দীর্ঘ ১৯ বছর পর হাজতমুক্ত নূরুজ্জামান লাল্টু

জাসদের কেন্দ্রীয় নেতা হত্যা মামলাসহ কয়েকটি মামলায় জামিন লাভ

স্টাফ রিপোর্টার: বাংলার কমিউনিস্ট পার্টির প্রবর্তক জাসদ কেন্দ্রীয় নেতা কাজী আরেফ হত্যাসহ বহু খুন গুম মামলার আসামি নূরুজ্জামান লাল্টু দীর্ঘ ১৯ বছর পর হাজতমুক্ত হয়েছেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুরসহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় এক সময়ের আধিপত্য বিস্তারকারী নূরুজ্জামান লাল্টু গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় চুয়াডাঙ্গা জেলা কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে নিকটজনদের সাথে একই শাদা মাইক্রোবাসযোগে নিজগ্রাম কয়রাডাঙ্গার উদ্দেশে রওনা হন।
হাজতমুক্ত হয়ে মাইক্রোবাসে ওঠার আগে উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিগতদিনেও অন্যায় করিনি। সরকারের আহ্বানে আত্মসমর্পণের পর দেড়যুগেরও বেশি সময় ধরে বহু মামলার মোকাবেলা করে জামিনে মুক্ত হতে হলো। কৃষিকাজসহ সাধারণ কাজ করেই জীবনের বাকিটা সময় কাটাতে চাই। এজন্য অবশ্যই সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন।
আইনজীবীসূত্রে জানা গেছে, জাসদের কেন্দ্রীয় নেতা কাজী আরেফ হত্যা মামলায় বিচারিক আদালতে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি উচ্চ আদালত থেকে জমিন লাভ করেন। জামিনের যাবতীয় আদেশপত্র চুয়াডাঙ্গায় পৌঁছানোয় বিধি মোতাবেক নূরুজ্জামান লাল্টু চুয়াডাঙ্গা জেলা কারাগার থেকে মুক্ত হয়েছেন।
জানা গেছে, জামিনের আদেশপত্র গতকালই বিকেলে চুয়াডাঙ্গা জেলা কারাগারে পৌঁছুয়। এরপর থেকেই তার স্ত্রী মনোয়ারা বেগম, মেয়ে লাকী খাতুন, জামাতা আশাবুল হক ও শ্যালক আখতারুজ্জামান লাবলু কারাফটকে অপেক্ষা করতে থাকেন। সন্ধ্যায় নূরুজ্জামান লাল্টু হাজতমুক্ত হলে তাকে নিকটজনেরা স্বাগত জানিয়ে শাদা মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন। কারাফটকে লাল্টু সাংবাদিকদের জানান, তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। বিভিন্ন সময়ে দায়ের করা তার বিরুদ্ধে ৩০টির অধিক মামলা ছিলো। বেশিরভাগ মামলায় তিনি খালাস পেয়েছেন। উচ্চ আদালত জামিন দেয়ায় দীর্ঘ ১৯ বছর পর কারামুক্ত হতে পারলেন তিনি। এবার কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করবেন বলে জানান।
উল্লেখ্য, এক সময়ের শীর্ষ চরমপন্থি নেতা নূরুজ্জামান লাল্টু ১৯৯৯ সালের ২৯ জুলাই তৎকালীন সরকারের আহ্বানে সহযোগীদের নিয়ে পুলিশের কাছে আলমডাঙ্গা উপজেলার নিজ গ্রাম কয়রাডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়মাঠে অস্ত্রশস্ত্রসহ আত্মসমর্পণ করেন। নূরুজ্জামান লাল্টুর আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুস সামাদ জানান, তার বিরুদ্ধে ৩০-৪০টা মামলা ছিলো। কাজী আরেফ হত্যা মামলায় তিনি জামিনে ছিলেন। পরবর্তীতে অবশিষ্ট একটি হত্যা মামলায় উচ্চ আদালত জামিনে মুক্তি দিয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা জেলা কারাগারের জেলার ইমরান হোসেন জানান, নূরুজ্জামান লাল্টু আলমডাঙ্গার একটি হত্যা মামলায় জামিনে মুক্তি পাওয়ায় কারামুক্ত হয়েছেন।