ওই আস্তানা আস্ত রেখে পরে পস্তানোর কষ্টটা সত্যিই তীব্র

ভণ্ডামির রঙ যতো রকমেরই হোক, তার বা তাদের ভণ্ডামির আস্তানা উচ্ছেদ করার এখতিয়ার অবশ্যই প্রশ্নবিদ্ধ। একজনকে ভণ্ড বলার আগে যে বিষয়টি সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে ভেবে দেখা দরকার তা হলো তিনি প্রতারণা করছেন কি-না। প্রতারণা করলে তা রোধে করণীয় মানে মাইকে প্রচার করে মারমুখি হয়ে ওঠা নয়, দেশে প্রচলিত আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার পথে হাঁটা। অবশ্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসমূহের আচরণ বিশেষ করে পুলিশ প্রশাসনের কর্মকাণ্ড ওই সমাজে কতোটা আস্থাশীল তা ভেবে দেখাটাও অতীব গুরুত্বপূর্ণ।
মেহেরপুর জেলা সদরের বুড়িপোতার গোভীপুর মাঠের একটি আস্তানা গুঁড়িয়ে দেয়ার খবরটি গতকাল দৈনিক মাথাভাঙ্গা পত্রিকায় যথাযথ গুরুত্ব সহকারেই প্রকাশ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, মসজিদের মাইকে প্রচার করে এলাকাবাসীকে ডেকে নিয়ে বাগু দেওয়ান ওলি দরবার শরিফ নামের আস্তানায় হানা দেয়া হয়েছে। সঙ্গত কারণেই প্রশ্ন, পূর্ব ঘোষিত সময়ে একটি স্থানে হামলার ঘটনা ঘটলো, অথচ পুলিশ তা রোধ করতে পারলো না। এরপরও কি বলতে হবে, পুলিশ তার দায়িত্ব পালনে সক্ষমতা দেখাতে সক্ষম? অবশ্যই যদি কেউ কোথাও প্রতারণার দোকান দিয়ে বসে, নানা অজুহাতে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার ফাঁদ পাতে তা হলেও তো পুলিশের নীরব থাকা উচিত নয়। পুলিশের দায়িত্ব প্রতারণার দোকান উচ্ছেদে যেমন আইন প্রয়োগ, তেমনই দরকার কোনো আস্তানায় কোনো চক্রের উসকানিতে হামলা ঠেকানো। গোভীপুর ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন মাঠের ঘটনাটির মধ্যদিয়ে নিশ্চিত ভাবেই পুলিশের অপারগতাটাই প্রকাশ পেয়েছে।
অন্যের অনুভূতিতে আঘাত না দিয়ে নিজের মতো করে নিজের মতবাদ প্রচারের অধিকার মানুষের থাকা উচিত নয় কি? পক্ষে-বিপক্ষে যুক্তিতে কমতি না থাকলেও পছন্দের মতবাদ গ্রহণ এবং প্রচারের এখতিয়ারকেই কি অধিকার বলা চলে না? এরকম প্রশ্নবিদ্ধতার মধ্যেও কৌশলে প্রতারণার ফাঁদ লুকিয়ে রেখে দিব্যি মান্নত নামক বাণিজ্যও তো হচ্ছে দেদারছে। সে কারণে কোথাও ওরকম আস্তানাকে আর আস্ত রেখে পরে পস্তাতে চাইছেন সাধারণ মানুষ। এটা দেখে শুনেও যদি ঘুম ভাঙতো কর্তার, সমাজ হতো কতো সুন্দর তা ভেবে দেখেছো কি ধর্মাবতার!