গুচ্ছ গুচ্ছ ফুলেল ভালোবাসা ছড়িয়ে পড়ুক সবার মাঝে

ফুল ফুটুক আর না ফুটুক আজ বসন্ত… গানটাও বসন্তে হৃদয় ছুঁয়ে যায়। বসন্ত বরণ আর বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে ফুলের খবর নিতে গিয়ে পাওয়া গেছে আশা জাগানোর মতো তথ্য। সৌন্দর্যপ্রিয় মানুষের কাছে ফুলের কদর অনাদিকালের। গতকাল ছিলো বসন্ত বরণ। এবার এ দিনেই ছিলো সরস্বতী পূজা। আজ বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। এ দুটি দিবসে ফুলের কদর বাড়ে বছরের যে কোনো দিনের চেয়ে অনেক অনেকে গুণ বেশি।
বসন্ত বরণ, বিশ্ব ভালোবাসা দিবসকে সামনে রেখে প্রায় ১৩ কোটি টাকার ফুল বিক্রি করেছেন যশোর গদখালির ফুলচাষিরা। গত এক সপ্তাহে গদখালি ফুলবাজার থেকে এই ফুল সারাদেশে ছড়িয়ে দিয়েছেন ফুলচাষি ও ব্যবসায়ীরা। যদিও চুয়াডাঙ্গা-ঝিনাইদহেও ফুল চাষ হয়, হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন এলাকায় কখনো ফুলচাষের পরিমাণ বাড়ে, কখনো কমে। গদখালিতে দিন দিন ফুলের আবাদ বৃদ্ধি পাওয়ায় ইতোমধ্যেই ফুলরাজ্য খেতাবও জুটে গেছে। ২০১৪ সালে ৫ কোটি টাকার ফুল বিক্রির রেকর্ড ছিলো এ এলাকার ফুলচাষিদের। অনুকূল পরিবেশের কারণে এবার যেমন ফুলের ভালো ফলন হয়েছে, তেমনি দামও ভাল পেয়েছেন ফুলচাষিরা। এতে গতবছর রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে হওয়া ক্ষতি পুষিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখছেন তারা। তাই আনন্দে উত্ফুল্ল এখানকার ফুলচাষিরা। সকল বাঙালির জীবনে সব সময় না হলেও, উৎসব-আয়োজনে ফুল ছাড়া চলে না। বাঙালি হিন্দুর পূজা-পার্বণে ফুল অপরিহার্য। ফুল চাই বিয়ের অনুষ্ঠানেও। ফুল সাফল্যের প্রতীক, সম্মানের প্রতীক, ভালবাসার তো বটেই। একটি কিংবা একমুঠো ফুল যাকে উপহার দেয়া হয় এবং যিনি দেন মুগ্ধতায় আপ্লুত হন উভয়েই। ফুলের শোভা ও ঘ্রাণ আকুল করে মন। ফুটন্ত ফুল মনে এনে দেয় প্রশান্তি, সৃষ্টি করে অনাবিল আবহ, যদিও ফুল কীটদুষ্ট হয়ে থাকে। ফুল নিয়ে এ যাবৎ কতো গান আর কতো কবিতা যে রচিত হয়েছে তারও ইয়ত্তা নেই। এরপরও ৩০-৩৫ বছর আগে বাংলাদেশে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ফুল চাষের বিষয়টি চাষিদের মাঝে ছিলো কল্পনাতীত।
বদলে গেছে চিত্র। ফুলের চাহিদা রয়েছে কমবেশি সব দেশেই। ইউরোপ-আমেরিকায় ফুলের চাহিদা যতো তার তুলনায় উৎপাদন কম। তাদের ফুল আমদানি করতে হয়। এশিয়ার দেশগুলোতে ফুলের চাহিদা রয়েছে। অন্যদিকে বাংলাদেশেও ফুলের বাজার ক্রমেই প্রসারিত হচ্ছে। জাতীয় ভিত্তিক বিভিন্ন উত্সব উপলক্ষে ফুলের চাহিদা বিপুলভাবে বাড়ছে বটে, আন্তর্জাতিক বাজার গড়ে তোলা হচ্ছে না। এ কারণে আশার আলোর মাঝে বেহাল দশারও ইঙ্গিত রয়েছে।
ফুলচাষে যেসব সমস্যা-সীমাবদ্ধতা বিরাজমান তা দূর করতে হবে। বিশেষ করে বীজের সমস্যা কাটিয়ে তুলে ফুল সংরক্ষণেরও বিশেষ উদ্যোগ নিতে হবে। বিশেষ দিনগুলোতে ফুলের স্পর্শ ও সুগন্ধ নিয়ে মুগ্ধতায় ভরে উঠতে হবে, ভরিয়ে দিতে হবে নিকটজনদেরকে। বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে তাইতো ফুলের গুরুত্ব নিয়েই গুচ্ছ গুচ্ছ ফুলেল ভালোবাসা। এ ভালোবাসা ছড়িয়ে পড়ুক সবার মাঝে, সবখানে।