গ্যাসের দাম আবার বাড়ানোর তোড়জোড়

স্টাফ রিপোর্টার: দেশে প্রথমবারের মতো তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানিকে কেন্দ্র করে আরেক দফা গ্যাসের দাম বাড়ানোর তোড়জোড় শুরু হয়েছে। পেট্রোবাংলা কর্মকর্তারা মনে করছেন, দেশে উৎপাদিত গ্যাস স্থানীয় বাজারে এখন যে দামে বিক্রি হচ্ছে এলএনজি আমদানির পর তা প্রায় দ্বিগুণ দামে বিক্রি করতে হবে।

এ ধারণার ভিত্তিতে পেট্রোবাংলার পক্ষ থেকে গ্যাসের দাম বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়ার পর বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনও (বিইআরসি) কাজ শুরু করেছে। জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদও গ্যাসের দাম বাড়ানোর আভাস দিয়েছেন। তিনি বলেন, এলএনজি এলে we`y¨Zmn শিল্প ও বাণিজ্যিক সংযোগে মূল্য সমন্বয় করতে হবে। অবশ্য আবাসিক গ্রাহকদের ক্ষেত্রেও দাম বাড়ানো হবে কি না- তা স্পষ্ট করেননি প্রতিমন্ত্রী। কবে থেকে গ্যাসের দাম বাড়তে পারে সে বিষয়েও সুনির্দিষ্ট কিছু বলেননি। এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি বলতে পারি, এটা কমফোর্ট থাকা উচিত। শুনানি শেষে বিইআরসি এসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।’ গত বছর ফেব্রুয়ারিতে গ্যাসের দাম গড়ে ২২ দশমিক ৭০ শতাংশ বাড়ানো হয়। মার্চ ও জুলাই থেকে দুই ধাপে তা বাস্তবায়িত হয়। এক বছরের মাথায় নতুন করে গ্যাসের দাম বাড়ানোর তোড়জোড়ের মূল কারণ এলএনজি আমদানি। যুক্তরাষ্ট্রের এক্সিলারেট এনার্জি কক্সবাজারের মহেশখালীতে ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণের কাজ চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে আসায় এপ্রিলের শেষ অথবা মে মাসের প্রথম সপ্তাহেই এলএনজি আমদানি শুরু করা যাবে বলে সরকার আশা করছে। ওই এলএনজি টার্মিনাল থেকে দৈনিক ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট (১৪ দশমিক ১৬ মিলিয়ন ঘনমিটার) গ্যাস সঞ্চালন লাইনে দেয়া যাবে।  এলএনজি আমদানির বিষয়টি এগিয়ে আসায় গ্যাসের দাম নিয়ে নতুন করে ভাবতে শুরু করে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলো।

সম্প্রতি পেট্রোবাংলা থেকে we`y¨Z উন্নয়ন বোর্ড ও বাংলাদেশ কেমিকেল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের চেয়ারম্যানকে জানানো হয়, এলএনজি আমদানির পর প্রতি ঘনমিটার গ্যাস (প্রাক্কলিত) গড়ে ১৩ টাকার কমে বিক্রি করা সম্ভব হবে না। বর্তমানে পেট্রোবাংলার প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের গড় মূল্য হার ৭ টাকা ৩৫ পয়সা।

গত বছর দাম বাড়ানোর পর we`y¨Z খাতে প্রতি ঘনমিটার গ্যাস ৩ টাকা ১৬ পয়সা, ক্যাপটিভ we`y¨‡Z ৯ টাকা ৬২৩ পয়সা, সার কারখানায় ২ টাকা ৭১ পয়সা, শিল্পে ৭ টাকা ৭৬ পয়সা এবং বাণিজ্যিকে ১৭ টাকা ৪০ পয়সায় দরে বিক্রি করা হচ্ছে। আর আবাসিক সংযোগে এক চুলার জন্য মাসে ৯০০ টাকা এবং দুই চুলার জন্য ৯৫০ টাকা করে দিতে হচ্ছে। গ্যাসের দাম আবারও বাড়ানো হলে নির্বাচনের বছরে জীবনযাত্রার ব্যয় আরও এক দফা বাড়বে। তবে তা যেন জনজীবনে বড় কোনো চাপ তৈরি না করে, সরকার সেদিকে নজর দেবে বলে আশ্বস্ত করেন প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। তিনি বলেন, আমরা এ বিষয় নিয়ে গত এক বছর ধরে পরিকল্পনা করছিলাম। স্টেকহোল্ডার যারা এ গ্যাস কিনবেন ও ব্যবহার করবেন তাদের সাথে আমরা বসেছি। প্রচুর হিসাব-নিকাশ, গবেষণা ও অনুসন্ধান করেছি। গ্যাসের দাম বাড়লেও সেটা জীবনযাত্রার ক্ষেত্রে শকিং হবে না।