জীবননগরে কৃষি বিভাগের নিষেধাজ্ঞা অগ্রাহ্য করে গম চাষ : নেক ও হেড ব্লাস্টে আক্রান্ত

জীবননগর ব্যুরো: কৃষি বিভাগের নিষেধাজ্ঞা অগ্রাহ্য করে জীবননগর উপজেলায় এবার মাত্র ৪০ হেক্টর জমিতে গম চাষ হয়েছে। চাষকৃত গমের মধ্যে ১০ হেক্টর জমির গম নেক ব্লাস্ট ও হেড ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হয়েছে। ছত্রাকের আক্রান্ত ক্ষেতের গম ক্ষেতেই বিনষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ফলে এ উপজেলার কৃষকরা গম চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। আর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর কৃষকদের গম চাষে নিরুৎসাহিত করছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, প্রতিবছর এ উপজেলায় ৪ থেকে সাড়ে ৪ হাজার জমিতে গমের আবাদ হয়ে থাকে। পর পর গত দুই বছর গম ক্ষেতে ব্লাস্ট নামক ছত্রাকের আক্রমণে গমের উৎপাদন মারাত্মকভাবে কমে যাওয়াতে কৃষকরা গম চাষ করা থেকে বিরত রয়েছে। এ বছর এ উপজেলায় মাত্র ৪০ হেক্টর জমিতে গমের চাষ হয়েছে।
সূত্র জানায়, গত দুই বছর গমে ব্লাস্ট রোগ দেখা দেয়ায় কৃষকদের গম চাষে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। এ ব্যাপারে জন সচেতনতা গড়তে উঠান বৈঠক ও লিফলেট বিলিসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়েছিলো। কৃষকদের মাঝে গম বীজ বিক্রি বন্ধ রাখতে ডিলার ও ব্যবসায়ীদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
গত দুই বছরে জীবননগর উপজেলায় গম চাষ মারাত্মকভাবে হ্রাস পেয়েছে। কৃষকরা মাঠে যে গম চাষ করছে তা নিজেদের উদ্যোগে। এদিকে সরেজমিনে পরিদর্শনকালে উপজেলার বাঁকা গ্রামের কৃষক মনি, রাজন, ইজাজুল, নারায়ণপুরের আব্দুল আলিম ও গঙ্গাদাসপুরের শফি উদ্দিন জানান, পরিবারের খাদ্যের জন্য গমের আবাদ করেছিলাম। কারণ দেশি গমের আটায় তৈরি খাবার ভালো হয়। কিন্তু গম ক্ষেতে ছত্রাক আক্রমণ করায় ফলন্ত গমের শীষ শুকিয়ে যাচ্ছে। ফলে গমের দানা মরে চিটে হচ্ছে।
এ ব্যাপারে জীবননগর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা সালমা জাহান নিপা জানায়, গত এক মাস পূর্বে বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টি দিনের বেলা গরম ও রাতে ঠা-া পড়ায় গম নেক ব্লাস্ট ও হেড ব্লাস্ট ছত্রাকজনিত রোগে আক্রান্ত হয়েছে। নেক ব্লাস্ট গমের কা-ে কালো আকার ধারণ করে যার ফলে গমের ফল পড়ে যায়। আর হেড ব্লাস্ট ছত্রাক গমের শীষের ওপরের অংশ থেকে শুকাতে শুরু করে নিচের অংশ পর্যন্ত শুকিয়ে যায়। উপজেলায় এ বছর ১০ শতাংশ জমির গম ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হয়েছে। আক্রান্ত ক্ষেতে নাটিভো ব্যবহার করলে ফল পাওয়া যাবে বলে জানান তিনি। উপজেলা কৃষি অফিসার মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ জানান, নিরুৎসাহিত করা সত্বেও মাত্র ৪০ হেক্টর জমিতে কৃষকরা গমের আবাদ করেছে। তার মধ্যে কিছু ক্ষেতে ছত্রাকের আক্রামণ ঘটলেও ইতোমধ্যে কৃষকরা তা কাটা শুরু করেছেন।