তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে উঠতি বয়সেই অতোটা হিংস্র?

উঠতি বয়সী কিছু যুবকের বিরোধের সূত্রপাত তুচ্ছ হলেও হিংসার হিংস্র বহির্প্রকাশ শঙ্কার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। উগ্রতার উৎস কি শুধুই তারুণ্যেভরা সঙ্গবদ্ধতা? নাকি মাদকে বিগড়ানো মেজাজ দেখানোর প্রতিযোগিতা? যদিও রাজনীতির ছোঁয়া আর পরিবার নামের মানসিক-আচরণ শিক্ষালয়ও এসবের জন্য কম দায়ী নয়। ওখানেই তো প্রশ্রয়ে পুষ্ট হয় মেজাজ। সে হিসেবে পরিবারই তার উৎপত্তিস্থল।
উঠতি বয়সী দু’যুবকের ধীরগতিতে চালানো মোটরবাইকের চেয়ে একটু বেশি গতির বাইক ভেপু বাজিয়ে অতিক্রম করা কি অন্যায়? চীনসহ বিশ্বের সভ্য অনেক দেশেই পেছন থেকে হর্ণ বা ভেপু বাজানোটাকে ভালোভাবে নেয়া না হলেও আমাদের দেশের চিত্র ভিন্ন। শব্দদূষণ রোধে জনবহুল এলাকায় উচ্চস্বরে ভেপু বাজানো দণ্ডনীয় অপরাধ হলেও আইনের প্রয়োগ আছে কি? অবাক হলেও সত্য যে, শহরের মধ্যেই শুধু নয়, হাট-বাজারের বিপনী বিতানের গলিতেও হর্ণ বাজিয়ে বাইক চালানো দেখে-শুনেও মুখ খোলেন না কেউ। অথচ ধীরগতিতে চলা মোটরসাইকেল অতিক্রমের সময় ভেপু বা হর্ণ বাজনোর কারণে চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের পাশাপাশি মহল্লার কয়েক যুবকের মধ্যে বিরোধের সূত্রপাত ঘটে পরশু বিকেলে। তারই জের ধরে সন্ধ্যায় একজনকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে বাটাম দিয়ে পিটিয়ে ক্ষতবিক্ষত করেছে প্রতিপক্ষ। ক্ষতবিক্ষত যুবক তার পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম পুরুষ। যদিও প্রশ্ন উঠতেই পারে, শয্যাগত পিতার খেটে খাওয়া ছেলের কী দরকার ছিলো অন্যের বাইক চেয়ে চালাতে অন্যকে অতিক্রমের সময় হর্ণ বাজানো? প্রশ্ন কর্তা সমাজেরই বাসিন্দা হলে বুঝতে হবে, অধিকার নিয়ে তিনি বৈষম্যে আক্রান্ত।
হর্ণ বাজিয়ে অতিক্রম করাটাকে তাচ্ছিল্যভাবে নেয়ার বদলে দুর্ঘটনা এড়ানোর সংকেত হিসেবে নেয়াটাই আমাদের সমাজে রেওয়াজ। এই রেওয়াজ না মেনে গরিবের ছেলে ধনির দুলালের মোটরবাইকে অতিক্রম করার সময় তাচ্ছিল্যের ভেপু বাজিয়েছে ধরে নেয়াটা কি অন্যায় নয়? অথচ অনুশোচনার বদলে হয়েছে হিংস্র। এটাও প্রশ্রয় পেলে মেজাজের মাত্রা সর্বগ্রাসী হয়ে উঠবে। ডেকে আনবে সর্বনাশ।