‘হিন্দির নকলই ঢাকাই সিনেমার অধঃপতনের কারণ’

বিনোদন ডেস্ক: বাংলাদেশের প্রথম সুপারহিরো সিনেমা ‘বিজলী’তে অভিনয় করছেন টালিগঞ্জের শিল্পী শতাব্দী রায়। সম্প্রতি সিনেমাটির মহরত উপলক্ষ্যে ঢাকায় এসেছিলেন তিনি। সেখানেই বললেন, অতীতে হিন্দি সিনেমার নকলই ঢাকাই চলচ্চিত্রের অধঃপতনের অন্যতম কারণ। সেই সাথে আরও জানালেন যৌথ প্রযোজনার সিনেমা নিয়ে নিজের মতামত। অনুষ্ঠানের একটা পর্যায়ে শতাব্দী তুলে আনেন ঢাকাই সিনেমার প্রতি নিজের অভিযোগ। “বাংলাদেশে বসেই বাংলাদেশকে নিয়ে একটা খারাপ কথা বলছি। সেটা হচ্ছে আমি যে সময়কার সিনেমায় কাজ করতাম, তখন ঢাকাই সিনেমা মানেই ছিল হিন্দি সিনেমার অনুমোদনহীন রিমেইক। এখন হয় কীনা, আমি জানি না। তবে সেই খারাপ রিমেইকগুলোকে যদি ভারতবর্ষে গিয়ে আবারো রিমেইক করা হয়, তাহলে কিন্তু বাংলা সিনেমার অধঃপতন ছাড়া আর কিছুই হবে না। তিনি আরও বলেন, “আমরা নিজেদের সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে গেছি। নিজেদের জায়গা থেকে সরে গেছি। আমি তখন দেখতাম, হিন্দি সিনেমার গানগুলোকে এখানে (বাংলাদেশে) শুধু শব্দ পাল্টে, সুরও একইরকম রেখে সিনেমায় ব্যাবহার করা হতো। আমার সিনেমার ক্ষেত্রেই এমনটি ঘটেছে।”

শতাব্দী জানান, ওই সময়ে বাংলাদেশের অনেক সিনেমার রিমেইক কলকাতায় হতো। কিন্তু হিন্দি সিনেমার অনুমোদনহীন নকল হওয়ায়, সেসব সিনেমা নিয়ে সমস্যায় পড়তে হতো তাদের। তখন আপনাদের অনেক সিনেমার রিমেইক ওখানে (কলকাতা) আমার করা হয়েছে, যেগুলোর নির্মাতা ছিলেন স্বপন সাহা। আমি সিনেমার গান করেছি। সেসব গান আপনাদের সেন্সরবোর্ড ছেড়ে দিলেও কলকাতায় তা অনুমোদন পায়নি। কারণ তা ছিলো, অনুমতি ছাড়া হিন্দি সিনেমার গানের রিমেইক।” ৪৭ বছর বয়সী এই অভিনেত্রী আরও বলেন, “অনুমতি নিয়ে একটি সিনেমার রিমেইক করার বিষয়টি একেবারেই আলাদা। কিন্তু আমি পোস্ট কার্ড দেখে পোশাক ডিজাইন করে সিনেমা র্নিমাণ করলাম– তার কোন যুক্তি থাকতে পারে না। তাও আবার একটা হিন্দি সিনেমাকে নকল করলাম, নিজেদের সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে। আমার মনে হয়, ঢাকাই সিনেমার খারাপ অধঃপতনের কারণগুলোর মধ্যে এটা অন্যতম।” এই সমস্যা এড়াতে তিনি পরামর্শ দেন ঢাকাই সিনেমার স্বকীয়তা ধরে রাখার। তিনি বলেন, “সেজন্য আমার অনুরোধ, যে সিনেমা নিজস্বতা নিয়ে হয় সেই সিনেমাই নির্মাণ হোক। বাংলাদেশে হিন্দি সিনেমার রিমেইক করার কোন কারণ নেই। এবং সেকারণেই যে আমরা দর্শক হারিয়েছি– তাতে কোন সন্দেহ নেই।”

শতাব্দী রায়ের ঝুলিতে রয়েছে বাংলা ও ওড়িয়া ভাষার ৩০০ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের অভিজ্ঞতা। যৌথ প্রযোজনার অনেক সিনেমাতেও অভিনয় করেছেন তিনি।