সকলেই সকলের সর্বনাশ ডেকে আনলেও বারণে নেই তাগিদ

আমরা প্রায় প্রত্যেকেই শুধু নিজেরটা বুঝতে গিয়ে সকলে সকলের সর্বনাশ ডেকে আনছি। বুঝে না বুঝে সর্বনাশা পথে পা বাড়ানোরোধে যারা দায়িত্ব নেন তাদের সিংহভাগই দায়িত্ব পেয়ে কর্তব্যপরায়ণতা ভুলে আখের গোছানোয় ব্যস্ত হয়ে পড়েন। যার খেসারত দিতে হচ্ছে সমাজের সকলকে। তা না হলে রাজধানীর সড়কগুলোর স্থবিরতা দেখেও জেলা শহরগুলো অন্তত যানজটমুক্ত করার মতো আগাম পদক্ষেপ নিতেন জনগণের সেবার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ম্যান্ডেট নেয়া মানুষগুলো। অথচ বিধান আছে, তার প্রয়োগ নেই। নেই তাগিদ।
চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের প্রায় প্রতিটি সড়কেই যানজট দেখা দিচ্ছে। সকাল হতে না হতে ফেরিঘাট রোডে যেমন স্থবিরতা নেমে আসে, তেমনই শহীদ হাসান চত্বরসহ হাসপাতাল সড়কেও তীব্র যানজট শহরের স্বাভাবিকগতিকে মন্থর করে দিচ্ছে। মেহেরপুর জেলা শহরের বড়বাজার, হোটেল বাজারের দৃশ্যও সুখকর নয়। এসব সড়কে বা সড়ক মাড়িয়ে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের সদস্যরা কোনো উদ্ধার কাজে বা বিপদ থেকে বাঁচাতে ছুটতে গেলে যেভাবে বৈধ-অবৈধ যানসহ সড়কের ধারে অবৈধ স্থাপনায় বাধার মুখে পড়েন তা দেখে দাবি করা যায় না যে আমরা সভ্য সমাজের বাসিন্দা।
ওই সমাজের দিক নিদের্শকদের দূরদর্শী বলা হয়, যে সমাজের মানুষ দুর্যোগ মোকাবেলায় আগাম প্রস্তুত থাকে। আমাদের সমাজে তেমন প্রস্তুতি দূরের কথা, বিপদ থেকে রক্ষা করতে যাবেন সিভিল ডিফেন্সের সদস্যরা তারও সুযোগ রাখিনি, রাখছি না। সামান্য একহাত জমি ছেড়ে স্থাপনা নির্মাণ করলে সড়কটি শুধু প্রশস্তই হয় না, প্রয়োজনে অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার স্টেশনের গাড়িও আসতে পারে নির্বিঘেœ। এরপর জেলা শহরের জরুরি প্রয়োজনীয় সড়কগুলোও কিভাবে পরিচালনা করলে জনকল্যাণকর হবে তারও নির্দেশনা দেয়ার মতো জনপ্রতিনিধির ন্যূনতম পদক্ষেপ সাধারণ মানুষের চোখে পড়ে না।
শুধু নিজেরটা নয়, অন্যেরটাও ভাবতে পারলে সকলের স্বার্থটা সংরক্ষিত হয়। এই সকলের স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য দরকার জনপ্রতিনিধির বলিষ্ঠ নেতৃত্ব, আইনগত পদক্ষেপ। যা আমাদের সমাজে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অনুপস্থিত। হয় ভোট হারানোর ভয়ে, না হয় বিশেষ কোনো সুবিধার কাছে আত্মসমর্পণে। দায়িত্বপ্রাপ্তদের অধিকাংশকেই কর্তব্যপরায়ণে উদাসীন হতে দেখা যায়। তা না হলে পৌর শহরের অলিগলিগুলো কিছুটা হলেও প্রশস্ত হতো। মহল্লায় মহল্লায় থাকতো পানির জোগান। শহরে রিকশা অটোরিকশার সংখ্যাও থাকতো নিয়ন্ত্রণে।