সমিতি করে প্রশ্নপত্র ছেপে অর্থ নিয়ে শিক্ষকমণ্ডলীর মারামারি

মেহেরপুর গাংনী উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকমণ্ডলীরা মাথা ঠাণ্ডা রাখতে পারেননি। সমিতি করে প্রশ্নপত্র ছাপানো হলে খরচ শুধু সাশ্রয়ই হয় না, নেতাদের পকেটস্থও যে হয়, তা নিয়েই মূলত মাথা গরমের মারামারি। পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে এমনই তথ্য উঠে এসেছে। বলা হয়েছে, উপজেলা শিক্ষা অফিসারের সামনেই শিক্ষকমণ্ডলীর দুটি সমিতির নেতাদের মধ্যে বাগবিতণ্ডা শেষ পর্যন্ত মারামারিতে রূপ নেয়। কয়েকজনকে চিকিৎসাও নিতে হয়েছে।

অবশ্যই শিক্ষকও রক্তে মাংসের মানুষ। কেউ কেউ সুযোগ পেয়ে একটু বেশি নেবেন, আর বঞ্চিত কেউ কেউ সুযোগ বুঝে প্রতিবাদও করবেন। সমাজের বাস্তবতায় এসবকে কি আর অবাস্তব বলা যায়? যায়, যারা শিক্ষক তাদের সব কিছু মানায় না। মারামারি তো নয়ই। যারা কোমলমতি শিক্ষার্থীদের শিক্ষা দিয়ে মানুষের মতো মানুষ করে গড়ে তোলেন তাদের কি মারমারি করা মানায়? অবশ্যই না। মারামারি কেন হয়েছে? উপযুক্ত তদন্ত হওয়া দরকার, দরকার দায়ীদের বিরুদ্ধে শক্ত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ। অন্যথায় এ ধরনের নৈতিকতা স্খলনের মাত্রা বেড়েই যাবে।

একটি উপজেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা কম নয়। সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা যদি সমবায় সমিতি করে প্রশ্নপত্র ছাপেন তাহলে খরচ পড়ে খুবই কম। তারপরও মেহেরপুর গাংনী উপজেলার শিক্ষাক সমিতির প্রশ্ন প্রতি তিন টাকা করে ধরা হয়েছে। এটা অবশ্যই অতিরিক্ত। শাদা কাগজে একটি প্রশ্ন ছায়াকপি করলেও তো অতো পড়ার কথা নয়। তাহলে সমবায় সমিতি করে একটি প্রশ্নের দাম অতো পড়বে কেন? আর এক টাকা করে নেয়া হয়েছে সমিতির তহবিল সমৃদ্ধ করার জন্য। ভালো কথা। সঞ্চয় না থাকলে একটি সংগঠনের সমৃদ্ধ হবে কীভাবে? তাই বলে মারামারি?

নতুন করে বলার অবকাশ রাখে না, নতুন বেতন কাঠামোই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন কম নয়। কারো কারো অতৃপ্ত থাকলেও দায়িত্ব অনুপাতে অন্তোষ রাখেনি বর্তমান সরকার। এরপরও সমিতি করে প্রশ্ন ছেপে তা নিয়ে বিরোধে জড়ানোর আড়ালে যে বিষয়টি বিরূপ সমালোচনার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে, তাহলো অর্থ নিয়ে মারামারি। শিক্ষকদের মারমারির বিষয়টি খাটো করে দেখা মানেই জাতির ভবিষ্যত গঠনে গড়মসি করা। মেহেরপুর প্রাথমিক শিক্ষা প্রশাসন নিশ্চয় বিষয়টির দিকে আশুদৃষ্টি দিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে।