লাভলী চানাচুর কারখানাকে ৬০ হাজার ও শান্তি হোটেলকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা

চানাচুর প্যাকেটের মেয়াদের তারিখে প্রতারণা ও নোংরা পরিবেশ : ভালাইপুর শান্তি হোটেলের রসগোল্লার পাত্রে মরা টিকটিকি

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গার হাতিকাটার লাভলী চানাচুর কারখানাকে ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর অভিযান চালিয়ে এ জরিমানা করে। অপরিষ্কার ও নোংরা স্থানে চানাচুর তৈরির অপরাধে অধিদফতরের সহকারী পরিচালক সজল আহম্মেদ এ জরিমানা করেন। এসময় স্বাস্থ্যসম্মতভাবে চানাচুর ও চিড়াভাজা তৈরির জন্য নির্দেশ দেয়া হয়। পরে আলমডাঙ্গার ভালাইপুর মোড়ের শান্তি হোটেলকে ১০ হাজার ও ইভা ফার্মেসিকে ২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
গতকাল বুধবার দুপুর ১২টায় এ অভিযান চলানো হয়। অধিদফতরের সহকারী পরিচালক সজল আহমেদ জানান, চানাচুর তৈরির কাজে নিয়োজিতদের হাতে গ্লোবস ছিলো না। মাথা ছিলো উন্মুক্ত। এছাড়াও যে তেল দিয়ে বাদাম ভাজা হচ্ছিলো তা ছিলো নোংরা। উৎপাদিত পণ্য প্যাকেটজাতের সময় উৎপাদনের তারিখ বসানোর ক্ষেত্রেও ভোক্তাকে প্রতারিত করার কৌশলের প্রমাণ মেলে। এসব অপরাধে লাভলী চানাচুর কারখানার মালিক ফরহাদ হোসেনকে ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক সজল আহম্মেদ বলেন, ‘যেসব শ্রমিক চানাচুরের মসলা মাখানোর কাজে নিয়োজিত ছিলেন তাদের হাতে কোনো গ্লোবস ছিলো না। মাথাও ছিলো আলগা। এ অবস্থায় হাতের ময়লা খাদ্যদ্রব্যে মিশে যাওয়া অযৌক্তিক নয়। মাথা খোলা থাকায় মাথার চুল ও খুশকি উৎপাদিত চানাচুরে মিশে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।’ অভিযানের সময় লাভলী চানাচুরের মালিক ফরহাদ হোসেন স্বীকার করেন, গতকাল বুধবার অভিযান শুরুর আগে কোনো চানাচুর প্যাকেটজাত করা হয়নি। কিন্তু কারখানায় থাকা দু’দিন আগের প্যাকেটজাত করা চানাচুরে উৎপাদনের তারিখ লেখা ছিলো ২৮ ফেব্রুয়ারি, অর্থাৎ গতকালের অভিযান চলাকালে চিড়াভাজা প্যাকেটজাত করা হচ্ছিলো। সেখানেও উৎপাদনের তারিখ বসানোর ক্ষেত্রে কারচুপি করা হয়। ২৮ ফেব্রুয়ারি তারিখ না দিয়ে দু’দিন পরের তারিখ অর্থাৎ ৩০ ফেব্রুয়ারি লেখা হয়। যদিও ৩০ ফেব্রুয়ারি তারিখ কোনেদিন কোনোকালে হবে না। এতে স্পস্টভাবে প্রতীয়মান হয় যে, খুবই সচেতনভাবে লাভলী চানাচুর কর্তৃপক্ষ চানাচুর, চিড়াভাজা কিংবা ভুজিয়া উৎপাদনের দিন থেকে দু’দিন পরের তারিখ দিয়ে বাজারে বিক্রির জন্য প্রস্তুত রাখে। ক্রেতা একেবারে টাটকা চানাচুর ভেবে তা কেনেন, যদিও তা কমপক্ষে দু’দিন আগের তৈরি। এ অবস্থায় মেয়াদের তারিখও দু’দিন বাড়ানোর সুযোগ পেয়ে যায় লাভলী চানাচুর কর্তৃপক্ষ, যা ভোক্তার সাথে প্রতারণার সামিল।’
অভিযানের সময় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক সজল আহম্মেদ লাভলী চানাচুর ফ্যাক্টরির মালিক ফরহাদ হোসেনকে ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। অভিযান চলাকালেই জরিমানার টাকা পরিশোধ করেন লাভলী চানাচুর ফ্যাক্টরির মালিক ফরহাদ হোসেন।
ভালাইপুর প্রতিনিধি জানান, গতকাল বুধবার দুপুরে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর আলমডাঙ্গা উপজেলার ভালাইপুর মোড়ের শান্তি হোটেল ও ইভা ফার্মেসিতেও অভিযান চালায়। শান্তি হোটেলের রসগোল্লার পাত্রে মরা টিকটিকে দেখতে পাওয়া যায়। এ কারণে পাত্রের ১৫ কেজি মিষ্টি বিনষ্ট করা হয় এবং দোকান মালিক সোহেল রানা শান্তিকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এছাড়া একই বাজারে ইভা ফার্মেসিতে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ থাকায় ইভা ফার্মেসির স্বত্বাধিকারী ইনামুল হোসেনকে ২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। একই সাথে ফল ব্যবসায়ীদের ফলের মূল্য নির্ধারণ করে তালিকা টাঙানো বিষয়ে সতর্ক করা হয়।