মায়ের ওড়ানা গলায় পেঁচিয়ে ৮ম শ্রেণির ছাত্র আল মামুনের আত্মহত্যা

দামুড়হুদার লক্ষ্মীপুরে চাচাতো বোনের বিয়েতে রঙ কেনার টাকা না দেয়ায় অভিমান

দামুড়হুদা/জুড়ানপুর প্রতিনিধি: দামুড়হুদার দলকালক্ষ্মীপুরে আল মামুন (১৩) নামের এক স্কুলছাত্র বসতঘরের আড়ার সাথে মায়েরই ব্যবহৃত ওড়ান পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছে। সে দলকালক্ষ্মীপুর মোল্লাপাড়ার শহিদুল হকের ছেলে এবং লক্ষ্মীপুর উম্বাত বিশ্বাস মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির ছাত্র। গতকাল মঙ্গলবার সকাল বেলা ১১টার দিকে চাচাতো বোনের বিয়েতে রঙ খেলাখেলির এক পর্যায়ে রঙ কেনার জন্য পুনরায় মায়ের কাছে টাকা চাই মামুন। মা টাকা দিতে না চাইলে মায়ের ওপর অভিমান করে মামুন নিজ ঘরের আড়ার সাথে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যার অপচেষ্টা চালায়। তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় দ্রুত চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আল-মামুনকে মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে থানায় নেয়। আজ বুধবার লাশের ময়নাতদন্ত করা হবে।
স্থানীয়সূত্রে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার দলকালক্ষ্মীপুর মোল্লাপাড়ার রহিদুল হকের মেয়ে রুবিনা খাতুনের (১৭) মাস দুয়েক আগে চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের আকুন্দবাড়িয়া গ্রামে পারিবারিকভাবে গোপনে বাল্যবিয়ে হয়। আজ বুধবার বরপক্ষ আনুষ্ঠানকিভাবে বরযাত্রী নিয়ে বউ তুলতে আসার কথা ছিলো। ওই উপলক্ষেই গতকাল মঙ্গলবার কনেরপিতার বাড়িতে চলছিলো রঙ খেলা। স্কুলছাত্র আল মামুন চাচাতো বোনের বিয়েতে রঙ খেলার জন্য মায়ের কাছে রঙ কেনার টাকা নিয়ে রঙ কিনে নিয়ে আসে এবং মেতে ওঠে রঙ খেলায়। রঙ খেলাখেলির এক পর্যায়ে রঙ ফুরিয়ে গেলে সে পুনরায় মায়ের কাছে রঙ কেনার জন্য টাকা চাই। এ সময় মা আলেয়া বেগম রঙ কেনার টাকা দিতে না চাইলে সে মায়ের ওপর রাগ করে চাচার বাড়ি থেকে নিজবাড়িতে চলে আসে এবং জানালা দিয়ে ঘরে ঢুকে আড়ার সাথে মায়েরই ব্যবহৃত ওড়না পেঁচিয়ে ঝুলে পড়ে। পরিবারের লোকজন বিষয়টি ঠিক পেয়ে তাকে দ্রুত আড়া থেকে নামিয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেয়। হাসপাতালের চিকিৎসক তার পরীক্ষা করে মৃত ঘোষণা করেন। আল মামুনের মরদেহ বাড়িতে নেয়া হলে কাঁন্নায় ভেঙে পড়েন মা আলেয়া বেগম, বৃদ্ধ দাদি মনোয়ার বেগমসহ পরিবারের লোকজন। এলাকায় নেমে আসে শোকের ছায়া। থেমে যায় রঙ মাখা-মাখিসহ বিয়ের সকল উৎসব।
এদিকে হাসপাতালে নিহত আল মামুনের সাথে থাকা লোকজন কর্তব্যরত চিকিৎসককে মিথ্যা তথ্য দিয়ে বলে সে বিদ্যুতস্পৃষ্টে আহত হয়েছিলো। শুরু হয় ধু¤্রজালের। বিষয়টি জানতে পেরে পুলিশ ছুটে যায় লক্ষ্মীপুরে। বিকেলে লাশ উদ্ধার করে থানায় নেয় পুলিশ। আজ বুধবার লাশের ময়নাতদন্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন দামুড়হুদা মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ আকরাম হোসেন। নিহত আল মামুন ছিলো দু’ভাইয়ের মধ্যে বড়।