উচ্ছন্নে যেতে বসা সমাজটাকে রক্ষা করা জরুরি

 

স্কুলছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করার প্রতিবাদই শুধু নয়, ছাত্রীর চলাফেরা স্বাভাবিক তথা নির্বিঘ্ন করার দায়িত্ব সচেতন সকলের। এ দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে যদি বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত একজন প্রধান শিক্ষককে খুন হতে হয়, তার ভাইকে হতে হয় নৃশংসতার শিকার তাহলে অন্যায়ের প্রতিবাদ করার কি কেউ থাকবে? অন্যায়ের প্রতিবাদ করার মতো পরিবেশ নেই বলেই তো পুরো সমাজটাই উচ্ছন্নে যেতে বসেছে। তা না হলে অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গিয়ে কি শিক্ষককে খুন হতে হয়?

ছাত্র নয়, সে রাজনৈতিক দলের ছাত্রসংগঠনের মিছিলে মাঝে মাঝে পা মেলায় বলে মহল্লায় তার বড় দাপট। ক্ষমতাসীনদলের বড় নেতার নয়, নেতার কোনো ভাই ভাতিজার বা পাতি নেতার পাপোশ হলেও তার আগ্রাসী আচরণে অতিষ্ঠ সমাজের দায়িত্বশীলদের সিংহভাগ। ওদের ফোঁস করে ওঠার সাথে অনেকেই কুলিনের ডেমা বলেও আখ্যায়িত করেন গোপনে। প্রকাশে মন্তব্য দূরাস্ত টু শব্দ করলেই চাপাতি-ক্ষুরের পোঁচ। দৃশ্যটা শুধু কুষ্টিয়া ভেড়ামারারই নয়, অধিকাংশ এলাকারই চেনা ছবি। ভেড়ামারায় একজন প্রবীণ প্রাক্তন শিক্ষক সমাজের প্রতি দায় এড়াতে পারেননি বলেই এক ছাত্রীর পাশে দাঁড়িয়েছিলেন, উত্ত্যক্তকারী তাই খুন করেছে। শিক্ষকের ভাইও নৃশংসতার শিকার হন। তিনিও অবশ্য ঘটনার দু দিনের মাথায় মারা গেছেন। প্রতিবাদী শিক্ষকের প্রতি আমাদের বিনম্র শ্রদ্ধা।

‌অবশ্যই সমাজে ভালো মানুষের সংখ্যাই বেশি। বখাটে বাজে মানসিকতার মানুষের সংখ্যা নিতান্তই নগণ্য। এরপরও তাদের দাপটে ভালো মানুষগুলোর হৃদয়ে অনাবরত রক্তক্ষরণ হয়, ঝরে প্রতিবাদী প্রাণ। এ ধারা অব্যাহত থাকলে সমাজকে আর সভ্য বলে দাবি করা যাবে না। ফলে রুখতে হবে। রাজনৈতিক নেতাদের বাস্তবমুখি পদক্ষেপ নেয়ার পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাসমূহের সকলকে হতে হবে কর্তব্যপরায়ণ। নিশ্চিত করতে হবে আইনের শাসন।