগুলো বন্ধ করা হবে কি না- এই প্রশ্নে নাহিদ বলেন, অবশ্যই বন্ধ করা হবে। এজন্য বিটিআরসি, পুলিশসহ বিভিন্ন জনের দায়িত্ব আছে, এটা অবশ্যই করবো আমরা। চলতি এসএসসি ও সমমানের বাংলা প্রথম ও দ্বিতীয় পত্রের প্রশ্নফাঁস হয়েছে বলে মনে করেন কি না-এই প্রশ্নে নাহিদ বলেন, এজন্যই আমরা কমিটি করে দিয়েছি যেন সঠিক যাচাই করতে পারি।